॥আসহাবুল ইয়ামিন রয়েন॥ আসন্ন ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে রাজবাড়ী পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের আয়োজনে গতকাল ২০শে বেলা সাড়ে ১২টায় পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে বাস, ট্রাক, মাইক্রোবাস, থ্রি-হুইলার, লঞ্চ মালিক সমিতি ও জেলা পরিবহন মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
পুলিশ সুপার সালমা বেগম পিপিএম-সেবা’র সভাপতিত্বে সভায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ তারিকুল ইসলাম, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (ক্রাইম) মোঃ আছাদুজ্জামান, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (পাংশা সার্কেল) মোঃ ফজলুল করিম, বিআইডব্লিউটিসি’র দৌলতদিয়া ঘাট কার্যালয়ের ম্যানেজার মোঃ শফিকুল ইসলাম, গোয়ালন্দ থানার অফিসার ইনচার্জ মির্জা আবুল কালাম আজাদ, ডিবি ইন্সপেক্টর মোঃ ওবাইদুর রহমান, ট্রাফিক ইন্সপেক্টর মৃদুল রঞ্জন দাস, জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্র“পের সাধারণ সম্পাদক মুরাদ হাসান, জেলা ট্রাক মলিক সমিতির সভাপতি মোঃ আকতারজ্জামান হাসান ও জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আব্দুর রশিদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এ সময় রাজবাড়ী থানার ওসি মোহাম্মদ আবুল বাশার মিয়া, ডিআইও-১ মোঃ জহিরুল ইসলাম ও পাংশা হাইওয়ে থানার ওসি মোঃ মাহাফুজুর রহমানসহ জেলা পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ এবং বিভিন্ন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে পুলিশ সুপার সালমা বেগম সকলকে ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ঘাট দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার প্রবেশদ্বার হওয়ায় ঈদের সময়ে এই ঘাট দিয়ে হাজার হাজার যাত্রী ও যানবাহন পারাপার হয়। এই বিষয়টি মাথায় রেখে দৌলতদিয়া ঘাট দিয়ে যাতে এই ২১টি জেলার ঈদে ঘরে ফেরা মানুষ কোন রকম ভোগান্তি ছাড়া নির্বিঘেœ পারাপার হতে পারে সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে জেলা পুলিশ এই ঈদকালীন সময়ে ঘাট ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। সেই ব্যবস্থাপনার সাথে জেলার যে সকল পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ জড়িত রয়েছেন তাদেরকে এই সম্পর্কে সচেতনতা করা ও এ ক্ষেত্রে তাদের কোন মতামত আছে কি না সে বিষয়টি আলোচনার করার লক্ষ্যে আজকের এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ঈদের তিন দিন আগে ও পরে কাঁচামাল পণ্যবাহী ট্রাক ছাড়া ঘাটে কোন প্রকার ট্রাক আসতে দেওয়া হবে না। ঈদকে সামনে রেখে অতিরিক্ত রুটের যেসব যাত্রীবাহী বাস ঘাটে আসবে তাদেরকে নির্দিষ্ট জায়গা থেকে যাত্রী ওঠাতে ও নামাতে হবে। কোন থ্রি-হুইলার পদ্মা মোড় অতিক্রম করতে পারবে না। তাদেরকে পদ্মা মোড় থেকে যাত্রী পরিবহন করতে হবে। দৌলতদিয়া ঘাটে পর্যাপ্ত বাথরুমের ব্যবস্থা থাকবে। আমি মনে করি আলো অপরাধকে নিয়ন্ত্রণ করে। আলো থাকলে অপরাধীরা সেই আলো থেকে দূরে থাকে। তাই অপরাধীদের দূরে রাখতে ঘাট এলাকায় পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করতে হবে। কোন অবস্থাতেই ঘাট এলাকায় কোন গাড়ী যত্রতত্র ইউটার্ন করতে পারবে না। যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত কোন ভাড়া আদায় করা যাবে না। যাতে কেউ কোন যাত্রীর কাছ থেকে নির্দিষ্ট ভাড়া ছাড়া অতিরিক্ত ভাড়া আদায় না করতে পারে সেই বিষয়ে জেলা পুলিশ বিশেষ মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা করবে। চুরি, ছিনতাই, মলম পার্টি প্রতিরোধে ঘাট এলাকায় ডিবি পুলিশ বিশেষ অভিযান পরিচালনা করবে। লঞ্চে কোন অবস্থাতেই অতিরিক্ত যাত্রী উঠনো যাবে না। ঘাট এলাকার সার্বিক অবস্থা নিয়ন্ত্রণে জেলা পুলিশের চারটি অস্থায়ী ক্যাম্প সার্বক্ষণিক কাজ করবে। ঘাটে যাতে কোন অবস্থাতেই কোন যানজট বা অনিয়মতান্ত্রিক কোন কিছু না ঘটে সেই বিষয়টি লক্ষ্য রেখে সকলকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, আমরা সকলে সম্মিলিতভাবে যার যার স্থান থেকে আইন মানি তবে আসন্ন ঈদুল ফিতরে ২১টি জেলার ঘরে ফেরা মানুষ নির্বিঘেœ তাদের ঘরে পৌঁছাতে পারবে। আমাদের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে আমরা ঘাট ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সফল হব বলে আমি আশাবাদী। এজন্য তিনি সাধারণ যাত্রী, ঘাট ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ, পরিবহন মালিক ও শ্রমিকসহ সকলের সহযোগিতা কমনা করেন।