॥আশিকুর রহমান॥ প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাস মহামারি মোকাবেলায় কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করছেন দেশের চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, প্রশাসন, পুলিশ ও সাংবাদিকসহ সরকারী-বেসরকারী বিভিন্ন সেক্টরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। নিশ্চিত মৃত্যু ঝুঁকি জেনেও এবার এই যুদ্ধে অংশ নিলেন রাজবাড়ী জেলার বেসরকারী মেডিকেল টেকনোলজিস্টরা।
গত ১১ই এপ্রিল রাজবাড়ী প্রাইভেট মেডিকেল টেকনোলজিস্ট অ্যাসোসিয়েশন ও বঙ্গবন্ধু মেডিকেল টেকনোলজিস্ট পরিষদের সদস্যরা কোভিড-১৯ মোকাবেলার জন্য স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করার অনুমতি চেয়ে জেলা সিভিল সার্জন বরাবর একটি আবেদন করেন। সিভিল সার্জন আবেদনটি আমলে নিয়ে পরদিন ১২ই এপ্রিল তাদের স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করার অনুমতি দেন।
রাজবাড়ী প্রাইভেট মেডিকেল টেকনোলজিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. মনিরুজ্জামান জামাল বলেন, ‘কোভিড-১৯ রোগী সনাক্তে সারাদেশে যে মেডিকেল টিম কাজ করছে তাতে রোগীর স্যাম্পল কালেকশনসহ গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো করছেন মেডিকেল টেকনোলজিস্টরা। কিন্তু বিগত ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সরকারীভাবে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট নিয়োগ বন্ধ থাকায় সারাদেশে এই পদে লোকবল সংকট রয়েছে। তাই বৈশ্বিক মহামারি কোভিড-১৯ মোকাবেলার জন্য জাতীয় স্বার্থে আমরা রাজবাড়ী জেলার দু’টি সংগঠনের ১৩জন সদস্য জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করতে গত ১১ই এপ্রিল জেলা সিভিল সার্জন বরাবর আবেদন করি। সিভিল সার্জন মহোদয় পরদিন ১২ই এপ্রিল তিনটি শর্ত সাপেক্ষে আমাদের স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করার অনুমতি দেন।
শর্তগুলো হলো ঃ কাজের বিনিময়ে আমরা কোন আর্থিক সুবিধা দাবি করতে পারবোনা, সরকারী এস.এম.টি এবং এম.টি (ল্যাবঃ) এর সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করতে হবে এবং কাজ করার সময় কেউ কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হলে তার দায়ভার স্বাস্থ্য বিভাগ নিবে না। তারপরেও আমরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হাসিমুখে আমদের কাজ শুরু করেছি। কারণ দেশের এই ক্রান্তিকালে আমরা আমাদের মেধা ও শ্রমকে কাজে লাগিয়ে জাতির সেবা করতে পারছি এটাই আমাদের কাছে বড় পাওয়া।’
তিনি আরও বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে আমাদের একটাই চাওয়া। যেহেতু ১০ বছরের বেশি সময় ধরে আমাদের নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ রয়েছে। তাই মানবিক বিবেচনায় তারা যেন আমাদের নিয়োগ প্রক্রিয়াটি দ্রুত চালু করেন।’
রাজবাড়ীর সিভিল সার্জন ডাঃ মো. নুরুল ইসলাম বলেন, ‘রাজবাড়ী প্রাইভেট মেডিকেল টেকনোলজিস্ট অ্যাসোসিয়েশন ও বঙ্গবন্ধু মেডিকেল টেকনোলজিস্ট পরিষদের সদস্যদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কিছু শর্ত সাপেক্ষে তাদের কোভিড-১৯ মোকাবেলার জন্য স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আমাদের মেডিকেল টিমের সঙ্গে সমন্বয় করে তারা কাজ করছেন।’