॥রঘুনন্দন সিকদার॥ রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার নারুয়া ইউনিয়নের সোনাকান্দর ঘাট এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে গড়াই নদী থেকে বালু উত্তোলন করছে প্রভাবশালী একটি বালু খেকো চক্র। এর ফলে নদীর তীরবর্তী আশপাশের অন্ততঃ ১৩টি গ্রাম ভাঙ্গনের শিকার হয়ে নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। এ বিষয়ে এলাকাবাসী কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে অবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানিয়েছে।
সরেজমিনে সোনাকান্দর ঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বালুদস্যুরা গড়াই নদীর বিভিন্ন স্থান থেকে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন(খননযন্ত্র) দিয়ে বালু উত্তোলন করে নদীর তীরে পাহাড়ের মত স্তুপ করে রেখে বিক্রি করছে। বর্তমানে সাময়িকভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ থাকলেও নদীর বিভিন্ন স্থানে ড্রেজার লাগানোই রয়েছে। যে কোন সময় তারা ইচ্ছেমত আবার বালু উত্তোলন করা শুরু করবে।
খোঁজ নিয়ে জানাযায়, দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে এই বালু উত্তোলনের নেপথ্যে রয়েছে সোনাকান্দর গ্রামের সাহেব আলী খাঁ, গাড়াখোলা গ্রামের ফিরোজ খাঁ এবং নারুয়ার বাদশা মোল্লাসহ কয়েকজন। প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে এলাকার সাধারণ জনগণ ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পায় না। তা স্বত্ত্বেও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা কয়েক মাস পূর্বে প্রশাসনের নিকট লিখিত অভিযোগ করার পর বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসার এইচ.এম রকিব হায়দার ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার মাধ্যমে ড্রেজার মেশিন ভেঙ্গে নদীতে ফেলে দেওয়াসহ অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করে দেন। কিছুদিন চুপচাপ থাকার পর বালুদস্যু চক্রটি আবার সক্রিয় হয়ে দেদারছে বালু উত্তোলন করে বিক্রির পাশাপাশি নদীর পাড় দিয়েই পাহাড়ের মত স্তুপ করে রাখে।
সোনাকান্দর ঘাট এলাকার ওয়াজেদ ফকির ও আঃ খালেক নামের ২জন ভুক্তভোগী বলেন, বালু খেকোরা দীর্ঘদিন ধরে এভাবে প্রকাশ্যে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। প্রভাবশালী হওয়ায় তাদেরকে আমরা ভয় পাই। শুধু বালু উত্তোলনই নয়, শুষ্ক মৌসুমে তারা মাটি কেটেও বিক্রি করে। এতে আমাদের কয়েক বিঘা জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বালু উত্তোলন বন্ধ না হলে আমরা আরো ক্ষয়-ক্ষতির সম্মুখীন হবো। এর থেকে আমরা পরিত্রাণ চাই। একইভাবে এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত আরো অনেকে বলেন, গড়াই নদী থেকে অবৈধভাবে এই বালু উত্তোলন বন্ধ না হলে আমরা নিঃস্ব হয়ে যাবো। তারা এ বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের নিকট দাবী জানান।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসার এইচ.এম রকিব হায়দার বলেন, অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে অচিরেই প্রশাসন কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।