শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:৫০ অপরাহ্ন
Logo
সংবাদ শিরোনাম ::
বিশ্বব্যাপী ওমিক্রন সংক্রমণ বৃদ্ধিতে আইসোলেশন মেয়াদ অর্ধেক করার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট ডেল্টা ও বিটার তুলনায় তিন গুণের বেশী পুনঃ সংক্রমন ঘটাতে পারে : গবেষণা প্রতিবেদন জাতিসংঘ ভবনের বাইরে এক বন্দুকধারী গ্রেফতার শান্তি চুক্তির পঞ্চম বার্ষিকী উপলক্ষে কলম্বিয়া সফর জাতিসংঘ মহাসচিব সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানগণের সাক্ষাৎ করোনা ভাইরাসের সংক্রমন বেড়ে যাওয়ায় অস্ট্রিয়ায় লকডাউন করোনা সংক্রমণ বাড়ায় ইউরোপের বিভিন্ন দেশে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ ভারতে নতুন করে ১০ হাজার ৩০২ জন করোনায় আক্রান্ত নভেম্বর মাসজুড়ে করাঞ্চলে কর মেলার সেবা পাবেন করদাতারা ঔপনিবেশিক আমলের ফৌজদারী কার্যবিধি যুগোপযোগী হচ্ছে

রাজবাড়ী জেলায় দায়িত্ব পালনের বর্ষপূর্তি আজ॥জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগমের সফলতা

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২৩ জুন, ২০২০
রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম - ফাইল ফটো।

॥মোঃ মকবুল হোসেন খান॥ দেশের সামগ্রিক প্রশাসন ব্যবস্থাপনায় মাঠ প্রশাসনের ভূমিকা অনস্বীকার্য। আর মাঠ প্রশাসনের কর্ণধার হচ্ছে জেলা প্রশাসন। কার্যতঃ মাঠ পর্যায়ে সরকারের প্রতিভূ হিসেবে সুদীর্ঘ আড়াই শ বছরের অধিককাল থেকেই যে প্রতিষ্ঠানটি জনমানুষের আশ্রয়স্থল, সেবার উৎস, সমাজে শান্তি-শৃংখলা সমুন্নত রাখা ও ন্যায্য আচরণের প্রতীক এবং শিক্ষা-সংস্কৃতি থেকে শুরু করে আর্থ-সামাজিক অগ্রযাত্রা ও নবতর রুচি নির্মাণের শ্রেষ্ঠতম আধার হিসেবে কাজ করে চলেছে তার নাম কালেক্টরেট তথা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়।

মূলতঃ জেলা প্রশাসন জেলার সার্বিক কর্মকান্ড সমন্বয়ের গুরুদায়িত্ব পালন করে থাকে। এ ছাড়াও ভূমি ব্যবস্থাপনা, জেলা ম্যাজিস্ট্রেসি, মোবাইল কোর্ট পরিচালনাসহ বহুমাত্রিক কর্মকান্ডের মাধ্যমে জনজীবনে শান্তি প্রতিষ্ঠা, অধিকার ও সামাজিক ভারসাম্য রক্ষাসহ উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় প্রতিষ্ঠানটি অনবদ্য ঐতিহ্য লালন করে আসছে। আর সে কারণেই জেলা প্রশাসনের অধিকর্তা জেলা প্রশাসককে বলা হয় ‘The Deputy Commissioner is the eye, ear & hand of the Government in the district.

বলাই বাহুল্য, ঐতিহ্যগতভাবেই জেলা প্রশাসন মাঠ পর্যায়ে সরকারের সকল উন্নয়ন কর্মকান্ড বাস্তবায়ন, পর্যবেক্ষণ, সমন্বয় ও তদারকিকরণ এবং অগ্রগতি সম্পর্কে সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলে নিয়মিত প্রতিবেদন প্রেরণ করে থাকে। সেই দিক থেকে জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট দিলসাদ বেগম গত ২০১৯ সালের ২৩শে জুন তারিখে যোগদানের পর হতে রাজবাড়ী জেলায় সরকারের অব্যাহত উন্নয়ন কৌশল ও নীতিসমূহ বাস্তবায়নে সচেষ্ট থেকে সাফল্যের সাথে ১বছর পূর্তি করেছেন।

তিনি রাজবাড়ীর ২২তম জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এবং রাজবাড়ীর মহিলা জেলা প্রশাসকগণের মধ্যে ৫ম সফল জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট।

জেলা প্রশাসক হিসেবে দিলসাদ বেগম রাজবাড়ীতে যোগদানের পর হতেই রাজবাড়ী জেলার মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি চিহ্নগুলোকে স্থায়ীভাবে সংরক্ষণ, জনসাধারণের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতকরণ, গত বর্ষা মৌসুমে দৌলতদিয়া ঘাটকে প্রবল নদী ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা, জনগণের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত তথ্য প্রযুক্তির বিস্তার ঘটানো, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়সহ বিভিন্ন সরকারি অফিসে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিতকরণ, সমগ্র জেলার ভৌত ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন ও সমন্বয় সাধন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ, সরকারি স্বার্থ সংরক্ষণ, সরকারি জমি হতে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা, ভূমি ব্যবস্থাপনা ও রাজস্ব আদায়, মোবাইল কোর্ট ও টাস্কফোর্স পরিচালনা, বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবস উদযাপন, মুজিব বর্ষ উদযাপন, দুর্যোগ পরিস্থিতি মোকাবেলা, করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবেলা ও ত্রাণ তৎপরতা পরিচালনা, স্থানীয় সরকার সম্পর্কিত কার্যক্রম মনিটরিং এবং জেলায় সুষ্ঠু সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় পরিবেশ অক্ষুন্ন রাখতে গত ১বছর রাজবাড়ীতে সততা, নিষ্ঠা, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং একাগ্রতার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন।

উল্লেখ করা যেতে পারে, মাঠ পর্যায়ে জেলা প্রশাসনের পুরোধা হিসেবে সকল জেলা প্রশাসকের Official Power এক হলেও Personal Power এক নয়। সে বিবেচনায় Personal Power এর দিক থেকে অনন্য সাধারণ মেধাসম্পন্ন ও সৃজনশীল উদ্ভাবনীমূলক ব্যক্তিত্ব হিসেবে রাজবাড়ীর বর্তমান জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট দিলসাদ বেগম মহোদয় জেলা প্রশাসনের কর্ণধার হিসেবে তার রুটিন ওয়ার্কের প্রশাসনিক ও দাপ্তরিক দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি জনসেবামূলক ও জনহিতকর কার্যক্রম পরিচালনা করে রাজবাড়ীবাসী তথা সমগ্র দেশবাসীর নজর কাড়তে সক্ষম হয়েছেন।

