॥স্টাফ রিপোর্টার॥ করোনা ভাইরাসে দেশে ২৪ ঘন্টায় আরও ১৩৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬২১।
এ ছাড়া গত ২৪ ঘন্টায় আরও ৪জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। এ নিয়ে দেশে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ৩৪ জনে। এছাড়া গত ২৪ ঘন্টায় ৩ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি গেছেন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৩৯ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনা ভাইরাস সম্পর্কে নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে নিজ বাসা থেকে যুক্ত হয়ে রোগতত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের(আইইডিসিআর) পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা গতকাল রবিবার এ তথ্য জানান।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে এ সময় যুক্ত হন অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক(পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) ডাঃ সানিয়া তাহমিনা। তিনিও করোনা পরিস্থিতি নিয়ে সর্বশেষ তথ্য উপস্থাপন করেন।
ডাঃ সানিয়া তাহমিনা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় মোট ১হাজার ২৫১টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এরমধ্যে ঢাকার ৬৬১টি ও ঢাকার বাইরে থেকে ৪৯০টি। আগের কিছু নমুনাসহ গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ১৭টি ল্যাবরেটরিতে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১হাজার ৩৪০টি। এতে ১৩৯ জনের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়। ফলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা হয়েছে ৬২১। আগের চেয়ে নমুনা পরীক্ষা বেড়েছে ১০ শতাংশ।
ডাঃ ফ্লোরা জানান, ‘আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৪ জন মারা গেছেন। ফলে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ৩৪ জনে। নতুন করে যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে ৩ জন পুরুষ এবং ১ জন নারী। তাদের মধ্যে ৩০ থেকে ৪০ বছর বয়সী ২ জন, ৬০ বছর বয়সী ১ জন এবং সত্তরোর্ধ্ব ১ জন রয়েছেন। ৪ জনের মধ্যে ২ জন ঢাকায় এবং ২ জন ঢাকার বাইরে মারা যান।
এছাড়া যারা আগে থেকে আক্রান্ত, তাদের মধ্যে আরও ৩জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। ফলে মোট সুস্থ হয়েছেন ৩৯ জন। নতুন যারা সুস্থ হয়েছেন তাদের মধ্যে ২জন নারী ও ১জন পুরুষ। সুস্থ হয়ে ওঠা ৩ জনের ১ জন চিকিৎসক। তিনি রোগীকে চিকিৎসা দেয়ার সময় আক্রান্ত হয়েছিলেন বলে তিনি জানান।
আইইডিসিআর পরিচালক জানান, দেশে মোট যে ৬২১ জন আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের মধ্যে রাজধানী ঢাকার ৫০ শতাংশ এবং ঢাকা বিভাগের অন্যান্য জেলায় ৩৫ শতাংশ। তৃতীয় সর্বোচ্চ ৬ শতাংশ চট্টগ্রাম বিভাগের।
বুলেটিনে বলা হয়, বর্তমানে সারাদেশে মোট ২০ হাজার ৫২৫ জন কোয়ারেন্টাইনে আছেন। তাদের মধ্যে হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন ১৯ হাজার ১১১ জন এবং প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে ১হাজার ৪১৪ জন আছেন।
ডাঃ ফ্লোরা বলেন, দেশে নতুন করে ৪ জেলায় করোনা ভাইরাস সংক্রমিত হয়েছে। জেলা ৪টি হলো লক্ষ্মীপুর, লালমনিরহাট, ঠাকুরগাঁও ও ঝালকাঠি।
তিনি বলেন, ‘চার জেলায় যারা নতুন করে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন তাদের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, তারা গত ১ সপ্তাহের মধ্যে রাজধানী ঢাকা কিংবা নারায়ণগঞ্জ থেকে সেখানে গিয়েছেন। এ কারণেই আমরা বারবার সতর্ক করছি যে এ সময় আপনারা কেউ ভ্রমণ করবেন না।’
করোনার বিস্তাররোধে তিনি সবাইকে বাড়িতে থাকার এবং স্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শ মেনে চলার আহ্বান জানান।
ডাঃ সানিয়া তাহমিনা জানান, করোনা চিকিৎসায় সারাদেশে হাসপাতালগুলোতে আইসোলেশন বেড রয়েছে ৭ হাজার ৬৯৩টি, এরমধ্যে ঢাকায় আছে ১ হাজার ৫৫৯টি, আইসিইউ বেড রয়েছে সারাদেশে ১১২টি এবং ডায়ালাইসিস বেড আছে ৪০টি।
করোনা প্রতিরোধে দেশবাসীকে কোয়ারেন্টাইন বিধিমালা কঠোরভাবে মেনে চলার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘করোনা ভাইরাসে প্রতিরোধে সরকার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে ব্যক্তি পর্যায়ে সতর্ক থাকলে করোনা বিস্তার রোধ করা সম্ভব হবে। আপনার ভাল আপনারই হাতে।’
অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, স্বাস্থ্য বাতায়ন ও আইইডিসিআর’র হটলাইন নম্বরে এ পর্যন্ত ২১ লাখ ৩৪ হাজার ৬২৯ টি কল এসেছে। গত ২৪ ঘন্টায় ৯১ হাজার ৪৯১ জন কল করে মোবাইলে স্বাস্থ্য সেবা ও পরামর্শ নিয়েছেন।
তিনি জানান, করোনা ভাইরাস চিকিৎসা বিষয়ে ৩ হাজার ৬০১ জন চিকিৎসক স্বাস্থ্য বাতায়ন ও আইইডিসিয়ার’র হটলাইনগুলোতে জনগণকে চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ দিচ্ছেন।
এছাড়া গত ২৪ ঘন্টায় সমুদ্র বন্দর দিয়ে ২৩৩ জন ও স্থল বন্দর দিয়ে বাংলাদেশে আসা ৭৬ জন যাত্রীকে স্কিনিং করা হয়েছে।