॥মোক্তার হোসেন॥ রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার বাহাদুরপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ও পাংশা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক লিয়াকত আলী খান(৫০) অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলিসহ রাজবাড়ী ডিবির বিশেষ অভিযানে গ্রেফতারের ঘটনায় তার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে পাংশা থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
গত ১৭ই ডিসেম্বর বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে পাংশা কৃষি ফার্মের দক্ষিনে পাংশা-কালুখালী পাকা সড়কে চেকপোষ্ট বসিয়ে পরিচালিতে বিশেষ অভিযানে ৩টি অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র ও ৫রাউন্ড গুলিসহ বিএনপি নেতা লিয়াকত আলী খানকে গ্রেফতার করে রাজবাড়ী ডিবি পুলিশ। ধৃত লিয়াকত আলী খান পাংশা উপজেলার বাহাদুরপুর ইউপির সেনগ্রামের মৃত আমান উল্লাহ খানের ছেলে। এ বিষয়ে তার বিষয়ে পাংশ থানায় মামলা নং-৫, ধারাঃ ১৮৭৮ সালের অস্ত্র আইন ১৯ (ক)(চ) দায়ের হয়েছে।
মামলার বাদী রাজবাড়ী জেলা গোয়েন্দা শাখার এস.আই মোঃ জাফর আলী খান জানান, রাজবাড়ী জেলার কালুখালী ও পাংশা থানা এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনাকালে গত ১৭ই ডিসেম্বর বিকেল ৩টার দিকে কালিকাপুর ব্রীজ এলাকায় অবস্থানকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পাংশা থানার সত্যজিৎপুর এলাকাস্থ পাংশা-কালুখালী সড়ক দিয়ে মোটরসাইকেল যোগে কয়েকজন সন্ত্রাসী অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র বহনের তথ্য পেয়ে সত্যতা যাচাইসহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করে তিনি ফোর্সসহ বিকেল সোয়া ৩টার দিকে সত্যজিৎপুর গ্রামের কৃষি ফার্মের দক্ষিণে জনৈক নুরুজ্জামান অরফে বাবুর জমি সংলগ্ন পাংশা-কালুখালী পাকা সড়কের উপর উপস্থিত হয়ে সেখানে চেকপোস্ট বসিয়ে মোটর সাইকেল থামিয়ে মোটর সাইকেল আরোহীদের তল্লাশী করা কালীন ওইদিন বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে পাংশা থেকে কালুখালী অভিমুখী একটি হিরো হোন্ডা (প্যাশন) মোটর সাইকেল যার রেজিঃ নং রাজবাড়ী-হ ১১-০৭৩০ এর আরোহী লিয়াকত আলী খানের পরিহিত জিন্স প্যান্টের ডান কোমরে গোঁজা ১টি বিদেশী পিস্তল, ব্যবহৃত মোটর সাইকেলের ডান হ্যান্ডেলে ঝোলানো একটি প্লাস্টিকের বাদামী রঙের ব্যাগ তল্লাশী করে যার মধ্যে মিরা শাড়ী ঘর লেখা একটি লাল সাদা রঙের শপিং ব্যাগের মধ্যে ২টি দেশীয় তৈরী ওয়ান শুটার গান নামীয় আগ্নেয়াস্ত্র, ২টি পিস্তলের গুলি, ২টি বন্দুকের কার্তুজ ও ১টি রাইফেলের গুলি এবং ১টি লাল রঙের হিরো হোন্ডা(প্যাশন) মোটর সাইকেল রেজিঃ নং রাজবাড়ী-হ-১১০৭৩০ উদ্ধার ও জব্দ তালিকা করা হয়। অপরাধমূলক কর্মকান্ড করার জন্য উক্ত অস্ত্র-গুলি তার দখলে ছিল বলে পুলিশ জানায়।
পুলিশ জানায়, বাহাদুরপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ও পাংশা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক লিয়াকত আলী খানের বিরুদ্ধে পাংশা ও মাদারীপুর থানায় ডাকাতি, বিস্ফোরক ও হত্যার চেষ্টা মামলাসহ অর্ধ ডজন মামলা রয়েছে। যার মধ্যে পাংশা থানা মামলা নং-১৮, তাং-১৯/৪/১৯৯৪, ধারাঃ ৩৯৫/৩৯৭ পেনাল কোড, পাংশা থানা মামলা নং-১৯, তাং-১৯/৪/১৯৯৪, ধারাঃ ৩৯৫/৩৯৭ পেনাল কোড, পাংশা থানা মামলা নং-৮, তাং-২৩/৪/১৯৯৬, ধারাঃ ৩৯৫/৩৯৭ পেনাল কোড, পাংশা থানা মামলা নং-৩, তাং-৩/১০/১৯৯৯, ধারাঃ ১৪৩/৩২৩/৩২৫/৩২৬/৩০৭/৩৪ পেনাল কোড, পাংশা থানা মামলা নং-৬, তাং-২২/৪/২০০১, ধারাঃ ১৪৮/১৪৯/৪৪৭/৩২৩/৩২৬/৩০২/৩০৭/৩৪ পেনাল কোড, পাংশা থানা মামলা নং-৫, তাং-৭/২/২০০৯, ধারাঃ ১৪৩/১৪৮/৪৪৭/৩২৩/৩২৫/৩২৬/৩৩০/৩০৭/১১৪ পেনাল কোড, পাংশা থানা মামলা নং-১৯, তাং-১৯/৬/২০১০, ধারাঃ ১৪৩/১৪৮/৪৪৭/৩২৩/৩২৬/৩০৭/৫০৬/১১৪ পেনাল কোড, পাংশা থানা মামলা নং-২৩, তাং-২১/৬/২০১০, ধারাঃ ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সংশোধিত/২০০৩) এর ৭ তৎসহ ৪০৬ পেনাল কোড, পাংশা থানা মামলা নং-১৮, তাং-২৬/৯/২০১০, ধারাঃ ১৪৩/৩৪১/৩২৩/৩২৬/৩০৭/৩৭৯/১১৪ পেনাল কোড, পাংশা থানা মামলা নং-১৭, তাং ২২/৯/২০১২, ধারাঃ ৩৮৫/৩৮৭/৫০৬ ও মাদারীপুর থানার মামলা নং-৪, তাং ৪/১০/২০১১, ধারাঃ ১৮৭৮ সালের অস্ত্র আইনের ১৯(এ) তৎসহ বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের ৩(খ) মামলা রয়েছে।