জেলা প্রশাসক জনাব দিলসাদ বেগম গত ২৩/৬/২০১৯ তারিখে রাজবাড়ী জেলায় যোগদানের পর পরই রাজবাড়ী জেলার মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি চিহ্নগুলোকে স্থায়ীভাবে সংরক্ষণের ব্রত নিয়ে কাজ শুরু করেন। তিনি রাজবাড়ীতে যোগদানের ৭দিনের মাথায় গত ৩০শে জুন-২০১৯ তারিখ রাজবাড়ী জেলা সদর হাসপাতাল পরিদর্শন করে রাজবাড়ীবাসীর সর্বোত্তম চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিদ্যমান শূন্যপদসমূহে চিকিৎসক পদায়ন এবং চাহিদা মোতাবেক প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সরবরাহের আদেশ প্রদানের জন্য ঐদিনই তিনি স¦াস্থ্য সেবা বিভাগের সচিবকে অনুরোধ জানিয়ে পত্র প্রেরণ করেন। গত বর্ষা মৌসুমে রাজবাড়ীতে ব্যাপক নদী ভাঙন শুরু হয়েছিল বিশেষ করে দৌলতদিয়া ফেরি ও লঞ্চঘাটের সবগুলোই নদীর করাল গ্রাসে বিলীন হওয়ার উপক্রম হয়েছিল। সে সময়ে তিনি তাৎক্ষণিক পরিকল্পনা গ্রহণ করে পানি উন্নয়ন বোর্ড, বিআইডব্লিউটিএ এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগসহ গোয়ালন্দ উপজেলা প্রশাসনের সহায়তা ও সমন্বয়ের মাধ্যমে অস্থায়ী প্রতিরক্ষা কাজ বাস্তবায়ন করে ঘাট সচল রেখে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ফেরি রুটে যানবাহন ও যাত্রীসাধারণের পারাপার অব্যাহত রাখতে ব্যাপক সফলতার পরিচয় দেন। অন্যথায় বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল এবং দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের জেলাসমূহের জনসাধারণের সুষ্ঠু যাতায়াত, দৌলতদিয়া-ফরিদপুর-মাগুরা-ঝিনাইদহ-যশোর-খুলনা-মংলা (দিগরাজ) জাতীয় মহাসড়কের (N-7)  প্রবেশদ্বার এবং রাজধানী ঢাকাসহ স্থলবন্দর বেনাপোল ও বন্দরনগরী চট্টগ্রামের সাথে সেতুবন্ধন হিসেবে পরিচিত দৌলতদিয়া ঘাট নদীগর্ভে বিলীন হয়ে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ফেরি রুটে যানবাহন ও যাত্রী সাধারণের পারাপার সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে যেত। এরপর একে একে জেলার বিভিন্ন সেক্টরে বিদ্যমান সমস্যাগুলো তিনি চিহ্নিত করে সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। গত ১বছরে রাজবাড়ীতে তাঁর কর্মকালীন সময়ে সম্পাদিত উল্লেখযোগ্য কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে ঃ-

 গত ১বছরে রাজবাড়ীতে তাঁর কর্মকালীন সময়ে সম্পাদিত উল্লেখযোগ্য কার্যক্রমসমূহ – মাতৃকণ্ঠ।

 

  (১) মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন ঃ (ক) রাজবাড়ীতে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি চিহ্নগুলো স্থায়ীভাবে সংরক্ষণের উদ্যোগ গ্রহণ এবং লোকোশেড বধ্যভূমি স্মৃতি সৌধসহ সকল শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি ফলক ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের সমাধির সৌন্দর্য বর্ধন, (খ) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর জন্মশত বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে জেলা প্রশাসন, জেলা শিল্পকলা একাডেমি, জেলা তথ্য অফিস, জেলা শিক্ষা অফিস, ওজোপাডিকো লিঃ, জেলা ক্রীড়া অফিস, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস, বিআরডিবি, জেলা কিন্ডার গার্টেন এসোসিয়েশন, জেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিস, জেলা কারাগার, জেলা মহিলা বিষয়ক অফিস, জেলা মৎস্য অফিস, কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট বিভাগ, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর, ইসলামিক ফাউন্ডেশনসহ জেলার সকল সরকারি ও বেসরকারি দপ্তরের সাথে সমন¦য় করে এক বছরের কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ। (গ) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর জন্মশতবার্ষিকী ও মুজিববর্ষ ২০২০-কে সামনে রেখে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের দোতলায় ২০৪নং কক্ষে তিনি মুজিববর্ষ কর্নার স্থাপন করেছেন। মুজিববর্ষ কর্নারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন, কর্ম ও আদর্শের উপর বই, ডকুমেন্টারি, বিভিন্ন চিত্রকর্মসহ বিভিন্ন উপকরণের এক সংগ্রহশালা তৈরি করা হয়েছে।

  মুজিববর্ষ কর্নারে যা আছে ঃ – ১। বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র প্রধান ও প্রধানমন্ত্রীর সাথে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর ছবি, ২। আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের সাথে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর ছবি, ৩। আন্তর্জাতিক পুরস্কার প্রাপ্তির ছবি, ৪। পরিবারের সদস্যদের সাথে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর ছবি, ৫। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর জীবনী সম্বলিত ৫১টি বই, ৬। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে লেখা বিভিন্ন লেখকের বই, ৭। মহান মুক্তিযুদ্ধের আলোকচিত্র, ৮। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামের ছবি, ৯। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর বংশ পরিচয় সম্বলিত ব্যানার, ১০। মুজিববর্ষ উপলক্ষে জেলা প্রশাসন আয়োজিত কর্মপরিকল্পনার তথ্যাদি। ১১। যত দূরে যাও পাখি…..দেখা হবে ফের স্বাধীন ঐ আকাশটা শেখ মুজিবের- লেখা ব্যানার, ১২। মুজিববর্ষ কর্নার পরিদর্শন বই, ১৩। বঙ্গবন্ধুর উপর রচিত ১৫০ টি গান এবং তাঁর ১০০টি ভাষণ শোনার জন্য সাউন্ড সিস্টেম, ১৪। মুজিববর্ষ কর্নার বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম থেকে শিক্ষা নেয়ার এক উৎকৃষ্ট মাধ্যম হিসেবে সমাদৃত হয়েছে।

