॥রফিকুল ইসলাম॥ রাজবাড়ী জেলার অসংখ্য খেটে খাওয়া হতদরিদ্র মানুষ করোনা ভাইরাসের লকডাউনের ফলে কাজ না থাকায় মানবেতন জীবনযাপন করছে। তাদের হাতে এখন পর্যন্ত সরকারী ও বেসরকারী সহায়তা মিলছে না।
জেলার ৫টি উপজেলার পদ্মা ও গড়াই নদীর ভাঙ্গন কবলিত অসহায় পরিবারগুলোর দুর্দশা চরমে পৌঁছেছে। গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ও দৌলতদিয়া ইউনিয়নের পদ্মা নদীর ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সংখ্যা সর্বাধিক। তাদের অনেকেই মহাসড়ক ও রেল লাইনের পাশে ঘর তুলে বসবাস করছে। করোনা ভাইরাসের কারণে লকডাউনের ফলে শ্রমজীবী মানুষ কাজের সন্ধানে ঘর থেকে বের হতে পারছে না। দৌলতদিয়া ঘাটের ২শতাধিক হকার বেকার হয়ে পড়েছে। এসব হকাররা ফেরী ঘাট, লঞ্চ ঘাট, রেল স্টেশন, বাস/ট্রাক টার্মিনাল ও যৌনপল্লীতে ঝাল মুড়ি, ভাত, কলা, মাছ, তরকারীসহ নানা কিছু বিক্রি করে সংসার চালাতো।
গত কয়েক দিন ধরে জেলার কয়েকশত হোটেল ও মিষ্টির দোকান বন্ধ, শতাধিক আবাসিক হোটেল বন্ধ হয়েছে। কয়েক হাজার পরিবহন শ্রমিকও বেকার জীবনযাপন করছে। মিষ্টির দোকানগুলো বন্ধ থাকায় হাট-বাজারগুলোতে ২৫/৩০ টাকা লিটার দরে দুধ বিক্রি হচ্ছে। এতে গরুর খামারীরা লোকসান গুনছে।
শহীদওহাবপুর ইউপির গোয়ালন্দ মোড় এলাকার চায়ের দোকানী মঞ্জু(৭২) বলেন, কয়েক দিন ধরে দোকান বন্ধ রাখতে হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন সরকারী সাহায্য পাইনি। জাহাঙ্গীর নামের একজন অটোরিক্সা চালক বলেন, বাস চলাচল বন্ধ থাকায় এখন আর তেমন যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে না। আমাদের আয় অনেক কমে গেছে।
দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল রহমান মন্ডল জানান, গত শনিবার পতিতাপল্লীর ১৩শত যৌনকর্মীর মধ্যে সরকারীভাবে ও এমপি আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলীর পক্ষ থেকে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। তবে ইউনিয়নের নদী ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে এখনো ত্রাণ দেয়া সম্ভব হয়নি।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল করিম জানান, গতকাল সোমবার সব উপজেলার ১০০ জন করে চা ও পান দোকানীদের মধ্যে ২০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়েছে। প্রত্যেক ইউনিয়নের ৫০টি করে গরীব পরিবারের মধ্যে ১০ কেজি করে চাল, ৫ কেজি করে আলু ও ২ কেজি করে ডাল বিতরণ করা হবে।