॥রফিকুল ইসলাম/দেবাশীষ বিশ্বাস॥ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪২তম শাহদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে রাজবাড়ী জেলা পুলিশের আয়োজনে গতকাল ২৭শে আগস্ট বিকেলে পুলিশ লাইন্সের ড্রিলশেডে স্কুল ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধকরণে রচনা প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়।
পুলিশ সুপার সালমা বেগম পিপিএম-সেবা’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলী বক্তব্য রাখেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ তারিকুল ইসলামের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার(ক্রাইম) মোঃ আছাদুজ্জামান, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার(পাংশা সার্কেল) মোঃ ফজলুল করিম, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার আবুল হোসেন ও জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সৈয়দ সিদ্দিকুর রহমান প্রমুখ।
এ সময় রাজবাড়ী সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আবুল বাশার মিয়া, বালিয়াকান্দি থানার অফিসার ইনচার্জ হাসিনা বেগম, গোয়ালন্দ ঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ মির্জা আবুল কালাম আজাদ, কালুখালী থানার অফিসার ইনচার্জ নূরে আলম ফকির, পাংশা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মোফাজ্জেল হোসেন, ডিবি’র অফিসার ইনচার্জ মোঃ ওবাইদুর রহমান, ডিআইও-১ মোঃ জহিরুল ইসলাম, ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টি.আই) মৃদুল রঞ্জন দাস এবং পুলিশ লাইন্সের রিজার্ভ ইন্সপেক্টর (আর.আই) মোঃ শাহ আলমসহ বিভিন্ন স্কুল ও মাদ্রাসার শিক্ষক মন্ডলী ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংসদ সদস্য আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলী তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যকার বৈষম্যের কথা তুলে ধরে বলেন, আমাদের স্বাধীনতার সুত্রপাত সেখান থেকেই। চাকুরীর ক্ষেত্রে, ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে, প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে সব কিছুতেই বৈষম্য ছিল। তারা আমাদেরকে শোষণ করতো। আমাদের কথা বলার কোন অধিকার ছিল না। এ জন্যই বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন। তার নেতৃত্বে বাঙালী জাতি স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছিল। তার জন্যই আজ আমরা স্বাধীন দেশে বসবাস করছি। স্বাধীনতার পর তিনি যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশকে সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করছিলেন। কিন্তু স্বাধীনতা বিরোধীরা তা মেনে নিতে পারেনি। পাকিস্তানসহ দেশী ও বিদেশী ষড়যন্ত্রকারীরা ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট তাকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করে। শেখ রাসেলের মতো শিশু, অন্তঃস্বত্ত্বা নারী কাউকে তারা ছাড় দেয়নি। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সরকার বঙ্গবন্ধুর খুনীদের বিচার করার মাধ্যমে জাতিকে কলংকমুক্ত করা হয়েছে। শোকের মাসে এমন আয়োজন করার জন্য তিনি জেলা পুলিশকে ধন্যবাদ জানান।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, তোমাদের প্রকৃত ইতিহাস জানতে হবে। এ জন্য বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী বইটি পড়ার জন্য তিনি শিক্ষার্থীদের প্রতি আহবান জানান। তিনি জেলা পুলিশের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে আগামীতে বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে বিতর্ক প্রতিযোগিতা আয়োজনের আহবান জানান।
পুলিশ সুপার সালমা বেগম পিপিএম-সেবা বলেন, এই মাসে আমরা হারিয়েছি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারকে। ১৯৭৫ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত প্রকাশ্যে বঙ্গবন্ধুর নাম পর্যন্ত নেওয়া যেত না। এখন তোমরা বাংলাদেশের ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারছো। বাংলাদেশের ইতিহাসের সাথে বঙ্গবন্ধু ওতপ্রোতভাবে সবক্ষেত্রে জড়িয়ে আছেন। তিনি বঙ্গবন্ধুকে বাংলাদেশের মানচিত্রের সাথে তুলনা করে বলেন, বঙ্গবন্ধু মানে একটি স্বাধীন দেশ। বঙ্গবন্ধু ছাড়া বাংলাদেশ নয়, বাংলাদেশ ছাড়া বঙ্গবন্ধু নয়। বঙ্গবন্ধু আমাদের চেতনার, আমাদের স্বপ্নের, আমাদের প্রেরণার। বঙ্গবন্ধু ক্ষুধা, দারিদ্র ও শোষণমুক্ত সোনার বাংলাদেশ গড়ার যে স্বপ্ন দেখেছিলেন তা আমরা বাস্তবায়ন করবো।
‘আমাদের বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক রচনা প্রতিযোগিতায় জেলার ২০টি স্কুল ও মাদ্রাসার ৭০৭জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। তাদের মধ্যে ৬৬জনকে পুরস্কৃত করা হয়।