  (ঘ) গত ১৬ই ডিসেম্বর ২০১৯ মহান বিজয় দিবসে তিনি জেলা প্রশাসকের বাংলোয় আড়ম্বরপূর্ণ পরিবেশে যথাযথ মর্যাদায় জেলার বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা প্রদান করেছেন। এতে করে বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ খুব সম্মানিত বোধ করেছেন এবং জেলা প্রশাসনের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে। (ঙ) তিনি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠানাদিতে বক্তৃতাকালে শিক্ষার্থী ও শিশু-কিশোরদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে সত্যিকার মানুষরূপে নিজেদের গড়ে তোলার উপর গুরুত্বারোপ করেন। (চ) রাজবাড়ী জেলা প্রশাসনের জনসেবাধর্মী উদ্ভাবনীমূলক পরিকল্পনায় জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অসুস্থ্যতাকালীন সময়ে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা সহায়তা প্রদানের জন্য জেলার সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ১দিনের বেতন দিয়ে ইতোপূর্বে গঠিত ১০ লক্ষ টাকার এফডিআরের “রাজবাড়ী জেলা মুক্তিযোদ্ধা চিকিৎসা সহায়তা তহবিল’’ হতে প্রতি ৩মাস অন্তর অন্তর লভ্যাংশ হতে অসুস্থ্য মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা সহায়তা প্রদান করেছেন। (ছ) জেলার সকল উপজেলার অধিকাংশ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কলেজে মুক্তিযোদ্ধা কর্ণার স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ।

  (২) রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে চিকিৎসকের শূন্য পদ পূরণ এবং প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সরবরাহ ঃ তিনি রাজবাড়ীতে যোগদানের ৭দিনের মাথায় গত ৩০শে জুন-২০১৯ তারিখ রাজবাড়ী জেলা সদর হাসপাতাল পরিদর্শন করে দেখতে রাজবাড়ীবাসীর সর্বোত্তম চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিদ্যমান শূন্য পদসমূহে চিকিৎসক পদায়ন এবং চাহিদা মোতাবেক প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সরবরাহের আদেশ প্রদানের জন্য ঐদিনই তিনি স¦াস্থ্য সেবা বিভাগের সচিবকে অনুরোধ জানিয়ে পত্র প্রেরণ করেন।

  (৩) রাজবাড়ী শহর রক্ষা বাঁধ ও দৌলতদিয়া ঘাট এলাকার নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধ ঃ তিনি রাজবাড়ী জেলায় যোগদানের পর নদী ভাঙ্গনের কারণে রাজবাড়ী শহর রক্ষা বাঁধ ও দৌলতদিয়া ফেরি ঘাট হুমকির সম্মুখীন ছিল। গত বর্ষা মৌসুমে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বিআইডব্লিউটিএ’র মাধ্যমে তিনি আপদকালীন জরুরী প্রতিরক্ষা কাজ বাস্তবায়ন করে রাজবাড়ী শহর রক্ষা বাঁধ এবং দৌলতদিয়া ঘাট রক্ষার কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। চলতি বর্ষা মৌসুমেও যাতে নদী ভাঙ্গনে রাজবাড়ী শহর রক্ষা বাঁধ এবং দৌলতদিয়া ঘাট ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে বিষয়ে পূর্বাহ্নেই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগসমূহে পত্র প্রেরণ করেছেন।

  (৪) রাজবাড়ী শিশু পার্ক পুনঃ নির্মাণ/সংস্কারকরণ ঃ জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম তাঁর জনসেবাধর্মী উদ্ভাবনী পরিকল্পনায় দীর্ঘদিন যাবত পরিত্যক্ত রাজবাড়ী শিশু পার্ক পুনঃ নির্মাণ/সংস্কার করেছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর জন্মশতবার্ষিকী ও মুজিববর্ষ-২০২০ কে সামনে রেখে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে রাজবাড়ী শিশু পার্ককে আধুনিক মানের শিশু পার্কে উন্নীত করা হয়েছে। রাজবাড়ী শিশু পার্ক সংস্কার করে তিনি ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছেন।

  (৫) বিদ্যুৎ সেক্টরে উন্নয়ন ঃ তিনি অব্যাহত যোগাযোগের মাধ্যমে বিদ্যুতের সমস্যা স্থায়ীভাবে দুরীকরণে শহরের উপকন্ঠে ১৩২/৩৩ কেভি গ্রীড সাব-স্টেশন নির্মাণ কাজ নিয়মিত তদারকি করছেন।

  (৬) যার জমি আছে ঘর নেই, তার নিজ জমিতে গৃহ নির্মাণ প্রকল্প ঃ জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগমের সার্বিক তত্ত্বাবধানে “যার জমি আছে ঘর নেই, তার নিজ জমিতে গৃহ নির্মাণ” কর্মসূচির আওতায় এ জেলায় ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে রাজবাড়ী সদর উপজেলায় ৪৬টি,  বালিয়াকান্দি উপজেলায় ২১টি এবং পাংশা উপজেলায় ১টি মোট ৬৮টি গৃহ নির্মাণের কাজ চলমান আছে। ভূমিহীন ও ছিন্নমূল মানুষের পুনর্বাসনে পাংশা উপজেলায় ০.৪২ একর জমিতে কুঠিমালিয়াট আশ্রয়ণ প্রকল্প নির্মাণের জন্য তিনি গত ২২/৮/২০১৯ তারিখে প্রস্তাব প্রেরণ করেছেন। এ ছাড়া বর্তমানে পাংশা উপজেলায় মল্লিকপাড়া গুচ্ছগ্রাম, গোয়ালন্দ উপজেলায় বেতকা গুচ্ছগ্রাম, বালিয়াকান্দি উপজেলায় সোনাপুর চন্দনা গুচ্ছগ্রামের নির্মাণ কাজ চলছে। মুজিববর্ষ ২০২০ উপলক্ষে আশ্রয়ণ প্রকল্প, যার জমি আছে ঘর নেই-তার নিজ জমিতে গৃহ নির্মাণ এবং কৃষি খাস জমি বন্দোবস্তের মাধ্যমে জেলার মোট ৪০০টি পরিবারকে পুনর্বাসনের টার্গেট নির্ধারণ করা হয়েছে।

