মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৪৪ পূর্বাহ্ন
Logo
সংবাদ শিরোনাম ::
বিশ্বব্যাপী ওমিক্রন সংক্রমণ বৃদ্ধিতে আইসোলেশন মেয়াদ অর্ধেক করার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট ডেল্টা ও বিটার তুলনায় তিন গুণের বেশী পুনঃ সংক্রমন ঘটাতে পারে : গবেষণা প্রতিবেদন জাতিসংঘ ভবনের বাইরে এক বন্দুকধারী গ্রেফতার শান্তি চুক্তির পঞ্চম বার্ষিকী উপলক্ষে কলম্বিয়া সফর জাতিসংঘ মহাসচিব সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানগণের সাক্ষাৎ করোনা ভাইরাসের সংক্রমন বেড়ে যাওয়ায় অস্ট্রিয়ায় লকডাউন করোনা সংক্রমণ বাড়ায় ইউরোপের বিভিন্ন দেশে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ ভারতে নতুন করে ১০ হাজার ৩০২ জন করোনায় আক্রান্ত নভেম্বর মাসজুড়ে করাঞ্চলে কর মেলার সেবা পাবেন করদাতারা ঔপনিবেশিক আমলের ফৌজদারী কার্যবিধি যুগোপযোগী হচ্ছে

বৃহত্তর ফরিদপুরের দ্বিতীয় মাদক প্রবণ অঞ্চল হিসেবে রাজবাড়ী জেলার যথেষ্ট দুর্নাম রয়েছে -ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ১৩ জুন, ২০১৭

॥আসহাবুল ইয়ামিন রয়েন॥ জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল(এনআইএস) কর্ম পরিকল্পনা বাস্তবায়ন বিষয়ে গতকাল ১২ই জুন দুপুর ২টায় ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার হেলালুদ্দীন আহমদের সাথে রাজবাড়ীসহ বৃহত্তর ফরিদপুরের ৫টি জেলার ভিডিও কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়।
ঢাকা বিভাগীয় মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় এই ভিডিও কনফারেন্সের আয়োজন করে।
ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার হেলালুদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে ভিডিও কনফারেন্সে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগীয় অতিরিক্ত পরিচালক গোলাম কিবরিয়া, পরিচালক(নি.ছি) এ.কে.এম তারিকুল ইসলাম এবং রাজবাড়ী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা ফকীর আব্দুল জব্বার, মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের রাজবাড়ী সার্কেলের সহকারী পরিচালক রাজিব মিনা প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
ভিডিও কনফারেন্সে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার হেলালুদ্দীন আহমদ তার বক্তব্যে বলেন, বৃহত্তর ফরিদপুরের জেলাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশী মাদকপ্রবণ জেলা হচ্ছে ফরিদপুর জেলা। এই জেলায় ইয়াবা, গাঁজা, ফেনসিডিল ও হেরোইন সবচেয়ে বেশী মাত্রায় মাদকসেবীরা সেবন করছে। মাদক ব্যবসায়ীদের অবাধ বিচরণের ফলে এই জেলায় মাদক বর্তমানে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ফরিদপুরের পরে এই অঞ্চলের দ্বিতীয় মাদকপ্রবণ অঞ্চল হিসেবে রাজবাড়ী জেলার যথেষ্ট দুর্নাম রয়েছে। এর প্রধান কারণ এই জেলায় একটি বৃহৎ নিষিদ্ধ পল্লী রয়েছে। তার কাছেই রয়েছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার প্রবেশদ্বার হিসেবে খ্যাত দৌলতদিয়া ঘাট। এই ঘাট দিয়ে প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা শত শত ট্রাক ও বাস পারাপার হয়। যার মধ্যে অনেকই এই নিষিদ্ধ পল্লীতে যাতায়াত করে ও মাদক সেবন করে থাকে। অধিক মাত্রায় দেশের বিভিন্ন স্থানের মাদকসেবীদের আসা-যাওয়া ও মাদক ব্যবসা লাভজনক হওয়ার কারণে মাদক ব্যবসায়ীরা এই নিষিদ্ধ পল্লীতে তাদের মাদক ব্যবসার আখড়া গড়ে তুলেছে। এখানে ইয়াবা, গাঁজা, ফেনসিডিল ও হেরোইন প্রচুর পরিমাণে সেবন করা হচ্ছে বলে বিভিন্ন সুত্রের তথ্য থেকে প্রতীয়মান হয়েছে। তাই ফরিদপুর ও রাজবাড়ী জেলার দুর্নাম ঘোচানোর জন্য জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ ও মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরকে মাদক দ্রব্যের ব্যাপারে আরো কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে ও দৃশ্যমান অভিযান পরিচালনা করতে হবে। যাতে মাদবসেবী, মাদক ব্যবসায়ীসহ মাদকের সাথে জড়িত কেউ কোন প্রকার ছাড় না পায়। যদি সকলে মিলে সম্মিলিতভাবে মাদকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায় তবে ভবিষ্যতে জেলাকে মাদকমুক্ত করা সম্ভব হবে। প্রতিটি জেলায় একটি করে মাদক নিরাময় কেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে মাদকসেবীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। যাতে তারা সুস্থ্য জীবনে ফিরে যেতে পারে। যদি সম্ভব হয় তবে জেলার সদর হাসপাতালগুলোতে মাদকসেবীদের চিকিৎসার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে মাদক ব্যবসায়ীরা দেশের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে মাদকের চালান মাদকপ্রবণ এলাকায় পাঠানোর চেষ্টা করবে। যাতে মাদকের এই চালান মাদক ব্যবসায়ীরা সহজে নিতে না পারে সেই জন্য প্রত্যেক জেলার জেলা প্রশাসন, পুলিশ, র‌্যাব, মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরসহ সকলকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে। জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ, র‌্যাব, মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরসহ জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সাধারণ জনগণ সকলে মিলে যদি সম্মিলিতভাবে মাদকের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো যায় তাহলে জেলা তথা দেশ থেকে মাদক সমূলে নির্মূল করা সম্ভব হবে।
ভিডিও কনফারেন্সে জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী বলেন, রাজবাড়ী জেলায় একটি বৃহৎ নিষিদ্ধ পল্লী রয়েছে এবং সেখানে মাদকের ব্যবহার হয়-এটি সঠিক। তবে রাজবাড়ী জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ, র‌্যাব ও মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর নিষিদ্ধ পল্লীসহ সমগ্র জেলা থেকে মাদক নির্মূলে সর্বশক্তি নিয়োগ করে জিরো টলারেন্স নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। যাতে জেলাকে মাদকমুক্ত করা সম্ভব হয় সে লক্ষ্যে। এ ছাড়াও জেলার যে কোন জায়গা থেকে মাদকের তথ্য পাওয়া মাত্র অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। জেলার জনপ্রতিনিধিসহ সকলে মাদক নির্মূলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়াও রাজবাড়ী জেলার সাথে অন্য জেলার যে সমস্ত বর্ডার এলাকা রয়েছে সেসব এলাকা দিয়ে যাতে মাদক জেলায় প্রবেশ করতে না পারে সে ব্যাপারে অভিযানসহ বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। মাদক ব্যবসায়ীরা যাতে কোন অবস্থাতেই ছাড় না পায় সে পদক্ষেপও গ্রহণ করা হয়েছে। সর্বোপরি জেলাকে মাদকমুক্ত করতে জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ ও মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর মাদকের বিরুদ্ধে বর্তমান সরকারের জিরো টলারেন্স নীতি নিয়ে কাজ করছে। রাজবাড়ী জেলাকে মাদকমুক্ত করার মাধ্যমে এর দুর্নাম ঘোচানোর লক্ষ্যে সকলে সম্মিলিতভাবে কাজ করছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
ভিডিও কনফারেন্সের সময় অন্যান্যের মধ্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) রেবেকা খান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মানোয়ার হোসেন মোল্লা, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রফিকুল ইসলাম, এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী খান এ শামীম, উপজেলা নির্বাহী অফিসারগণ, কালেক্টরেটের সহকারী কমিশনারগণ এবং বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের কর্মকর্তাগণ, সুশীল সমাজ ও এনজিও প্রতিনিধিগণ ও সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর
error: আপনি নিউজ চুরি করছেন, চুরি করতে পারবেন না !!!!!!