॥স্টাফ রিপোর্টার॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সংগঠনকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি তৃণমূল পর্যায়ে দলের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধিতে কাজ করে যাবার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, কেবল আওয়ামী লীগই পারে জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে।
প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলতে সকলের সহযোগিতা কামনা করে বলেন, ‘আওয়ামী লীগই একমাত্র দল যারা জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে পারে। কাজেই এই দলকে আরো শক্তিশালী করতে হবে। তৃণমূলের মানুষের কাছে দলের কর্মকান্ড তুলে ধরে এর জনপ্রিয়তা বাড়াতে হবে।’
তিনি সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ডগুলো জনগণের সামনে তুলে ধরার আহবান জানিয়ে বলেন, ‘আমরা কি করেছি এবং কি করতে চাচ্ছি তা জনগণের সামনে তুলে ধরে নৌকা প্রতীকে ভোট চাইতে হবে।’
এ সময় তিনি সারাদেশে চলমান স্কুল ফিডিং কর্মসূচি এবং কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে জনগণের দোড়গোঁড়ায় তাঁর সরকারের স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্যও দলের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল ৩০শে জুন গণভবনে আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় প্রদত্ত ভাষণে একথা বলেন।
দলীয় ঐক্য ধরে রাখার প্রতি গুরুত্বারোপ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘সামনে নির্বাচন এখানে কোনরকম দলীয় কোন্দল যেন না হয়, সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। নিজেদের গ্রুপ করতে গিয়ে যারা আমাদের মানুষ হত্যা করেছে, নির্যাতন করেছে তাদের নিয়ে দলভারী না করে আপনারা নতুন নতুন কর্মী সৃষ্টি করুন।’
স্বজন হারাবার বেদনা স্মরণ করে আওয়ামী লীগকে নিজের পরিবার হিসেবে আখ্যায়িত করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার আর চাওয়া পাওয়ার কিছু নেই। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলাই আমার একমাত্র স্বপ্ন। আর আপনারা হচ্ছেন সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের এক একজন কারিগর।’
গত ২৩শে জুন আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত বিশেষ বর্ধিত সভার এদিন ছিল দ্বিতীয় পর্যায়। সভায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ, উপদেষ্টা পরিষদ, রাজশাহী, বরিশাল, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের অধীন প্রতিটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত দলীয় চেয়ারম্যান এবং মহানগরের অধীন সংগঠনের প্রতিটি ওয়ার্ডের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও দলীয় নির্বাচিত কাউন্সিলরগণ অংশগ্রহণ করেন। অন্য বিভাগগুলোর তৃণমূল নেতৃবৃন্দকে নিয়ে এই বিশেষ বর্ধিত সভার শেষ অংশ আগামী ৭ই জুলাই গণভবনে অনুষ্ঠিত হবে।
দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সভায় স্বাগত ভাষণ দেন। দলের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এবং উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম সভাটি পরিচালনা করেন। সভার শুরুতেই দলের দপ্তর সম্পাদক ড. আব্দুস সোহবান গোলাপ শোক প্রস্তাব পাঠ করেন এবং এরপরই সকলে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করেন।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে আগামী সংসদ নির্বাচনে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার আহবান জানিয়ে বলেন, দল নিয়ে বা দলের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে নিয়ে সমালোচনা বন্ধ করে প্রার্থী যেই হোক না কেন নৌকার বিজয়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
দেশের অর্থনীতি এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী এবং বাজেটের শতকরা ৯০ ভাগ নিজস্ব অর্থায়নেই বাস্তবায়ন করা হয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার প্রত্যেকটি জেলা, উপজেলা এবং ইউনিয়নকেই উন্নয়নের ক্ষেত্রে সমান গুরুত্ব দিয়ে থাকে।
তৃণমূলের জনগণের উন্নয়ন তাঁর সরকারের মূল্য লক্ষ্য বলেও এ সময় প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।