শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ০২:২৭ অপরাহ্ন
Logo
সংবাদ শিরোনাম ::
বিশ্বব্যাপী ওমিক্রন সংক্রমণ বৃদ্ধিতে আইসোলেশন মেয়াদ অর্ধেক করার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট ডেল্টা ও বিটার তুলনায় তিন গুণের বেশী পুনঃ সংক্রমন ঘটাতে পারে : গবেষণা প্রতিবেদন জাতিসংঘ ভবনের বাইরে এক বন্দুকধারী গ্রেফতার শান্তি চুক্তির পঞ্চম বার্ষিকী উপলক্ষে কলম্বিয়া সফর জাতিসংঘ মহাসচিব সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানগণের সাক্ষাৎ করোনা ভাইরাসের সংক্রমন বেড়ে যাওয়ায় অস্ট্রিয়ায় লকডাউন করোনা সংক্রমণ বাড়ায় ইউরোপের বিভিন্ন দেশে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ ভারতে নতুন করে ১০ হাজার ৩০২ জন করোনায় আক্রান্ত নভেম্বর মাসজুড়ে করাঞ্চলে কর মেলার সেবা পাবেন করদাতারা ঔপনিবেশিক আমলের ফৌজদারী কার্যবিধি যুগোপযোগী হচ্ছে

দীর্ঘ ১বছর পর হত্যা মামলা রুজু॥আঘাত জনিত কারণে শিশু নাঈমের মৃত্যু॥রহস্যজনক কারণে আসামী অজ্ঞাত!

  • আপডেট সময় শনিবার, ১২ আগস্ট, ২০১৭

॥স্টাফ রিপোর্টার॥ রাজবাড়ী সদর উপজেলার শহীদওহাবপুর ইউনিয়নের রামপুর গ্রামের ১৩বছরের শিশু নাঈমের রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনার এক বছর পর হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে।
গত ৯ই আগস্ট রাজবাড়ী থানার এস.আই বদিয়ার রহমান বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামী করে মামলাটি দায়ের করেন। রাজবাড়ী থানার মামলা নং-১৮, ধারাঃ ৩০২/২০১/৩৪ দঃ বিঃ। তবে রহস্যজনক কারণে আব্দুর রহমানকে মামলার আসামী করা হয়নি। রাজবাড়ী থানার সেকেন্ড অফিসার এস.আই খান বেল্লাল মামলাটির তদন্ত করেছেন। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি। নিহত নাঈম রামপুর গ্রামের আলতাফ শেখের ছেলে।
জানাযায়, সংসারে অভাব অনটন থাকায় বিগত ২০১৬ সালের ১৭ই জুলাই সকালে একই গ্রামের অজু উল্লাহ’র ছেলে আঃ রহমান শিশু নাঈমকে ফার্নিচারের কাজ শিখিয়ে ভাল বেতনে চাকুরী দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে চট্রগ্রামের চানগাঁও নিয়ে যায়। সেখানে তিনি নাঈমকে তার সোফা সেট তৈরীর কারখানায় কাজ দেন। ওই কারখানায় আনুমানিক এক সপ্তাহ কাজ করার পর নাঈম চট্রগ্রাম হালি শহরে হক ডোর এন্ড ফার্নিচার নামক দোকানে প্রতিদিন ৫শত টাকা মজুরিতে কাজ নেয়। ২সপ্তাহে সে বাড়ীতে ৫হাজার টাকাও পাঠায়। আঃ রহমানের কারখানায় কাজ না করায় সে ক্ষিপ্ত ছিল। এ জের ধরে আঃ রহমান তাকে বেদম মারপিট করে। এতে মারাত্মকভাবে জখম হয় নাঈম। অবস্থা বেগতিক দেখে গত ৭ই আগস্ট তাকে স্থানীয় হাসপাতালে নেয়া হলে কতর্ব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষনা করেন।
এরপর আঃ রহমান নিজেই গতকাল ৮ই আগস্ট বিকেল ৩টার দিকে নাইমের মৃতদেহ বাড়ীতে নিয়ে আসে। পরবর্তীতে লাশের শরীরে বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহৃ দেখতে পেয়ে পরিবারের লোকজন ও স্থানীয়রা আঃ রহমানকে চাপ দিলে সে আপোষ মিমাংশার কথা বলেন। নাঈমের পরিবারের লোকজন যখন শোকে কাতরাচ্ছিল তখন পুলিশকে খবর না দিয়ে একটি ঝোপের মধ্যে আঃ রহমানের সাথে আপোষ মিমাংশায় বসেন স্থানীয় চেয়ারম্যান, মেম্বার ও কিছু প্রভাবশারী ব্যক্তি। তখন আঃ রহমানের সাথে ২লক্ষ টাকার বিনিময়ে হত্যাকান্ড মিমাংশার জন্য সিদ্ধান্ত হয়। এক পর্যায়ে টাকা আনার কথা বলে অভিযুক্ত আঃ রহমান সেখান থেকে গাঢাকা দেন। এরপর রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করে আঃ রহমান আর ফিরে না এলে পরদিন শালিসদারগণ থানায় খবর দেন। খবর পেয়ে রাজবাড়ী থানার এস.আই মোঃ বদিয়ার রহমান গিয়ে লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করেন এবং ময়না তদন্তের জন্য লাশটি সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেন। কিন্তু ওই সময়ে পুলিশের সংশ্লিষ্ট তদন্তের ঘটনার সত্যতা প্রকাশ পায়। কিন্তু রহস্যজনক কারণে থানায় হত্যা মামলা রুজু করা হয়নি। ফলে সহজেই পারপায় ২লক্ষ টাকা দিয়ে মিমাংশার জন্য চেষ্টাকারী অভিযুক্ত আব্দুর রহমান।
এ মামলার বাদী ও সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুতকারী অফিসার রাজবাড়ী থানার এস.আই বদিয়ার রহমান জানান, নাইমের ডান হাত, গলা, কানে আঘাতের চিহ্নসহ অন্ডকোষ ফোলা ছিলো। সুরতহাল রিপোর্ট তৈরীর পর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানার জন্য লাশটি ময়না তদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। ময়না তদন্ত রিপোর্টে রাজবাড়ী হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার আশরাফুল আলম মাথায় আঘাত জনিত কারণে নাঈমের মৃত্যু হয়েছে বলে মতামত প্রকাশ করেন। এ ঘটনার পর তিনি নাঈমের পরিবারকে বিষয়টি জানান। কিন্তু তারা কেউ মামলা করতে রাজী হয়নি। ফলে তিনি নিজেই বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
উল্লেখ্য, গত ৮ই আগস্ট-২০১৬ তারিখে এ বিষয়ে শহীদওহাবপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ তোরাপ মন্ডল সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, আঃ রহমানের সাথে শিশু নাইম কাজ করতে চট্রগ্রামে যায় এবং সেখানে নাইম মারা যায়। ওরা গরীব মানুষ তাই আঃ রহমানের কাছ থেকে কিছু ক্ষতিপূরণ নিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয়।
এ বিষয়ে গত ৯ই আগস্ট-২০১৬ তারিখে দৈনিক মাতৃকণ্ঠে “আপোষরফা করতে এলাকার প্রভাবশালীরা তৎপর॥রাজবাড়ী সদর উপজেলার রামপুরে শিশু নাইমকে হত্যার অভিযোগ ময়না তদন্ত ছাড়াই লাশ দাফনের চেষ্টা!” শিরোনমে সংবাদ প্রকাশিত হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর
error: আপনি নিউজ চুরি করছেন, চুরি করতে পারবেন না !!!!!!