॥স্টাফ রিপোর্টার॥ পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধি ও তীব্র স্রোতের পাশাপাশি ফেরী ও ঘাট সংকটের কারণে দৌলতদিয়া ঘাটে জনদুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। ঘাট থেকে গোয়ালন্দ ফিড মিল এলাকা পর্যন্ত প্রায় ৫শতাধিক ট্রাক ও শতাধিক যাত্রীবাহী বাস পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে।
নদী পার হতে না পেরে বাস-ট্রাকের ড্রাইভার-হেলপার ও যাত্রীরা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। তবে ঘাট এলাকার যানজট নিরসন, ছিনতাই-চাঁদাবাজী রোধ ও যাত্রীদের নিরাপত্তা রক্ষায় পুলিশ তৎপর রয়েছে।
চলতি বর্ষা মৌসুমে পদ্মা নদীর গর্ভে প্রায় বিলীন হওয়া ৪টি ঘাটের ভাঙন ঠেকাতে চলছে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলার কাজ। ফেরী ও ঘাট সংকটের কারণে দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় যানবাহনগুলোকে ঘন্টার পর ঘন্টা দীর্ঘ লাইনে পড়ে থাকতে হচ্ছে। দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুট হয়ে ঢাকামুখী ট্রাকগুলো পারাপারে ২দিনের অধিক সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে। দৌলতদিয়া ঘাটের এ পরিস্থিতি নিত্যদিনের ঘটনায় পরিণত হয়েছে।
গতকাল ৪ঠা আগস্ট দুপুরে ফেরী ঘাট ও টার্মিনাল এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, দৌলতদিয়ার ৪টি ফেরী ঘাট এলাকায় পদ্মা নদীর ভাঙন রোধে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। ইতিপূর্বে ২নম্বর ফেরী ঘাটটি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ৩নম্বর ফেরী ঘাটের পন্টুনের একটি পকেট দিয়ে ফেরীতে যানবাহন উঠা-নামা করছে। ঘাট সংকট মোকাবেলায় দৌলতদিয়া লঞ্চ ঘাটের পাশে স্থাপিত ২টি নতুন ফেরী ঘাটের মধ্যে একটি দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। অপরটি চালু হওয়ার পথে।
জানাগেছে, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটের ১৮টি ফেরীর মধ্যে ৩টি ফেরীর(হামিদুর রহমান, মতিউর রহমান ও খান জাহান আলী) যান্ত্রিক ত্র“টির কারণে যানবাহন পারাপার বন্ধ রয়েছে। পাটুরিয়া ঘাটের ভাসমান ওয়ার্কশপে ফেরীগুলোর মেরামত কাজ চলছে। এছাড়াও এ নৌরুটে চলাচলকারী ৩টি ফেরী(বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন, কাবেরী ও এনায়েতপুরী) বর্তমানে মাওয়া ঘাটে অবস্থান করছে।
ফরিদপুর থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী (ফরিদপুর-ট-১১-০৩৭৩) ট্রাকের ড্রাইভার সম্রাট ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, গত বুধবার ফরিদপুর থেকে পণ্য বোঝাই করে ছেড়ে আসি। দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় যানজটের কারণে ঘাট থেকে প্রায় ১১ কিলোমিটার দূরে হাইওয়ে পুলিশ আটকে রাখে। গত বৃহস্পতিবার রাতে দৌলতদিয়া ঘাটে এসে পৌঁছাই। আজ দুপুর হয়ে গেল, তবুও নদী পার হতে পারলাম না।
ফেরী কেরামত আলীর ভারপ্রাপ্ত মাস্টার অনিল কুমার জানান, গত ২/৩ ধরে পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধি ও তীব্র ¯্রােতের কারণে দৌলতদিয়া ঘাট থেকে পাটুরিয়া ঘাটে পৌঁছাতে স্বাভাবিক সময়ের দ্বিগুণ সময় লাগছে।
ঘাট এলাকায় যাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়ে রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার সালমা বেগম,পিপিএম-সেবা বলেন, দৌলতদিয়া ঘাটে যানজট বা ফেরী পারাপারে বিঘœ ঘটলে ঘাট এলাকায় যানবাহনের লম্বা লাইনের সৃষ্টি হয়। এ সময় ওই সকল যানবাহনের যাত্রীরা চুরি, ছিনতাইয়ের ভয়ে থাকে। যাত্রীদের নিরাপত্তায় জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে ঘাট এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ ফোর্স সবসময় মোটর সাইকেলের বহরে টহল দিতে থাকে।
ঘাট এলাকায় দায়িত্বরত ট্রাফিক সার্জেন্ট মোঃ পারভেজ সোহান বলেন, বাস-ট্রাকের লম্বা লাইনের সৃষ্টি হয়েছে। যাতে করে যানজট সৃষ্টি না হয়, সেদিকে ট্রাফিক পুলিশ তৎপর রয়েছে।