(৭) মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান পরিচালনায় সাফল্য ঃ জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগমের তত্ত্বাবধানে গত ০৯/১০/২০১৯ হতে ৩০/১০/২০১৯ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান ও মোবাইল কোর্ট সফলভাবে পরিচালিত হয়েছে। এ অভিযানে জেলা ম্যাজিস্ট্রেসীর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত মোবাইল কোর্টের সংখ্যা-৭২টি, পরিচালিত অভিযানের সংখ্যা-২৩৮টি, অভিযান ও মোবাইল কোর্ট সফলভাবে পরিচালনার কারণে- ইলিশ আটক হয় ৩.১৩ মেঃ টন, আটককৃত জাল ৩৮.৭৬ লক্ষ মিটার, (গ) আটককৃত জালের মূল্য ঃ ৭৫৭.২০০ লক্ষ টাকা, মামলার সংখ্যা-২১০টি, আদায়কৃত জরিমানা ৩.৮৯ লক্ষ টাকা ও কারাদন্ড হয় ৪১০ জনের।

জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট দিলসাদ বেগমের সার্বিক তত্ত্বাবধানে পরিচালিত অভিযান ও মোবাইল কোর্টের কারণে মা ইলিশ ডিম ছাড়ার সুযোগ পেয়েছে এবং ইলিশ উৎপাদনে সফল ভূমিকা রেখেছে। এ অভিযান ও মোবাইল কোর্ট সফলভাবে পরিচালনার কারণে আগামী মৌসুমে বেশী ইলিশ উৎপাদনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে তিনি কারাগার পরিদর্শনকালে মোবাইল কোর্টের আদেশে সাজাপ্রাপ্ত জেলেদের ভবিষ্যতে মা ইলিশের প্রজনন মৌসুমে ইলিশ আহরণ থেকে বিরত থাকার এবং এর সুফল সম্পর্কে পরামর্শ দেয়ায় জেলে সম্প্রদায়ের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে।

(৮) Rajbari Sustainable Development Goals Club  গঠন ঃ টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (SDG) বাস্তবায়নে রাজবাড়ী জেলা প্রশাসন বদ্ধপরিকর। জেলা প্রশাসক জনাব দিলসাদ বেগমের পরিকল্পনায় গঠিত হয়েছে Rajbari Sustainable Development Goals Club. তিনি টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট ২০৩০ এর সফল বাস্তবায়নে জেলার সকল সরকারী অফিস, আধা-সরকারি অফিস,স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন এনজিও, সামাজিক-সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে একীভূত করে এসডিজি অর্জনের লক্ষ্যে কাজ করতে এ ক্লাব গঠন করেছেন।

SDG Club এর উদ্দেশ্য হচ্ছে- রাজবাড়ী জেলাতে তরুণ সমাজসহ সকলকে গৃহীত কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করা, যাতে ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি অর্জন ও আমাদের দেশকে ২০৪১ সালে উন্নত দেশে পরিণত করা যায়। এ ক্লাবের সার্বিক কার্যক্রম অবহিত করতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে Rajbari Sustainable Development Goals Club নামে গ্রুপ পেইজ খোলা হয়েছে।

(৯) সড়ক ও জনপথ বিভাগের কাজে সমন¦য় সাধন ঃ জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগমের সার্বিক তত্ত্বাবধানে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর কর্তৃক ৪২৪২০.৯২ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ৪টি প্যাকেজে রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণের বাস্তবায়ন কাজ নানা সীমাবদ্ধতার মাঝেও পরিচালনা করা হচ্ছে। তিনি জেলা উন্নয়ন সমন¦য় কমিটির সভায় নিয়মিত পর্যালোচনা এবং সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সাথে নিয়মিত বৈঠকের মাধ্যমে ৪টি প্যাকেজে রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়ক নির্মাণ কাজ তদারকি অব্যাহত রেখেছেন। ৪টি প্যাকেজের গড় অগ্রগতি ৬৬.০৫%।

  (১০) স¦চ্ছতার সাথে জনবল নিয়োগ ঃ জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম অত্যন্ত স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মধ্য দিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের বিভিন্ন শাখার জন্য ৩জন স্টেনোগ্রাফার-কাম-কম্পিউটার অপারেটর, ২জন সাঁট মুদ্রাক্ষরিক-কাম-কম্পিউটার অপারেটর, ১৬জন অফিস সহকারী-কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক, ৩জন সার্টিফিকেট সহকারী এবং ১জন লাইব্রেরি সহকারী নিয়োগ করেছেন।

  (১১) ভূমি ব্যবস্থাপনা বিষয়ক প্রশিক্ষণ আয়োজন ঃ দক্ষতা ও সততার সাথে তাঁর সময়কালে ভূমি সেবা বিষয়ক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে একাধিকবার ভূমি ব্যবস্থাপনা ও সেবায় ইনফরমেশন টেকনোলজি প্রয়োগ শীর্ষক প্রশিক্ষণ পরিচালিত হয়েছে। এ ছাড়াও জেলার ৫টি উপজেলায় ভূমি ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য একাধিকবার ই-মিউটেশনসহ ভূমি ব্যবস্থাপনা বিষয়ক অন্যান্য প্রশিক্ষণ কর্মসূচি একাধিকবার পরিচালিত হয়েছে।

  (১২) পৌর/ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মাণ ও মেরামত ঃ গত ১বছরে রাজবাড়ী জেলার সদর উপজেলায় খানখানাপুর ও মূলঘর ইউনিয়নে ২টি, পাংশা উপজেলায় মৌরাট ও যশাই ইউনিয়নে ২টি, বালিয়াকান্দি উপজেলায় ইসলামপুর ও জামালপুর ইউনিয়নে ২টি, গোয়ালন্দ উপজেলায় উজানচর ইউনিয়নে ১টি এবং কালুখালী উপজেলায় মাজবাড়ী ও মদাপুর ইউনিয়নে ২টি ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মাণ করা হয়েছে। উক্ত ৯টি ইউনিয়ন ভূমি অফিস আগামী ১৫ই জুলাই ২০২০ তারিখের মধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শুভ উদ্বোধনের সম্ভাবনা রয়েছে।

