॥আশিকুর রহমান॥ রাজবাড়ী কাজী হেদায়েত হোসেন স্টেডিয়াম এলাকার গোল্ডেন আবাসিক হোটেলে গতকাল ৩১শে আগস্ট সকালে আব্দুল্লাহ্ আল মামুন(৩০) নামে এক যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। সে ঢাকাস্থ রাজবাড়ী জেলা জাতীয়তাবাদী ছাত্র ফোরামের আহবায়ক বলে জানাগেছে।
তিনি পাংশা উপজেলার বাবুপাড়া ইউনিয়নের আমতলা গ্রামের মৃত মাওলানা আব্দুর রহমানের ছেলে। মামুন তার এক সঙ্গীসহ ওই হোটেলের একটি কক্ষে রাত্রি যাপন করেছিলেন।
মামুনের সঙ্গী কালুখালী উপজেলার রতনদিয়া ইউনিয়নের তফাদিয়া গ্রামের ওহাব মোল্লার ছেলে মিজানুর রহমান লিটু জানান, পাশাপাশি উপজেলায় বাড়ি হওয়াতে মামুন ভাই আমার পূর্ব পরিচিত শোভাকাঙ্খী। গত ৩০শে আগস্ট সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে আমরা গাবতলী বাস টার্মিনাল থেকে বাসে রাজবাড়ীর উদ্দেশ্যে রওনা হই। রাত সাড়ে ১২টার দিকে আমরা রাজবাড়ী বড়পুলে পৌঁছাই। অনেক রাত হয়ে যাওয়াতে মামুন ভাই হোটেল গোল্ডেনের একটি কক্ষ ভাড়া নেন। মাঝেমধ্যেই মামুন ভাই ওই হোটেলে রাত্রিযাপন করতেন। এরপর আমরা শহরের নতুন বাজার এলাকার একটি হোটেল থেকে ভাত, মুরগীর মাংস ও ডিম ভাজি কিনে নিয়ে হোটেলে গিয়ে খেয়ে রাত একটার দিকে ঘুমিয়ে পড়ি। গতকাল ৩১শে আগস্ট সকাল সাড়ে ৭টার দিকে মামুন ভাই চিৎকার করে আমাকে ডাকাডাকি করেন।
এরপর আমি ঘুম থেকে উঠলে তিনি বলেন তার পেটে গ্যাসে চাপ দিয়ে বমি হয়েছে। তখন আমি নিচে নেমে দুইটি সেকলো এবং দুইটি কেক কিনে নিয়ে তাকে খাওয়ানোর পর তিনি মোটামুটি সুস্থ্যতা অনুভব করেন। এরপর সাড়ে ৯টার দিকে মামুন ভাই আবার অসুস্থ্যতা অনুভব করে আমাকে লোসেকটিল পাউডার এবং ভাত কিনে আনতে বলেন। এরপর আমি নিচে নেমে ভাত ও লোসেকটিল পাউডার কিনে নিয়ে রুমে গিয়ে দেখি মামুন ভাই প্রচ- অসুস্থ্য অবস্থায় কাতরাচ্ছেন। এ সময় আমি হোটেলের ম্যানেজারের সহযোগিতায় তাকে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
রাজবাড়ী সদর হাসপাতলের আবাসিক মেডিকেল অফিসার(আরএমও) ডাঃ সুনীল কুমার রায় জানান, মামুনকে সকাল সাড়ে ১১টার দিকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। এরপর সঙ্গে সঙ্গে আমরা থানায় খবর দেই। ধারণা করা হচ্ছে হাসপাতালে আনার ২০মিনিট আগে তার মৃত্যু হয়েছে। তবে, মৃতদেহের কোথাও কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই।
তিনি আরও বলেন, পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য রাজবাড়ী সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। তাৎক্ষনিকভাবে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ বলা সম্ভব হচ্ছে না। ময়না তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাবার পর বিস্তারিত জানা যাবে।
রাজবাড়ী সদর থানার ওসি মোঃ আবুল বাশার মিয়া জানান, মামুনের সঙ্গে থাকা যুবক মিজানুর রহমান লিটুকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। মামুনের অভিভাবকের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী আইনী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।