॥মাহফুজুর রহমান॥ রাজবাড়ী সদর উপজেলার চন্দনী ইউনিয়নের বাবুপুর কছিমুদ্দিন বিদ্যাপীঠে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে শিক্ষা বোর্ডের নির্ধারিত ফি’র চেয়ে দু-তিন গুণ বেশী অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। এ স্কুলটি থেকে এ বছর ৮৬জন ছাত্র-ছাত্রী এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে।
পরীক্ষার্থীদের অভিযোগ, শিক্ষা বোর্ডের নির্ধারিত ফি মানবিক ও ব্যবসায় শাখার জন্য ১হাজার ৪৯০টাকা এবং বিজ্ঞান শাখার জন্য ১হাজার ৫৭০টাকা হলেও তাদের কাছ থেকে ২হাজার ৬শত টাকা থেকে ৫হাজার ৩শত টাকা পর্যন্ত আদায় করেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।
একাধিক পরীক্ষার্থীরা জানায়, তাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নিলেও স্কুল কর্তৃপক্ষ তাদেরকে ১হাজার ৭০৫টাকার রশিদ হাতে ধরিয়ে দিয়েছে। বাকী টাকার কথা রশিদে না থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে স্কুল কর্তৃপক্ষ তাদেরকে বলেছে, এটা অফিসের সিদ্ধান্ত।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বোর্ড ফি ও কেন্দ্র ফি’র সঙ্গে সেশন ফি মিলিয়ে ২ থেকে ৫হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করেছে। আদায়কৃত ফি’র বিপরীতে অনেক পরীক্ষার্থীকে রশিদ দেয়া হয়নি। এ নিয়ে অভিভাবকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এসএসসি পরীক্ষার্থীরা জানান, ১, ২ ও ৩ বিষয়ে অকৃতকার্যদের কাছ থেকে ফরম পূরণের জন্য ২হাজার ৭০৫টাকা নিয়ে ১ হাজার ৭০৫টাকার রশিদ দিয়েছে। বাকী ১হাজার টাকার বিষয়ে রশিদে কিছুই লেখা নেই। এভাবে অন্য এক পরীক্ষার্থী ৩হাজার ৫০৫ টাকা জমা দিলেও রশিদে ১ হাজার ৭০৫টাকা লেখা আছে। বাকী ১ হাজার ৮০০ টাকার কোন হদিস নেই।
বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের গড়ে তোলা বিকেবি ছাত্র কল্যাণ সংস্থা থেকে এ বছর দরিদ্র-মেধাবী ৫জন পরীক্ষার্থীর ফরম পূরণের টাকা প্রদান করা হয়েছে। তাদের নিকট থেকেও অতিরিক্ত টাকা আদায় করেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।
এক এসএসসি পরীক্ষার্থীর মা দরিদ্র দোকানী মালেকা বেগম জানান, তার ছেলের ফরম পূরণের জন্য একবার ১হাজার ১শত টাকা এবং আরেকবার ৪হাজার ২শত টাকা নেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষিকা মোছাঃ সেলিনা আক্তার এবং ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ফজলুল হক ফজেরের সাথে যোগাযোগ করার জন্য বিদ্যালয়ে গেলে তারা সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান। পরবর্তীতে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষিকা অতিরিক্ত টাকা আদায়ের কথা অস্বীকার করে বিভিন্ন কাজের ব্যস্ততা দেখিয়ে ফোন কেটে দেয়।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সৈয়দ সিদ্দিকুর রহমানের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, গত বছরও জেলার বিভিন্ন স্কুলের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে এরূপ অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গিয়েছিল। এ বছর কোন স্কুল কর্তৃপক্ষের অতিরিক্ত ফি আদায় করার সুযোগ নাই। শুধুমাত্র বোর্ডের ধার্যকৃত ফি নিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দিতে হবে। কেউ অতিরিক্ত ফি আদায় করলে কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।