  (১৩) বন্যা ২০১৯ এর ত্রাণ তৎপরতা ঃ রাজবাড়ী জেলায় গত ২০১৯ সালে বন্যা, নদীভাঙ্গন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে তাঁর সার্বক্ষণিক তদারকিতে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে ৩৫০ মেট্রিক টন জিআর চাল, ৪,৫০,০০০ টাকা জিআর ক্যাশ, ৬০০ বান্ডিল ঢেউটিন এবং ২,০০০ প্যাকেট শুকনা খাবার ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে অত্যন্ত স¦চ্ছতার সাথে বিতরণ করা হয়েছে।

  (১৪) ডেঙ্গু পরিস্থিতি-২০১৯ ঃ মশার বিস্তার রোধ ও ডেঙ্গু প্রতিরোধের জন্য গত ২০১৯ সালে ইউনিয়ন পর্যায় থেকে শুরু করে জেলা পর্যন্ত সর্বত্র পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান ও মশক নিধনের জন্য মশা মারার ওষুধ প্রয়োগ এবং সকল ড্রেন, নালা, খাল, জলাশয়, মজা পুকুরের তালিকা করে পর্যায়ক্রমে কচুরিপানা অপসারণ ও পরিস্কারকরণ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধমীয় উপাসনালয়, হাটবাজার ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সচেতনতামূলক সমাবেশ করা হয়। ডেঙ্গু রোগে আক্রান্তদের যথাযথ চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখা হয়।

  (১৫) শীতার্তদের মধ্যে কম্বল বিতরণ ঃ ২০১৯ সালে তিনি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হতে বরাদ্দ প্রাপ্ত ২০,৭০০টি কম্বল এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় হতে বরাদ্দ প্রাপ্ত ৬,৫০০ টি কম্বল অর্থাৎ সর্বমোট ২৭,২০০ টি কম্বল শীতার্ত ও দরিদ্র জনগণের মাঝে বিতরণ করেন।

  (১৬) ভূমি অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্ত ভূমি মালিকদের ক্ষতিপুরণের চেক প্রদান ঃ উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের জন্য ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে স¦চ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ক্ষতিগ্রস্ত মালিকদের জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম কর্তৃক নিজ হাতেই এলএ চেক প্রদান করেন।

  (১৭) মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম পরিচালনা ঃ রাজবাড়ী জেলায় বর্তমানে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৮৪ টি এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ২৬৬টি মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম সফলভাবে পরিচালিত হচ্ছে। যেগুলোতে সরকারি অর্থায়নের পাশাপাশি স্থানীয়ভাবে কয়েকটিতে জেলা প্রশাসক জনাব দিলসাদ বেগম প্রজেক্টরসহ অন্যান্য সরঞ্জাম সরবরাহ করেছেন।

  (১৮) কৃষি পুনর্বাসন কর্মসূচি ও সার ব্যবস্থাপনা ঃ জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জেলা কৃষি পুনর্বাসন কমিটির সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক কৃষকদের প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে বরাদ্দকৃত ১,৭৬,০৯,৪৪০ টাকা মূল্যের ৩৩৭ মেট্রিক টন সার ও ৭৪ মেট্রিক টন বীজ ১২,৯৪৪ জন কৃষকের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া তিনি(জেলা প্রশাসক) জেলা সার ও বীজ মনিটরিং কমিটির সভাপতি হিসেবে প্রতি মাসেই সারের বরাদ্দ প্রদান ও এগুলোর সুষ্ঠু বিতরণ তদারকি করছেন।

  (১৯) বাজার দর মনিটরিং ঃ বাজার দর নিয়ন্ত্রণ ও সহনীয় পর্যায়ে রাখতে জেলা প্রশাসক নিজে জেলা সদরসহ বিভিন্ন উপজেলার একাধিক বাজার মনিটরিং করেছেন এবং ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের সাথে একাধিক সভায় মিলিত হয়ে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির বাজার দর সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছেন।

  (২০) বিভিন্ন দপ্তরের অবকাঠামো নির্মাণ কাজে সমন¦য় সাধন ঃ জেলা প্রশাসকের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ও সুষ্ঠু সমন¦য়ের মাধ্যমে রাজবাড়ী সার্কিট হাউজের উর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ, মডেল মসজিদ নির্মাণ কাজসহ জেলায় উল্লেখযোগ্য দপ্তর সমূহের ভবন নির্মাণ কাজ তিনি তদারকি করেছেন ।

  (২১) জেলা কারাগারকে একটি আধুনিক মননশীল কারাগারে রূপান্তর উদ্যোগ গ্রহণ ঃ জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট দিলসাদ বেগম জেলা কারাগার নিয়মিত পরিদর্শন এবং কারাগারের কর্মকর্তা/কর্মচারী, সরকারি/বেসরকারি ভিজিটরদের সাথে ভিজিটর বোর্ডের সভায় মতবিনিময় করে কারাবন্দীদের জীবনমান উন্নয়ন, মাদকের অপব্যবহার রোধ, সাক্ষরতা কার্যক্রম পরিচালনা, ধর্মীয় শিক্ষা, কিশোরবন্দীদের টেকনিক্যাল প্রশিক্ষণ প্রদান, সমাজসেবা বিভাগের মাধ্যমে মহিলা কারাবন্দীদের সাথে থাকা শিশুদের খেলাধুলার উপকরণ সরবরাহ, মহিলা কারাবন্দীদের সাথে থাকা শিশুদের জন্য মহিলা ওয়ার্ডের ২য় তলায় ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপন, কারাবন্দীদের বিনোদন ও খেলাধুলার উপকরণ সরবরাহ, কারাগারে প্রয়োজনীয় জনবলের ব্যবস্থা করে কারাগারকে একটি আধুনিক মননশীল কারাগারে রূপান্তরের উদ্যোগ গ্রহণ করেন।

  (২২) রাজবাড়ী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের আধুনিকায়নকরণ কাজ ঃ গত ১বছরে রাজবাড়ী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়কে আধুনিক ও জনবান্ধব করতে তিনি  একাধিক উন্নয়নমূলক কাজ সম্পন্ন করেছেন।

