॥স্টাফ রিপোর্টার॥ রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী জেলার বন্যা পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ এবং বন্যার্তদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম তদারকি করছেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসারদর নিকট হতে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, সাম্প্রতিক বন্যায় রাজবাড়ী জেলার ৩টি পৌরসভা এবং ৫টি উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নের ১৪৩টি গ্রামের ২৯হাজার ৮২৮টি পরিবারের ১লক্ষ ১২ হাজার ৩৫০ জন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
গতকাল ১৭ই আগস্ট বিকেলে জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলী এবং জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফকীর আব্দুল জব্বারের সঙ্গে সদর উপজেলার বরাট ইউনিয়নের উড়াকান্দা এবং গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের জলিল মুন্সীপাড়া ও চেয়ারম্যানের বাজার নামক এলাকায় বন্যার্তদের মধ্যে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেন।
এ সময় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার শাখার উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল কাদের শেখ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রেবেকা খান, সংশি¬ষ্ট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ইউপি চেয়ারম্যানসহ অন্যান্য কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লে¬খ্য, বন্যায় এ পর্যন্ত জেলার ১হাজার ৯৪৪ হেক্টর ফসলী জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ২১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়েছে। ১হাজারটি ঘর সম্পূর্ণভাবে এবং ১হাজার ২০০টি ঘর আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মর্মে সংশ্লি¬ষ্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসারগণ জানিয়েছেন। বন্যার কারণে জেলার ২১টি আশ্রয় কেন্দ্র ব্যবহার উপযোগী করে রাখা হয়েছে। তন্মধ্যে এ পর্যন্ত ৩টিতে ১১৯টি পরিবারের ৪০৫ জন আশ্রয় নিয়েছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, গত ১৪ ও ১৫ই আগস্ট বেড়িবাঁধের বাইরে অতিবৃষ্টি ও নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে জেলার ৫টি উপজেলার ২৬ হাজার ৮৫৫ হেক্টর জমির ফসলের মধ্যে ৩০৬ হেক্টর জমির রোপা আমন, ৯২ হেক্টর জমির বোনা আমন, ২৯ হেক্টর জমির শাক-সবজী এবং ৪ হেক্টর জমির মরিচসহ ৪৩১ হেক্টর জমির ফসল আক্রান্ত হওয়ায় ৪ হাজার ৪৮০টি কৃষক পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর হতে প্রাপ্ত বরাদ্দ অনুযায়ী জেলা প্রশাসন এ পর্যন্ত ৪লক্ষ ৯৩হাজার টাকা জি.আর টাকা এবং ২৮৩.৭৪০ মেট্রিক টন জি.আর চাল ৫টি উপজেলায় উপ-বরাদ্দ প্রদান করেছে। বন্যার্তদের সাহায্যার্থে জরুরীভাবে বিতরণের জন্য আরও ৫লক্ষ টাকা জি.আর ক্যাশ, ২০০ মেট্রিক টন জি.আর চাল এবং শুকনা খাবার ক্রয়ের জন্য ৫লক্ষ টাকা বরাদ্দ প্রদানের লক্ষ্যে জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরে চাহিদাপত্র প্রেরণ করেছেন।
বন্যা পরিস্থিতি সংক্রান্ত খবরাখবর সংগ্রহ ও ত্রাণ তৎপরতা পর্যবেক্ষণের জন্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয়সহ সকল উপজেলা নির্বাহী অফিসারগণের কার্যালয়ে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী, জেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত পদ্মা নদীর পানি পাংশা উপজেলার সেনগ্রাম পয়েন্টে বিপদসীমার ৫০ সেন্টিমিটার এবং গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৯২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।