॥স্টাফ রিপোর্টার॥ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নবনিযুক্ত সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল আজিজ আহমেদ, বিজিবিএম, পিজিবিএম, বিজিবিএমএস, পিএসসি,জি।
আজ ২৫শে জুন সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানায়, নবনিযুক্ত সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল আজিজ আহমেদ বিদায়ী সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক, এসবিপি,এনডিসি, পিএসসি’র নিকট হতে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।
নবনিযুক্ত সেনাপ্রধানের বর্ণাঢ্য চাকুরী জীবন ঃ নবনিযুক্ত সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল আজিজ আহমেদ ১লা জানুয়ারী ১৯৬১ সালে চাঁদপুর জেলার এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এর একজন কর্মকর্তা ছিলেন। তিনি ১০ই জুন ১৯৮৩ সালে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি হতে ৮ম দীর্ঘ মেয়াদী কোর্সের সাথে আর্টিলারি কোরে কমিশন লাভ করেন। তিনি চট্টগ্রাম বিশ¡বিদ্যালয় হতে গ্রাজুয়েশন ডিগ্রি অর্জনের পাশাপাশি জাতীয় বিশ¡বিদ্যালয় হতে মাষ্টার ইন ডিফেন্স ষ্টাডিজ, এমএসসি(কারিগরি) এবং আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ হতে মাষ্টার্স ইন বিজনেস এ্যাডমিনিস্ট্রেশন(এক্সিকিউটিভ) ডিগ্রি অর্জন করেন। বর্তমানে তিনি বিইউপি’র অধীনে পিএইচডি ডিগ্রি’র জন্য গবেষণারত আছেন। তিনি আর্টিলারি সেন্টার এন্ড স্কুল, হালিশহর হতে গানারী স্টাফ কোর্স, মিরপুরে ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড এন্ড স্টাফ কলেজ হতে স্টাফ কোর্স এবং ভারত হতে লং গানারী স্টাফ কোর্স সম্পন্ন করেন। তাঁর বর্ণাঢ্য চাকুরী জীবনে তিনি ৩৩ পদাতিক ডিভিশনের জেনারেল অফিসার কমান্ডিং, বিজিবি’র মহাপরিচালক, জেনারেল অফিসার কমান্ডিং আর্মি ট্রেনিং এন্ড ডকট্রিন কমান্ড ও সেনাসদরের কোয়ার্টার মাষ্টার জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও তিনি একটি আর্টিলারি রেজিমেন্টের অধিনায়ক, দুইটি আর্টিলারি ব্রিগেডের ব্রিগেড কমান্ডার, একটি বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক, একটি বিজিবি সেক্টরের কমান্ডার, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অবজারভার হিসেবে ইরাক-কুয়েত এবং সুদানে ফোর্স কমান্ডারের মিলিটারি উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। পার্বত্য চট্টগ্রামে কাউন্টার ইন্সারজেন্সী অপারেশনের অংশ হিসেবে তিনি দীর্ঘ দুই বছর ২৪ আর্টিলারি ব্রিগেডের অপারেশনাল স্টাফ অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি দীর্ঘ সময় আর্টিলারি সেন্টার এন্ড স্কুল হালিশহর এবং স্কুল অব মিলিটারি ইন্টিলিজেন্স-এ একজন সফল প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বিজিবি সেক্টর কমান্ডার হিসেবে অধীনস্ত সেক্টরের পুনর্গঠন ও উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে তার অবদানের স্বীকৃতিস্বরুপ মহামান্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক বিজিবিএম পদকে ভূষিত করা হয়। বিজিবি মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তিনি বিজিবি’র পুনর্গঠন ও উন্নয়নে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এর স্বীকৃতিস্বরুপ মহামান্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক পিজিবিএম পদকে ভূষিত করা হয়।
তিনি গত ২০১৬ সাল হতে বাংলাদেশ এ্যামেচার বক্সিং ফেডারেশনের সভাপতি হিসেবে নিয়োজিত আছেন। পেশাগতভাবে ঈর্ষনীয় দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার অধিকারী লেফটেন্যান্ট জেনারেল আজিজ সম্পূর্ণ নিজ উদ্যোগে ‘ঞজঅওঘওঘএ ঘঙঞঊ ঙঘ ঋওজঊ চখঅঘ’ এবং ‘ঙচঊজঅঞওঙঘ ঈঅজউ ঋওঊখউ অজঞওখখঊজণ’ প্রকাশ করেন যা আর্টিলারি রেজিমেন্টের সকল পর্যায়ের জন্য অত্যন্ত মূল্যবান দুইটি প্রকাশনা হিসেবে সমাদৃত।
ব্যক্তিগত জীবনে তিনি বিবাহিত। তার তার স্ত্রী বেগম দিলশাদ নাহার আজিজ একজন গৃহিনী। তিনি তিন পুত্র সন্তনের গর্বিত পিতা। তাঁর দ্বিতীয় ছেলে বর্তমানে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে ৭৬তম দীর্ঘ মেয়াদী কোর্সে প্রশিক্ষণরত রয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ১৮ই জুন রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব মোঃ আবু বকর সিদ্দিক স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে তাকে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সেনাপ্রধান নিযুক্ত করা হয়। আজ ২৫শে জুন তিনি দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।