॥আসহাবুল ইয়ামিন রয়েন॥ রাজবাড়ী জেলা প্রশাসন, সামাজিক বন বিভাগ ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আয়োজনে ‘বৃক্ষ রোপন করে যে, সম্পদশালী হয় সে, স্বাস্থ্য পুষ্টি অর্থ চাই-দেশী ফলের গাছ লাগাই’ এই প্রতিপাদ্য বিষয়কে সামনে রেখে গতকাল ২০শে জুলাই বেলা ১১টায় বৃক্ষ রোপন ও বৃক্ষ মেলা-২০১৭ উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র‌্যালী, উদ্বোধন অনুষ্ঠান ও সেমিনার শহরের রেলওয়ে আজাদী ময়দানে অনুষ্ঠিত হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ও সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে মেলার উদ্বোধন করেন ও বক্তব্য রাখেন রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলী।
জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সম্মানিত বিশেষ অতিথি হিসেবে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য কামরুন নাহার চৌধুরী লাভলী ও বিশেষ অতিথি হিসেবে পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার(ক্রাইম) মোঃ আছাদুজ্জামান, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডঃ এম.এ খালেক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক নাঈম আস সাকীব ও সামাজিক বন বিভাগ ফরিদপুরের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এনামূল হক ভূইয়া বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ রকিব উদ্দিন ও সঞ্চালনা করেন কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোঃ বাহাউদ্দিন।
অন্যান্যের মধ্যে জেলা কৃষক লীগের সভাপতি মোঃ আবুল কালাম আজাদ, জেলা কৃষি সম্পসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ও জেলা ডিপ্লে¬ামা কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটের সভাপতি মোঃ আবুল হোসেন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এ সময় বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের কর্মকর্তাগণ, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ ও সামাজিক বন বিভাগের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ, এনজিও প্রতিনিধিগণ, বিভিন্ন নার্সারীর ও বাগান মালিকগণ, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরাসহ কৃষি ও বন বিভাগের বনায়ন কার্যক্রমের সাথে জড়িত সংশ্লি¬ষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি রাজবাড়ী-১ আনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলী তার বক্তব্যে বলেন, আমাদের দেশে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মেলা হলেও এদের মধ্যে কৃষি মেলার একটি আলাদা তাৎপর্য রয়েছে। কারণ আমাদের দেশ কৃষি প্রধান দেশ। সেই জন্য আমাদের সকলকে বৃক্ষ মেলার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। আমরা সকলে যদি একটি করে ফলদ, বনজ বা ঔষধী গাছ লাগাই তবে আমাদের পরিবেশ ভালো থাকার পাশাপাশি আমরা সহজেই পুষ্টিকর ফলের চাহিদা নিজেরাই মিটাতে পারব। আমাদের সকলেরই আজকের শপথ হোক একটি করে গাছ লাগানো। এই শপথ বাস্তবায়ন করতে পারলে আমরা অতি অল্প সময়ের মধ্যেই বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার লক্ষ্য বঙ্গবন্ধুর চির সবুজ সোনার বাংলা গড়ে তুলতে পারব। তিনি উপস্থিত সকলকে আজকে থেকে একটি করে গাছ লাগানোর অনুরোধ জানিয়ে বৃক্ষ রোপন ও বৃক্ষমেলা ২০১৭ এর শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য কামরুন নাহার চৌধুরী লাভলী দেশী ফলের গাছ লাগানোর উপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, আমরা যদি সকলে নিজেদের বাড়ীর আঙ্গিনায়, ছাদে যেখানে একটু জায়গা আছে সেখানে একটি করে ফলদ গাছ লাগাই তবে আমরা নিজেরাই ফল উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারব। এর ফলে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সরকারের আগামী দিনের রূপরেখা অনুযায়ী বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে সবুজ বনায়নে ও ফল উৎপাদনে রোল মডেল রাষ্ট্রে পরিণত হবে।
অনুষ্ঠানের সভাপতি জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী বলেন, বর্তমান সরকারের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে দেশের প্রতিটি অঞ্চলের পরিবেশ ভারসাম্য রক্ষার জন্য যতটুকু বনায়ন প্রয়োজন সেটি বাস্তবায়ন করা। সেই লক্ষ্যকে বাস্তবায়ন করতে হলে আমাদের প্রতিটি জেলায় কমপক্ষে শতকরা ২৫ ভাগ বনায়ন করতে হবে। আমরা যদি সেটি বাস্তবায়ন করি তবে আমরা রাজবাড়ী জেলাসহ সকল জেলার বাসিন্দাদের কমপক্ষে প্রত্যেককে একটি করে গাছ লাগাতে হবে। তবেই আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আমরা একটি সবুজ বাংলাদেশ রেখে যেতে পারব।
তিনি সকল রাজবাড়ীবাসীকে কমপক্ষে একটি করে গাছ লাগানোর অনুরোধ জানান। এছাড়াও উদ্বোধন অনুষ্ঠানের আলোচনা পর্ব শেষে প্রধান অতিথি, সভাপতি ও বিশেষ অতিথিগণ জেলার বিভিন্ন বাগান মালিকদের মধ্য উন্নত জাতের ফলদ গাছের চারা বিতরণ করেন এবং বৃক্ষমেলার বিভিন্ন স্টল ও প্রদর্শনী পরিদর্শন করে।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানের পূর্বে বৃক্ষ রোপন ও বৃক্ষমেলা ২০১৭ উপলক্ষে জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলীর নেতৃত্বে একটি বর্ণাঢ্য র‌্যালী কালেক্টরেট চত্বর প্রদক্ষিণ করে। র‌্যালীতে পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি হিসেবে সহকারী পুলিশ সুপার(ক্রাইম) মোঃ আছাদুজ্জামান, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডঃ এম.এ খালেক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) রেবেকা খান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক নাঈম আস সাকীব, সামাজিক বন বিভাগ ফরিদপুরের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এনামূল হক ভূইয়া এবং জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সৈয়দ সিদ্দিকুর রহমানসহ বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের কর্মকর্তাগণ, এনজিও প্রতিনিধিগণ, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরাসহ সংশ্লি¬ষ্টরা অংশগ্রহণ করেন।