॥হেলাল মাহমুদ॥ করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে গত ১৭ই মার্চ বিদেশ থেকে রাজবাড়ী জেলায় আসছে ১৭২৫ জন প্রবাসী আসলেও তাদের মধ্যে হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছে মাত্র ৯০ জন।
বিদেশ ফেরত এই বিপুল সংখ্যক প্রবাসী নজরদারীর বাইরে থাকায় তারা ইচ্ছামতো ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং পরিবার-স্বজনসহ সবার সাথে মিশছে। এতে গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে।
রাজবাড়ীর সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ নুরুল ইসলাম জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলার আরও ৩০ জন প্রবাসীকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। এই নিয়ে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা মোট প্রবাসীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯০ জনে। তারা সবাই সুস্থ আছেন। স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তাগণ সার্বক্ষণিক তাদের খোঁজ-খবর রাখছেন। এছাড়া জেলার পাঁচ উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে ৫টি করে বেডের ‘আইসোলেউশন ইউনিট’ করা হয়েছে। সেই সাথে রাজবাড়ীর যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর ও কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রকে কোয়ারেন্টাইনের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে সকলকে সচেতন হওয়ার ও স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
জেলা সদর হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সর্দি-কাশি হলেই মানুষ হাসপাতালে ছুটছে। প্রতিদিনই হাসপাতালগুলোর আউটডোরে শত শত মানুষ চিকিৎসককে দেখাচ্ছে।
রাজবাড়ী সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন গড়ে ৩শ’ জন শিশু, আড়াইশ’ নারী ও ২শ’ পুরুষকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
কালুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গত ৩দিনে সর্দি-কাশি নিয়ে আসা প্রায় ৭০ জনকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডাঃ আনজুয়ারা খাতুন সুমি জানান, তারা প্রতিদিন আউটডোরে চিকিৎসা দিচ্ছেন। প্রয়োজন হলে বাইরে রেফার করছেন। অনলাইনে পরামর্শ প্রদান করছেন।
গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আসিফ মাহমুদ জানান, এ উপজেলার ১০৮ জন বিদেশ থেকে এসেছেন। প্রতিদিন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আইটডোরে গড়ে ১০০ জনকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
বালিয়াকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ শাফিন জব্বার জানান, প্রতিদিন গড়ে প্রায় ২০০ জন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আউটডোরে চিকিৎসা নিচ্ছেন, তাদের মধ্যে ৫০ জনের মতো সর্দি-কাশির সমস্যা নিয়ে আসছে।
এ ব্যাপারে সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ নুরুল ইসলাম বলেন, সরকারী নির্দেশনা অনুযায়ী সর্দি-কাশি হলেই হাসপাতালে আসার প্রয়োজন নেই। বাড়ীতে থেকেই চিকিৎসা নিতে হবে। যদি হাসপাতালে এসেই যায় তাহলে আলাদা রুমে তাকে চিকিৎসা দেয়া হবে।
এদিকে জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম গতকাল ১৯শে মার্চ রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিট পরিদর্শন করেন। এ সময় সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ নুরুল ইসলাম এবং সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ দিপক কুমার বিশ্বাসসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।