॥স্টাফ রিপোর্টার॥ রাজবাড়ীতে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ৬জন রোগী সনাক্ত হওয়ার পর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গত ১২ই এপ্রিল থেকে পুরো জেলা ১০দিনের জন্য লকডাউন করা হলেও রাজবাড়ী বাজারের কাঁচাবাজার স্থানান্তর না হওয়ায় বাজারে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি থাকায় জনমনে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা বেড়েই চলেছে।
দেশের অধিকাংশ হাট-বাজার সংকীর্ণ হওয়ার ফলে হাট-বাজারে অবস্থানরত ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি থাকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরামর্শে স্থানীয় সরকার বিভাগ গত ১২ই এপ্রিল হাট-বাজার ও কাঁচা বাজারগুলোকে খোলা জায়গায় স্থানান্তরের জন্য জেলা প্রশাসক, জেলা ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, পৌরসভা মেয়র ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদেরকে নির্দেশনা প্রদান করে।
স্থানীয় সরকার বিভাগের এ নির্দেশনার প্রেক্ষিতে রাজবাড়ী পৌরসভা রাজবাড়ী বাজারের কাঁচাবাজার স্থানান্তরের কোন উদ্যোগ না নেয়ায় রাজবাড়ী জেলা প্রশাসন করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করে কাজী হেদায়েত হোসেন স্টেডিয়ামে কাঁচাবাজার স্থানান্তর ও চালু হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
গতকাল ১৪ই এপ্রিল থেকে কাজী হেদায়েত হোসেন স্টেডিয়ামে রাজবাড়ী বাজারের কাঁচাবাজার পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত স্থানান্তর ও চালু হওয়ার সিদ্ধান্ত ছিল। জেলা প্রশাসনের আহবানে জনস্বার্থ বিবেচনায় রাজবাড়ী চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী ইরাদত আলী স্টেডিয়ামের অভ্যন্তরে অস্থায়ীভাবে বাঁশের তৈরী ১৫ ফুট করে দূরত্বে মোট ৪০টি দোকান ঘর তৈরী করে দেন।
গতকাল ১৪ই এপ্রিল কয়েকটি দোকান বসলেও রহস্যজনক কারণে চালু করা হয়নি অস্থায়ী এ কাঁচাবাজার। ফলে জনসাধারণকে করোনা ভাইরাসের ঝুঁকি নিয়ে সামাজিক দূরত্ব না মেনে জনসাধারণকে গতকাল মঙ্গলবার পহেলা বৈশাখে রাজবাড়ী বাজারের কাঁচাবাজারে বাজার-সদাই করতে দেখা যায়।
এ ব্যাপারে রাজবাড়ী চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি কাজী ইরাদত আলী বলেন, জেলা প্রশাসনের আহবানে জনস্বার্থ বিবেচনায় আমি স্টেডিয়ামে ৪০টি অস্থায়ী দোকান তৈরী করে দিয়েছে। কিন্তু অদৃশ্য কোন কারণে অস্থায়ী বাজার চালু হয়নি সেটা আমার জানা নেই।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম বলেন, স্থানীয় সরকার বিভাগের নির্দেশনার প্রেক্ষিতে সবদিক বিবেচনা ও ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে আমরা কাজী হেদায়েত হোসেন স্টেডিয়ামে বিশাল জায়গায় অস্থায়ী বাজার স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেই। রাজবাড়ী চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতির সহযোগিতায় ব্যবসায়ীদের বেচাকেনার সুবিধার জন্য অস্থায়ী দোকান ঘর তৈরী করা হয়েছে। গতকাল ১৪ই এপ্রিল বাজার চালুর কথা থাকলের রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য ও পৌরসভা মেয়র এখন আপত্তি জানানোর কারণে চালু করা সম্ভব হয়নি।
জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম আরো বলেন, রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলী মহোদয় ঢাকা থেকে ফোনে আমাকে জানিয়েছেন তিনি রাজবাড়ীতে আসার পর ফের আলোচনা করে বাজার স্থানান্তরের উদ্যোগ নিবেন।
এ ব্যাপারে গতকাল মঙ্গলবার রাত ৮টায় রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলীর মোবাইলে ফোন করলেও তিনি কল রিসিভ করেন নি।
এ বিষয়ে কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, রাজবাড়ী বাজার সংকীর্ণ হওয়ার আমরা এখন করোনা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছি। আমাদের কাঁচাবাজার স্থানান্তরের দিনক্ষণ ঠিক হলেও এমপি ও মেয়র সাহেব আপত্তি দেয়ায় আমরা যেতে পারছিনা।
প্রশ্ন রেখে তারা আরো বলেন, এখন ব্যবসায়ীদের মধ্যে কেউ করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হলে তার দায়ভার কে নেবে- এমপি না পৌর মেয়র?