॥আসহাবুল ইয়ামিন রয়েন॥ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একসেস টু ইনফরমেশন(এটুআই) প্রোগ্রামের সহযোগিতায় রাজবাড়ী জেলা প্রশাসন ও জেলা তথ্য অফিসের আয়োজনে গতকাল ২৩শে অক্টোবর বেলা ১১টায় কালেক্টরেটের সম্মেলন কক্ষে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে বিভিন্ন ই-সেবা সম্পর্কে জনগণকে অবহিতকরণ ও জনগণকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে’ প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়।
প্রেস ব্রিফিং-এ প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ও সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) রেবেকা খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ রহিম বক্স। এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(শিক্ষা ও আইসিটি) মোঃ সাদেকুর রহমান, জেলা তথ্য অফিসার মোঃ মোক্তার হোসেন মল্লিক, পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের ডিআইও-১ ইন্সপেক্টর মোঃ জহরুল ইসলাম, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সৈয়দ সিদ্দিকুর রহমান, ইয়াছিন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা সাইদা খানম, রাজবাড়ী প্রেসক্লাবের সভাপতি খান মোঃ জহুরুল হক, সাধারণ সম্পাদক খোন্দকার আব্দুল মতিন, রাজবাড়ী রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মোঃ ইউসুফ মিয়া, সহ-সভাপতি আসহাবুল ইয়ামিন রয়েন, সাধারণ সম্পাদক মোঃ শিহাবুর রহমান, বিটিভি’ প্রতিনিধি মোঃ সানাউল্লাহ্ সহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়ার ৪২জন সাংবাদিকগণ উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী বলেন, আমাদের মহান স্বাধীনতার স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্নকে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের ডিজিটাল দেশে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে বিশ্বের বুকে একটি সুখী-সমৃদ্ধ উন্নত দেশে পরিণত করার লক্ষ্য নিয়ে নানামুখী কর্মসূচী গ্রহণ ও বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন। এই ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার যে স্বপ্ন আজ বাস্তবায়িত হতে চলেছে সেটি তিনি তার ২০০৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে সরকার গঠনের পূর্বেই এর রূপরেখা প্রণয়ন করেছিলেন। সেই সময় সরকার গঠনের পর থেকে দীর্ঘ ৯বছর দেশকে ডিজিটাল দেশে পরিণত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মকান্ড বাস্তবায়নের ফলে আজ দেশ অনেকাংশে ডিজিটাল দেশে পরিণত হয়েছে। তারই ধারবাহিকতায় দেশের প্রতিটি সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সাংবাদ মাধ্যমে ডিজিটাল টেকনোলজী ব্যবহারের ফলে তথ্যের অবাধ আদান-প্রদান সম্ভব হয়েছে। শুধু এখানেই শেষ নয়, আজ দেশে ডিজিটাল প্রযুক্তির বদৌলতে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের মাধ্যমে প্রতিটি ইউনিয়নে ২জন করে উদ্যোক্তার কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে এবং এই উদ্যোক্তাদের মাধ্যমে ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের তৃণমূল পর্যায়ের জনসাধারণের মধ্যে বিভিন্ন সরকারী সুবিধা, বিদেশে ই-মেইল করা, বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী অফিসের বিভিন্ন আবেদনপত্রের ফরম, জমি সংক্রান্ত পর্চাসহ পাসপোর্ট করার সার্বিক সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে। যার মাধ্যমে আমাদের দেশের সাধারণ জনগণের অগ্রগতি সাধিত হয়েছে।
বর্তমান সরকারের জেলার ব্রান্ডিং সম্পর্কে জেলা প্রশাসক বলেন, জেলা ব্রান্ডিংয়ের ভিশন হলো সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণ। আর মিশন হলো প্রতিটি জেলার স্বাতন্ত্র ও সম্ভাবনা বিকাশের মাধ্যমে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন। সরকার জেলা ব্রান্ডিংয়ের পিছনে জেলার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি সঞ্চার, জেলার ইতিবাচক ভাবমুর্তি বিনির্মাণ, পর্যটন শিল্পের বিকাশ, জেলার ইতিহাস, ঐতিহ্যের অনুসন্ধান ও বিকাশ সাধন, বিলুপ্তপ্রায় বা বিলুপ্ত কোন গৌরবোজ্জল ঐতিহ্যের অনুসন্ধান ও বিকাশ সাধন, ভৌগলিক নির্দেশক পণ্য কর্মসূচীর বাস্তবায়নে সহায়তা, স্থানীয় উদ্যোক্তা তৈরী ও বিদ্যমান উদ্যোক্তাদের সক্ষমতার উন্নয়নে পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান, অবকাঠামো উন্নয়ন, সমৃদ্ধ বাংলাদেশকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরা, টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করণসহ বিভিন্ন উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় রাজবাড়ী জেলাকে একটি পর্যটন স্পট ও কৃষি সমৃদ্ধ জেলা হিসেবে ব্রান্ডিং করা হয়েছে। যেহেতু রাজবাড়ী জেলা কৃষি সমৃদ্ধ ও পদ্মা নদীকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে সেই জন্য রাজবাড়ী জেলার ব্রান্ডিং নাম দেওয়া হয়েছে ‘পদ্মা কন্যা রাজবাড়ী’। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাকে বাস্তবে রূপদানের উদ্দেশ্যে সরকার জেলার কৃষি নির্ভর শিল্প ও পর্যটন শিল্পের বিকাশের লক্ষ্যে বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মসূচী বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। এই জেলার সকল ঐতিহ্য যাতে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়া যায় সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করেছে। আমি মনে করি, সকলের আন্তরিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে এই জেলা তার সকল সম্ভাবনাময় ক্ষেত্রে আরো সমৃদ্ধি অর্জন করবে।
জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী আরো বলেন, বর্তমান সরকার দেশের কিশোরদের মেধা বিকাশের লক্ষ্যে তাদের শিক্ষা কার্যক্রম, কারিগরি শিক্ষায় ডিজিটালাইজেশন, স্বাস্থ্য সেবা, কাউন্সিলিং, বিভিন্ন উদ্ভাবনীমূলক উদ্যোগ গ্রহণসহ বিভিন্ন বিষয়ে আরো বেশী উদ্যোগী করে তোলার লক্ষ্যে একসেস টু ইনফরমেশন কার্যক্রমের মাধ্যমে সকল বিষয়ে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারে পারদর্শী করে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এই সকল ক্ষেত্রে ডিজিটাল তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করা সম্ভব হলে দেশকে আমরা বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের ডিজিটাল দেশে ও ২০৪১ সালের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সুখী, সমৃদ্ধ ও উন্নত বাংলাদেশে রূপান্তর করা সম্ভব হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। বক্তব্যের পর্ব শেষে ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে বিভিন্ন ই-সেবা সম্পর্কে কিছু ভিডিওচিত্র উপস্থাপন করা হয়।