  (২৩) ডাঃ আবুল হোসেন ট্রাস্ট পরিচালনা ঃ জেলা প্রশাসকের সরাসরি তত্ত্বাবধানে রাজবাড়ী শহরের উপকণ্ঠে ভবদিয়ায় ডাঃ আবুল হোসেন ট্রাস্টের অধীনে মিউজিয়াম, এতিমখানা পরিচালিত হচ্ছে। উক্ত ট্রাস্টের অধীন ৮৮ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা মূল্যের জমি এবং ১ কোটি ২৭ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা মূল্যের স্থাপনা রয়েছে যার বর্তমান বাজার মূল্য কয়েকগুণ বেশী।

  (২৪) জেলা প্রশাসকের অনুকূলে বরাদ্দকৃত টিআর প্রকল্পের খাদ্যশস্য জনকল্যাণমূলক প্রকল্প বাস্তবায়ন ঃ জেলা প্রশাসকের অনুকূলে বরাদ্দকৃত টিআর প্রকল্পের খাদ্যশস্য দ্বারা ১বছরে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক জনকল্যাণমূলক প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়।

  (২৫) জেলা ব্রান্ডিং বুক প্রকাশনা ঃ এক সময়ের খরস্রোতা পদ্মা নদী বিধৌত ইতিহাস-ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ জেলা রাজবাড়ী। জেলা প্রশাসনের জনসেবাধর্মী উদ্ভাবনীমূলক পরিকল্পনায় জেলা ব্র্যান্ডিং কর্মসূচির আওতায় পদ্মা নদীর কোলে গড়ে ওঠা এ জেলা পরিচিতি পেয়েছে ‘পদ্মা কন্যা রাজবাড়ী’ হিসেবে। ফলে এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে এ জেলার বিশেষ ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, ইতিহাস, ঐতিহ্য, প্রত্নতাত্তিক নিদর্শন ও সংস্কৃতিকে বিবেচনায় রেখে এ জেলার স্বাতন্ত্র্যকে বিকশিত করার লক্ষ্যে কার্যকরভাবে জেলা ব্রান্ডিংয়ের মাধ্যমে রাজবাড়ী জেলাকে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে তুলে ধরার সুন্দর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে রাজবাড়ী জেলার স্বকীয়তা সংরক্ষণ ও পরিচিতি বৃদ্ধির পাশাপাশি এর অর্থনৈতিক সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো যাবে, যা এ অঞ্চলের ও দেশীয় সামগ্রিক অর্থনীতিতে  ব্যাপক ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

  (২৬) আমার বাড়ি আমার খামার এবং তথ্য আপা প্রকল্পের উঠান বৈঠকে অংশগ্রহণ ঃ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এঁর ১০টি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রাধিকারমূলক কাজের মধ্যে আমার বাড়ি আমার খামার প্রকল্পের কার্যক্রম সুষ্ঠু তদারকি ও সমন্বয়ের মাধ্যমে রাজবাড়ী জেলায় পরিচালিত সমিতি ও পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক এবং তথ্য আপা প্রকল্পের উপকারভোগী সদস্যকে নিয়ে তিনি নিয়মিত উঠান বৈঠকে মিলিত হয়ে তাদের স্বাবলম্বী হতে পরামর্শ প্রদান করছেন।

  (২৭) রেকর্ড রুমকে ডিজিটাল রেকর্ড রুমে রূপান্তর ঃ ঘরে বসেই যাতে জনসাধারণ অনলাইনে খতিয়ান পর্চা সংগ্রহ করতে পারে তা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে রেকর্ড রুমকে ডিজিটাল রেকর্ড রুমে রূপান্তর করা হয়েছে। বর্তমানে খতিয়ান এন্ট্রি ও আর্কাইভকরণের কাজ চলমান রয়েছে।  ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভূমি জরিপ ও রেকর্ড প্রণয়ন এবং সংরক্ষণ প্রকল্পের আওতায় এ পর্যন্ত ৮১৯ টি খতিয়ান এন্ট্রি ও আর্কাইভ সম্পন্ন করা হয়েছে।

  (২৮) বিভিন্ন জাতীয়/আন্তর্জাতিক দিবস, উৎসব উদযাপন এবং ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদিতে অংশগ্রহণ ও আর্থিক সহায়তা প্রদান ঃ বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবসসমূহ উদযাপন ও পালনসহ রাজবাড়ী জেলা থেকে জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাস প্রতিরোধের লক্ষ্যে সভা/সেমিনার, ইমাম সম্মেলন এবং মসজিদের পবিত্রতা রক্ষায় ওলামায়ে মাশায়েখদের ভূমিকা শীর্ষক একাধিক সেমিনার অনুষ্ঠান ও জেলার একাধিক মাদ্রাসা বিভিন্ন তারিখে পরিদর্শন করেছেন। তিনি যাকাত বোর্ডের মাধ্যমে আদায়কৃত যাকাতের অর্থ দুঃস্থ ও গরীবদের মাঝে বিতরণ করে যাকাতের অর্থের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করেছেন। অন্যান্য ধর্মাবলমবীদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানেও তাঁর সরব উপস্থিতি ছিল। বিশেষ করে শুভ জন্মাষ্টমীতে হিন্দু সম্প্রদায়ের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত র‌্যালীতে অংশগ্রহণ, জেলার প্রাচীন মন্দিরসমূহ পরিদর্শন করে হিন্দু ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সাথে কুশলাদি বিনিময় করেছেন। তিনি মন্দিরভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রমসহ হিন্দু কল্যাণ ট্রাস্টের একাধিক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করেছেন। রাজবাড়ী জেলার বিভিন্ন দুর্গাপূজা মন্দির সরেজমিনে পরিদর্শন করে হিন্দু সম্প্রদায়ের বৃহৎ ধর্মীয় অনুষ্ঠানের খোঁজখবর নিয়েছেন। রাজবাড়ী জেলার খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের শুভ বড়দিন অনুষ্ঠানে কেক কেটে তাঁদের উৎসবের সাথে নিজেকে সামিল করেছেন।

  (২৯) নারী ও শিশুর জীবনমান উন্নয়ন ঃ রাজবাড়ী জেলার নারী ও শিশুর জীবনমান উন্নয়নে জেলা প্রশাসকের গৃহিত পদক্ষেপসমূহ সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছে। তিনি শিশু একাডেমি, মহিলা বিষয়ক অফিসসহ বিভিন্ন নারী সংগঠনের কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেছেন।

