॥আসহাবুল ইয়ামিন রয়েন॥ মহান মে দিবস উপলক্ষে রাজবাড়ী জেলা প্রশাসনের আয়োজনে গত ১লা মে সকালে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
দিবসটি উপলক্ষে সকাল সাড়ে ৯টায় জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলীর নেতৃত্বে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের আম্রকানন চত্বর থেকে বের হয়ে শহর প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে এসে শেষ হয়। শোভাযাত্রা শেষে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের আম্রকানন চত্বরে সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা।
জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফকীর আব্দুল জব্বার, পৌরসভার মেয়র মহম্মদ আলী চৌধুরী, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার(সদর) মোঃ আছাদুজ্জামান, জেলা শ্রমিক লীগ ও সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি রকিবুল ইসলাম পিন্টু, জাতীয় সরকারী কর্মচারী ঐক্য পরিষদের জেলা শাখার সভাপতি আবু দাইয়ান মোঃ জাহাঙ্গীর, অটোরিক্সা ও টেম্পু শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মোঃ আব্বাস শেখ, জেলা রিক্সা ও ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মোঃ আব্দুল মজিদ ও হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মোঃ রবিউল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক খোন্দকার সাইফুদ্দিন হাবিব। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) রেবেকা খান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(রাজস্ব) মোঃ আব্দুর রহমান, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সাঈদুজ্জামান খান, জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনারগণ, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার আবুল হোসেন, বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও সদস্যগণসহ সংশ্লিষ্টরা র্যালী ও আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী বলেন, ১৮৮৬ সালের ১লা মে আমেরিকার শিকাগো শহরের হে মার্কেটের সামনে শ্রমিকরা ৮ঘন্টা শ্রম নির্ধারণের দাবীতে সমবেত হয়েছিল। সেখানে পুলিশ নির্বিচারের গুলি চালালে শ্রমিকদের হতাহতের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর সারা বিশ্বের শ্রমিকরা হে মার্কেটের সেই ঘটনার সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে এবং ৮ঘন্টা শ্রমের দাবী আদায়ে সক্ষম হয়। সেই ঘটনার প্রেক্ষিতে পরবর্তীতে ১লা মে’কে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় সারা বিশ্বের ন্যায় আমাদের দেশেও দিবসটি যথাযথ মর্যাদায় পালন করা হয়। আজকে বাংলাদেশ যে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হয়েছে তার পিছনে শ্রমিকদের অসামান্য অবদান রয়েছে। বাংলাদেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে সকল শ্রমিকদের মধ্যে গার্মেন্টস শ্রমিক এবং রেমিটেন্স প্রেরণকারী প্রবাসী শ্রমিকদের অবদান সবচেয়ে বেশী। যার কারণে বর্তমানে আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ অনেক বেশী মজবুত ও শক্তিশালী হয়েছে। মূলত ৯ বছর পূর্বে একজন শ্রমিকের বার্ষিক আয় ছিল ৪শত ডলার কিন্তু বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের বিভিন্ন সফল উদ্যোগের কারণে যা বৃদ্ধি পেয়ে ১৭৬০ ডলারে পৌঁছেছে। বর্তমান সরকারের সঠিক শ্রম বাজার নিশ্চিত করার কারণেই এই অর্থনৈতিক সাফল্য সম্ভব হয়েছে। আজ দেশ অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিসহ সর্বক্ষেত্রে সাফল্য ধরে রেখেছে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর সঠিক নেতৃত্বের ফলে আজ সরকারী কর্মচারীদের বেতন বাড়ানোসহ সরকারী মজুরী কমিশন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বেসরকারী ক্ষেত্রে যারা কাজ করে তাদের বেতনও বৃদ্ধি করা সম্ভব হয়েছে। সর্বোপরী আজ দেশে শ্রমিক বান্ধব সরকার প্রতিষ্ঠা হয়েছে। দেশের উন্নয়নের স্বার্থে এবং দেশকে ২০২১ সালের মধ্যে উন্নত মধ্যম আয়ের দেশ ও ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশের কাতারে পৌঁছাতে হলে সরকারের পাশাপাশি দেশের সকল শ্রমজীবী মানুষকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। যাতে বর্তমান স্বাধীনতার মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়।