॥মাহ্ফুজুর রহমান॥ স্বামীর একতরফা তালাক না মেনে গতকাল ১০ই জুলাই দুপুরে শ্বশুর বাড়ীতে এসে উঠেছে নাসরিন আক্তার(২৪) নামে এক প্রবাসীর স্ত্রী।
রাজবাড়ী সদর উপজেলার শহীদহাবপুর ইউনিয়নের নিমতলা রেলগেট এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটেছে। ওই গৃহবধূ এসে উঠার পর তার শ্বশুর বাড়ীর লোকজন ঘরে তালা দিয়ে পলাতক রয়েছে।
নাসরিন আক্তার জানায়, সে দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার মমিনপুর ইউনিয়নের তেরআনিয়া গ্রামের মৃত আঃ হাকিমের মেয়ে। প্রায় ৩বছর আগে নিমতলা রেলগেট এলাকার মাসুদ খানের ছেলে সৌদি প্রবাসী আশিক খানের সাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পরিচয় ও প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত বছরের (২০১৯) ২৫শে আগস্ট আশিক খান নোটারী পাবলিকের কাছে এফিডেভিটের মাধ্যমে তাকে বিয়ে করে। বিয়ের পর ৩মাসের মতো সে শ্বশুর বাড়ীতে থাকে। এরপর ওই বছরেরই ২০শে নভেম্বর শাশুড়ী মুন্নী বেগম বেড়ানোর কথা বলে তাকে বাবার বাড়ীতে পাঠিয়ে দেয়। এর কয়েকদিন পর আশিক খান সৌদি আরবে চলে যায়। আশিক খান সৌদি আরবে চলে যাওয়ার পরপরই সে বাবার বাড়ীতে থাকা অবস্থায় স্বামীর একতরফা তালাকের একটি কাগজ হাতে পায়। এরপর বিভিন্ন মাধ্যম দিয়ে শ্বশুর বাড়ীর সাথে যোগাযোগ করলে তারা কোনভাবেই তাকে মেনে নিবে না বলে জানিয়ে দেয়। এ অবস্থায় গতকাল শুক্রবার (১০ই জুলাই) দুপুরে সে শ্বশুর বাড়ীতে চলে আসে। আসার পর শ্বশুর বাড়ীর সামনের রাস্তার উপর শ্বশুর মাসুদ খান তাকে বাড়ীর মধ্যে নিয়ে আসে। এরপর শ্বাশুরী মুন্নী বেগম ও তার মেয়ে(ননদ) ঘর তালা দিয়ে চলে যায়। নাসরিন আক্তার আরও বলেন, আমি তো আমার স্বামীকে ভালোবেসে বিয়ে করেছি-তালাক পেতে নয়। আমি এই একতরফা তালাক মানি না। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
স্থানীয় ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর বিশ্বাস বলেন, আশিকের মা মুন্নী বেগম ও তার মেয়ে যুক্তি করে গোপনে একতরফা তালাক প্রদান করিয়ে আশিককে বিদেশে পাঠিয়ে দেয়। বাবার বাড়ীতে মেয়েটির কাছে তালাকের কাগজ পৌঁছালে সে মোবাইলে বিষয়টি আমাকে জানায়। এখন হঠাৎ করেই মেয়েটি চলে এসেছে, কিন্তু আশিকের বাবা-মা কেউ বাড়ীতে নেই। এছাড়াও মিথ্যা তথ্য দিয়ে তাকে তালাকনামা পাঠানো হয়েছে। কারণ তালাকনামায় উল্লেখ রয়েছে, ২০১৫ সালের ২৫শে আগস্ট তারা বিয়ে করে এবং ২০১৯ সালের ১৫শে নভেম্বর আশিক খান মেয়েটিকে তালাক দেয়। কিন্তু তাদের বিয়ের এফিডেভিটে উল্লেখ রয়েছে তারা ২০১৯ সালের ২৫শে আগস্ট তারা বিয়ে করেছে। তাহলে এই মিথ্যা তথ্য দিয়ে একতরফা তালাক দেয়া হয় কীভাবে!
ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর বিশ্বাসের মতোই নাজিম উদ্দিন বেপারী, কুশেই চৌকিদারসহ স্থানীয় অনেকেই আশিক খান ও তার পরিবারের এহেন কর্মে ক্ষোভ প্রকাশ করে এক একটা বিহীত হওয়া দরকার বলে উল্লেখ করেন।
গতকাল শুক্রবার রাতে এ খবর লেখার সময় পর্যন্ত মেয়েটি ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর বিশ্বাসের তত্ত্বাবধানে শ্বশুর বাড়ীর প্রতিবেশী এক বাড়ীতে আশ্রিতা রয়েছে।