॥সোহেল মিয়া॥ রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার নারুয়া ও জঙ্গল ইউনিয়নের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়া একসময়ের খরস্রোতা গড়াই নদী এখন পানি শূন্য।
নদীর বুকের উপর দিয়ে এখন নৌকার পরিবর্তে চলছে অটোরিকশা ও ভ্যান গাড়ী। নদীর মাঝখানে স্থাপিত হয়েছে অস্থায়ী স্ট্যান্ড। সেখানে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকে অন্তত অর্ধশত করে অটোরিক্সা। সেখান থেকে যাত্রী তুলে গন্তব্যের দিকে রওনা দেয়।
গ্রীস্ম মৌসুম শুরুর আগেই এবার নদীর পানি শুকিয়ে যাওয়ায় নদীর বুকে এখন জেগে উঠেছে বিশাল চর। নদীর বুক এখন ধূ ধূ বালু চরে পরিণত হয়েছে। নদীর বুকে অটোরিক্সার স্ট্যান্ড ছাড়াও কৃষক চাষাবাদ করছে মসুরি ও খেসারি ডাউলের।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিশাল গড়াই নদী এখন পানিশূন্য। নদীর সবটুকুতেই চর পড়ে গেছে। শুধুমাত্র কোন রকমে পানির একটু ক্ষীণধারা রয়েছে। সেটুকু নৌকায় পার হচ্ছে সাধারণ যাত্রীরা। নারুয়া ঘাট পার হয়ে যারা মাগুরা জেলার বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছেন তারা নদী পার হয়ে নৌকা থেকে নেমেই নদীর বুকে পড়া চর পাড়ি দেয়ার জন্য অটোরিক্সা অথবা ভ্যানে করে শ্রীপুরের গোয়ালদা স্ট্যান্ডে যাচ্ছেন। আর যারা মাগুরা থেকে রাজবাড়ী জেলার বিভিন্ন স্থানে আসছেন তারা গোয়ালদা স্ট্যান্ড থেকে অটোরিক্সায় করে ঘাটে আসছেন। জেগে ওঠা চরে বালিয়াকান্দির নারুয়া ও মাগুরার শ্রীপুরের মহেষপুর গ্রামের কয়েকশত কৃষক মসুরি ও খেসারি ডাউলের চাষ করেছেন। নদীতে জেগে ওঠা চরে এখন সেই ফসলের সমাহার। বিস্তৃত এলাকা জুড়ে চাষ হয়েছে ফসলের।
জেগে ওঠা চরের উপর অটোরিক্সা স্ট্যান্ড পরিচালনা সাথে যুক্ত মহেষপুরের সাদ্দাম হোসেন বলেন, এবারই প্রথম আমরা নদীর মাঝে স্ট্যান্ড করেছি। নৌকা থেকে নেমে মালামাল নিয়ে চর পাড়ি দিয়ে গোয়ালদা স্ট্যান্ডে যেতে যাত্রীদের অনেক কষ্ট হয়। তাই যাত্রীদের কষ্টের কথা ভেবে আমরা এবার নদীর মাঝখানে জেগে ওঠা চরে অস্থায়ী স্ট্যান্ড স্থাপন করেছি। এখান থেকে সিরিয়াল অনুযায়ী প্রতিদিন ৪০/৫০টির মতো অটোরিক্সা চলাচল করে বলে তিনি জানান।
নীলা খাতুন নামে মাগুরার এক যাত্রী বলেন, নদীর চরের উপর স্ট্যান্ড হওয়ায় আমরা বেশ উপকৃত হচ্ছি। নদীর আধা কিলোমিটার চর পাড়ি দিয়ে মালামাল নিয়ে যাতায়াত করা খুবই কষ্টের। তাছাড়া বৃদ্ধ ও শিশুদের চরে হেঁটে যেতে অনেক কষ্ট হয়। এরা জনপ্রতি ১০ টাকা করে নিচ্ছে। তাতেও আমরা খুশি।
নারুয়া ইউনিয়নের কোনাগ্রামের কৃষক আরশেদ আলী বলেন, নদীতে এবার আগেই চর পড়ে যাওয়ায় আমরা বিভিন্ন ফসলের চাষাবাদ করেছি। যে মসুরি পাবো তাতে আমাদের সারা বছর চলে যাবে। আবার বিক্রিও করা যাবে।