॥কাজী তানভীর মাহমুদ॥ রাজবাড়ী সদর উপজেলার পাঁচুরিয়া ইউনিয়নের বাউনিপুর গ্রামের কৃষক ইসমাইলের কাঁচা বসত ঘর থেকে গতকাল ২৬শে জুলাই দুপুরে সাড়ে ৩ফুট লম্বা বিষধর মা গোখরাসহ ১৩৬টি সাপের বাচ্চা জীবন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।
রাজবাড়ী শহরের ড্রাই আইস ফ্যাক্টরী এলাকার সাপুড়ে লিটন বেলা ১২টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ২ঘন্টার চেষ্টায় সাপগুলো উদ্ধার করে।
সাপুড়ে লিটন জানায়, কয়েকদিন আগে কৃষক ইসমাইল তার বসত ঘরের পাশে একটি গোখড়া সাপ দেখতে পেয়ে তাকে খবর দেয়। প্রথমে তার ঘরের মেঝে খুঁড়ে বড় আকৃতির মা গোখরাটি ধরা হয়। এরপর মাটি খুঁড়ে ২১১টি ডিমের খোসা ও ১৩৬টি সাপের বাচ্চা জীবন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে সাপের উপদ্রব বৃদ্ধি পাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে রাজবাড়ী জেলার কালুখালী উপজেলার মৃগী ইউনিয়নের সাপের খামারের উদ্যোক্তা রবিউল ইসলাম রঞ্জু বলেন, যেসব জায়গা থেকে সাপ উদ্ধারের খবর পাওয়া যাচ্ছে সেগুলো আসলে সাপের বাচ্চা। বড় সাপের চেয়ে বাচ্চা সাপই বেশী পাওয়া যাচ্ছে। কারণ এই সময়টা সাপের বাচ্চা উৎপাদনের সময়। বর্তমানে কোবরা নাজা সাপের ডিম ফুটে বাচ্চা বের হচ্ছে। আর এক মাসের মধ্যে নাজা কাউথিয়া সাপের ডিম ফুটে বাচ্চা বের হবে। সাপ সাধারণত নিরাপদ জায়গায় ডিম পারে। একদিকে বর্ষার মৌসুম, অন্যদিকে বন্যা হওয়ায় সাপগুলো গ্রামের মাটির ঘরগুলোতে বাসা বেঁধে ডিম পারার চেষ্টা করে। ভূ-প্রকৃতির পরিবর্তনের কারণে সাপ খাদ্য ও বাসস্থানের জন্য আবাসিক এলাকায় চলে আসছে। বিশেষ করে এরা কাঁচা ঘর-বাড়ীতে গিয়ে আশ্রয় নিচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, সাধারণত মে থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত সাপের ডিম এবং বাচ্চা উৎপাদনের সময়। এই সময়ে কোবরা নাজা এবং কাউথিয়া সাপের ডিম থেকে বাচ্চা বের হয়। সাপের প্রিয় খাবার হচ্ছে ইঁদুর। যেসব বাড়ীতে ইঁদুরের উৎপাত বেশী সেখানে সাপ থাকবে এটাই স্বাভাবিক। নিরাপদ জায়গা হিসেবে সাপ বাড়ীর ইঁদুরের গর্তে ডিম ফোটাচ্ছে। গোখরা সাপ বছরে ১বার ডিম দেয়।