  (৩০) বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ ঃ রাজবাড়ী জেলায় বাল্য বিবাহ প্রতিরোধে নিয়মিত জেলা ও উপজেলা বাল্যবিবাহ নিরোধ সংক্রান্ত কমিটির সভা অনুষ্ঠানসহ সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি ও জনমত গঠনের মধ্য দিয়ে একটি সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা হয়েছে। নিয়মিত মোবাইল কোর্ট ও অভিযান পরিচালনা করে বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ এবং জনসচেতনতামূলক সভা ও সেমিনার করা হয়েছে।

  (৩১) আইন-শৃঙ্খলা সমুন্নত রাখা ঃ  সরকার কর্তৃক গঠিত জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটি এবং জেলা সন্ত্রাস ও নাশকতা প্রতিরোধ কমিটির সভা অনুষ্ঠান, জেলার আইন-শৃংখলা রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত পুলিশ, র‌্যাব, আনসার/ভিডিপি বিভাগের সাথে সুষ্ঠু সমন্বয় সাধন, নিয়মিত থানাসমূহ পরিদর্শন, গ্রাম পুলিশ ও আনসার/ভিডিপি সদস্যদের বিভিন্ন সভা/সমাবেশে যোগদান করে প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান এবং প্রয়োজনীয় সমন্বয়ের মাধ্যমে জেলার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সমুন্নত রেখেছেন। জেলার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সহনশীল ও সন্তোষজনক পর্যায়ে রাখতে দক্ষতা ও প্রয়োগসিদ্ধভাবে মোবাইল কোর্ট ও টাস্কফোর্সের মাধ্যমে ইভটিজিং প্রতিরোধ, মাদক দ্রব্যের অপব্যবহার রোধ, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ, খাদ্যদ্রব্যে ফরমালিনের ব্যবহার প্রতিরোধে জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট দিলসাদ বেগম প্রতিদিন মোবাইল কোর্টের কার্যক্রম পরিবীক্ষণ করে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করেছেন।

  (৩২) দৌলতদিয়া ঘাট ব্যবস্থাপনা ঃ দৌলতদিয়া প্রসংগে বলতে গেলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রবেশদ্বার হিসেবে খ্যাত দৌলতদিয়া ফেরি ঘাট ব্যবস্থাপনায় জেলা প্রশাসকের অবদান উল্লেখ করার মতো। কার্যতঃ এ ফেরি ঘাট দিয়ে ভিভিআইপি/ভিআইপিগণের পারাপারের সময় প্রয়োজনীয় প্রটোকল প্রদান, আটরশি ও চন্দ্রপাড়ায় ওরশ শরীফ এবং দুই ঈদের সময় অতিরিক্ত যানবাহন পারাপারের সময় যানজট নিয়ন্ত্রণ ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় জেলা প্রশাসক স্বয়ং কখনও সরেজমিনে উপস্থিত হয়ে কখনও এডিসি পর্যায়ের প্রতিনিধি পাঠিয়ে পরিস্থিতি মোকাবেলা করেছেন। দৌলতদিয়া ঘাট ব্যবস্থাপনায় বিদ্যমান অনিয়ম দুরীকরণে স্থানীয় প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদানসহ ঘাট এলাকায় অপরাধ দমনে নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে কার্যকর ভূমিকা রেখেছেন।

  (৩৩) সার্কিট হাউজের সামনের থিম পার্কের সংস্কার ও নবরূপে সজ্জিতকরণ ঃ জেলা প্রশাসনের উদ্ভাবনীমূলক পরিকল্পনায় সার্কিট হাউজের সামনের পরিত্যক্ত জায়গায় শিশুদের বিনোদনের জন্য নির্মিত থিক পার্কটি জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করে সংস্কার ও নবরূপে সজ্জিত করেছেন।

  (৩৪) ডিজিটাল কার্যক্রম সম্প্রসারণ ঃ ডিজিটাল কার্যক্রম সম্প্রসারণ এবং ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের কার্যক্রম নিয়মিত মনিটরিং এর  মাধ্যমে বিদেশে গমনেচ্ছুদের নিবন্ধন কার্যক্রম, উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়সহ জেলার সকল অফিসকে ই-নথি ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমের আওতায় আনার লক্ষ্যে উক্ত অফিসের কর্মকর্তা/কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন, ওয়েব পোর্টাল রিফ্রেসার্স ও ইউজার সিকিউরিটি প্রশিক্ষণ প্রদান করে সার্বিকভাবে ডিজিটাল কার্যক্রমের সম্প্রসারণ করতে সফল হয়েছেন। জেলা প্রশাসনের কাজের গতি বৃদ্ধির লক্ষ্যে বর্তমানে ই-ফাইলিং কার্যক্রম বাস্তবাায়িত হচ্ছে।

এছাড়া সরকারী অফিসসমূহের মধ্যে ই-মেইলের মাধ্যমে পত্র যোগাযোগ স্থাপন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলা, বিসিসি কর্তৃক বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রতিষ্ঠিত কম্পিউটার ল্যাবরেটরীতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনাসহ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সম্প্রসারণে জেলা প্রশাসক উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছেন।

  (৩৫) করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবেলা ও ত্রাণ তৎপরতা পরিচালনা ঃ রাজবাড়ীতে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধ এবং করোনা পরিস্থিতির কারণে সৃষ্ট দুর্যোগে অসহায় ও দুঃস্থদের মধ্যে মানবিক সহায়তা কর্মসূচির ত্রাণ/খাদ্য সামগ্রী বিতরণ কার্যক্রম তদারকিতে নিজেকে সার্বক্ষণিক নিয়োজিত রেখেছেন জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম। লকডাউন ও সরকারি সাধারণ ছুটিকালীন তিনি প্রতিদিন অফিস করেছেন এবং চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম ও ত্রাণ তৎপরতা তদারকিতে তিনি একাধিবার সরেজমিনে গিয়ে কার্যক্রম তদারকি করেছেন।

উল্লেখ করা যেতে পারে, গতকাল ২২শে জুন-২০২০ তারিখের তথ্য অনুযায়ী রাজবাড়ীতে COVID-19 আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২২১-এ উন্নীত হয়েছে। তন্মধ্যে চিকিৎসা শেষে আরোগ্য লাভ করেছেন ৭৮জন। বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি ৪৫ জন এবং নিজ বাড়িতে চিকিৎসাধীন ১০০ জন। রাজবাড়ীতে শনাক্তকৃত ১জন ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় এবং ১জন বালিয়াকান্দিতে মৃত্যুবরণ করেছেন। COVID-19 এর উপসর্গ নিয়ে আইসোলেশনে থাকা ৫৩ জনের মধ্যে ছাড়পত্র প্রাপ্ত ৪৯ জন এবং বর্তমানে আছেন ৪জন। মোট হোম কোয়ারেন্টাইন ২৫২৮ জনের মধ্যে ছাড়প্রাপ্ত ২২২১ জন এবং বর্তমানে আছেন ৩০৭ জন। প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের ৭জনই ছাড়প্রাপ্ত। বর্তমানে COVID-19 আক্রান্তের হার ঊর্ধ্বমুখী।

রাজবাড়ীতে ডেডিকেটেড হাসপাতাল হিসেবে রাজবাড়ী সদর হাসপাতাল (বেড-২০) এবং কালুখালী উপজেলা স¦াস্থ্য কমপ্লেক্স(বেড- ৫০) নির্ধারিত। আইসোলেশন বেড ৩০টি। জেলায় মোট ডাক্তার ৭৬জন এবং নার্স ১৭৯ জন। জরুরী ঔষধের মজুদও পর্যাপ্ত। এ পর্যন্ত পিপিই ও মাস্ক বিতরণ যথাক্রমে ১৩,৩৮৭ ও ১৩,৫২৪টি। মজুদ পিপিই ১৫২৯ এবং মাস্ক ১,৬২৪টি। জরুরী চিকিৎসা সেবায় ১টি এ্যাম্বুলেন্স, ২টি গাড়ী এবং ১টি মাইক্রোবাস ব্যবহৃত হচ্ছে।

সরকারি সহায়তা হিসেবে মোট বরাদ্দ প্রাপ্তি জিআর চাল ২৩০৭ মেঃ টন, জিআর ক্যাশ ১,২৩,৪৫,০০০/- টাকা এবং শিশু খাদ্য ক্রয় বাবদ ৩৪,০০,০০০/- টাকা। জেলা থেকে উপ-বরাদ্দ প্রদান জিআর চাল ২২৮৪.৪২ মেঃ টন, জিআর ক্যাশ ১,২৩,৪৫,০০০/- টাকা এবং শিশু খাদ্য ক্রয় বাবদ ২৯,৯৬,৬৪০/- টাকা (৯,১৩৮টি পরিবারের শিশুদের জন্য)। উপ-বরাদ্দের মধ্যে এ পর্যন্ত বিতরণ জিআর চাল ১৭৩৫.৭৫০ মেঃটন, উপকারভোগী পরিবার ১,৬৭,৭০৩ টি, লোকসংখ্যা ৬,৬১,৩৯২ জন। জিআর ক্যাশের ৯৩,৩৫,৪৫০/- টাকায় আলু, ডাল ও শাকসব্জি বিতরণ, উপকারভোগী পরিবার ১,৪১,১৭৬টি এবং লোকসংখ্যা ৫,৬১,৩৮৪জন। শিশু খাদ্য বিতরণ ২০,৪২,৮৫৩/- টাকার। বর্তমানে জিআর চাল ৫৪৮.৬৭০ মেঃ টন, জিআর (ক্যাশ) ৩০,০৯,৫৫০/- টাকায় আলু, ডাল ও শাকসব্জি এবং ৯,৫৩,৭৮৭/- টাকায় শিশু খাদ্য বিতরণের কাজ অব্যাহত আছে।

করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় জেলা পুলিশ, সেনাবাহিনী এবং আনসারসহ সকলে সম্মিলিতভাবে কাজ করছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও সরকারি নির্দেশনা প্রতিপালনে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রতিদিনের ন্যায় রাজবাড়ী জেলা ম্যাজিস্ট্রেসির আওতাধীন বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করছেন। গত ২০শে মার্চ হতে এ পর্যন্ত ১,২১৩টি মামলায় অর্থদন্ডের আদায়কৃত ২৩,০৮,৭৪৫/- টাকা সরকারি কোষাগারে জমা প্রদান করা হয়েছে।

রাজবাড়ীর সুযোগ্য জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম তাঁর রুটিন দায়িত্ব এবং উপরে বর্ণিত জনহিতকর কার্যক্রম ছাড়াও জেলার বিভিন্ন সেক্টরে জনসেবাধর্মী একাধিক কার্যক্রম বাস্তবাায়ন করেছেন। কার্যতঃ তাঁর সৃজনশীল উদ্ভাবনীমূলক চিন্তা গভীরভাবে মানবিক ও অধিকার পরিপ্রেক্ষিত নির্ভর। কর্মক্ষেত্রেও তাঁর সততার সুনাম রয়েছে।

জেলা প্রশাসক নামের ইংরেজি প্রতিটি বর্ণমালার মধ্যেও সুন্দর অন্তর্নিহিত অর্থ লুকিয়ে আছে। উওখঝঅউ নামের ইংরেজি প্রতিটি বর্ণমালার অন্তর্নিহিত অর্থ যদি বিশ্লেষণ করেন, তাহলে দাঁড়ায় D=Determined, I=Impressive, L=Loyal, S=Submissive, A=Amazing Ges D=Dutiful. তাঁর ইংরেজি নামের প্রতিটি বর্ণমালার অন্তর্নিহিত অর্থের সাথে বাস্তবে সম্পাদিত কাজের চমৎকার মিল দেখতে পাওয়া যায়। তাঁর ব্যতিক্রমধর্মী সৃজনশীল উদ্ভাবনীমূলক কর্মকান্ড রাজবাড়ীর উন্নয়নে মাইলফলক হয়ে থাকবে বলে অভিজ্ঞ মহল মনে করেন।

লেখক : মোঃ মকবুল হোসেন খান, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, রাজবাড়ী ও সাধারণ সম্পাদক, রাজবাড়ী কালেক্টরেট ক্লাব।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর
error: আপনি নিউজ চুরি করছেন, চুরি করতে পারবেন না !!!!!!