॥গোয়ালন্দ প্রতিনিধি॥ রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও মোস্তফা মেটাল লিঃ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তফা মুন্সি।
গতকাল ২৫শে ফেব্রুয়ারী দুপুরে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে এ সংক্রান্ত চিঠি গ্রহণ করেন মনোনীত প্রার্থীসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ।
দলীয় মনোনয়ন দেয়ায় প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে শিল্পপতি মোস্তফা মুন্সি বলেন, স্থানীয় নেতাকর্মীদের অফুরান ভালোবাসা ও সহযোগিতায় তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। গোয়ালন্দ উপজেলা দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে প্রমাণিত। আগামী ২৯শে মার্চের নির্বাচনে বিপুল ভোটে নৌকাকে বিজয়ী করে তা আবারো প্রমাণ করা হবে।
ঘোষিত তফসীল অনুযায়ী আগামী ২৭শে ফেব্রুয়ারী প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ, ১লা মার্চ মনোনয়নপত্র বাছাই, ৮ই মার্চ মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ তারিখ এবং ২৯শে মার্চ ভোট গ্রহণ।
উল্লেখ্য, গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা এবিএম নুরুল ইসলাম ২০১৯ সালের ১৭ই অক্টোবর ঢাকার একটি হাসপাতালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রাপ্ত মোস্তফা মুন্সি একজন বিশিষ্ট শিল্পপতি ও সমাজসেবক। তিনি গোয়ালন্দ উপজেলায় অবস্থিত মোস্তফা মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিঃ এবং মোস্তফা পিভিসি ইন্ডাস্ট্রিজ লিঃ প্রতিষ্ঠাতা। বর্তমানে তিনি প্রতিষ্ঠান ২টির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। গোয়ালন্দ উপজেলার উত্তর দৌলতদিয়া ঢল্লাপাড়া গ্রামের আলহাজ্ব মোঃ নাজিম উদ্দিন মুন্সীর পুত্র আলহাজ্ব মোঃ মোস্তফা মুন্সীর জন্ম ১৯৬২ সালে। দৌলতদিয়ার যদু মাতুব্বর পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও নাজিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ে লেখাপাড়া করেছেন। আশির দশকে তিনি ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনীতির সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন। এরশাদ বিরোধী আন্দোলন-সংগ্রামে প্রথম সারিতে থেকে গণঅভ্যুত্থানে ভূমিকা রাখেন। পরবর্তীতে বিএনপি সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার পর বিভিন্ন মিথ্যা মামলা-মোকদ্দমা দিয়ে তাকে হয়রানী করা হলে একপর্যায়ে ১৯৯৫ সালে তিনি দক্ষিণ কোরিয়ায় চলে যান। সেখানে দীর্ঘ ১যুগেরও বেশী সময় থাকার পর দেশে ফিরে এসে ২০০৭ সালে দেশে ফিরে আসার পর ২০১১ সালে গোয়ালন্দ উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের রমজান মাতুব্বরপাড়ায় (মকবুলের দোকান ও জমিদার ব্রীজের মাঝামাঝিতে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পাশে) মোস্তফা মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিঃ ও মোস্তফা পিভিসি ইন্ডাস্ট্রিজ লিঃ গড়ে তোলেন। সেখানে স্থানীয় চার শতাধিক মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। প্রতিষ্ঠান ২টি থেকে বিশ্বমানের পিভিসি দরজা, সিলিং, পাইপ, কোরিয়ান ক্যাপস উৎপাদিত হচ্ছে। দেশের ৬৪টি জেলার প্রতিবেশী ভারতে সুনামের সাথে এগুলো রপ্তানী হচ্ছে। শিল্পপতি আলহাজ্ব মোঃ মোস্তফা মুন্সী রাজবাড়ী চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য এবং মোস্তফা ট্রেডিং কর্পোরেশনের প্রোপাইটর। প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালনার পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন ধরণের সামাজিক কর্মকান্ডের সাথেও জড়িত। বন্যা ও নদী ভাঙ্গন কবলিত মানুষের মধ্যে বিপুল পরিমাণে ত্রাণ বিতরণসহ উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে আর্থিক সহায়তা করে সুনাম অর্জন করেছেন। দৌলতদিয়ার ফকীর আব্দুল জব্বার কলেজ ও আব্দুল হালিম কলেজের ডোনার হিসেবে প্রতি মাসে অর্থ সহায়তাসহ তার প্রতিষ্ঠান দু’টির পক্ষ থেকে বেশ কিছু সংখ্যক দরিদ্র-মেধাবী শিক্ষার্থীর লেখাপড়ার খরচ চালানো হয়। দৌলতদিয়া ইউনিয়নসহ উপজেলার যে কোন এলাকার গরীব-অসহায় মানুষ তার কাছে গেলে তিনি সাধ্যমত তাদেরকে সহায়তা করেন। তিনি (মোস্তফা মুন্সী) ২০১৮ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে আওয়ামী লীগের সদস্যপদ গ্রহণ করেন। তারপর থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা রেখে চলেছেন। বিগত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে বিশেষ জোরালো ভূমিকা রেখে ব্যাপক প্রশংসিত হন। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী-সমর্থকদের পাশাপাশি দল-মত নির্বিশেষে সকলের কাছেই তিনি অত্যন্ত প্রিয়। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ৪জন পুত্র সন্তানের জনক। তাদের মধ্যে ৩জন প্রতিষ্ঠান ২টির দায়িত্বশীল পদে কর্মরত এবং ১জন লেখাপড়া করছেন। তার জ্যেষ্ঠ পুত্র মোঃ মামুন মুন্সী প্রতিষ্ঠান দু’টির চেয়ারম্যান, মেঝ ছেলে মোঃ সেলিম মুন্সী পরিচালক, মোঃ শাহরিয়ার সাগর একাউন্টস সেকশনের এক্সিকিউটিভ পদে দায়িত্ব পালন করছেন এবং কনিষ্ঠ পুত্র মোঃ তুষার ইমরান গাজীপুরের বোর্ড বাজারে অবস্থিত ওআইসিভুক্ত খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয় ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজী (আইইউটি)’তে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং-এ চূড়ান্ত বর্ষের ছাত্র। তার স্ত্রী মিসেস কমলা বেগম একজন গৃহিনী এবং মোস্তফা মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিঃ-এর শেয়ার হোল্ডার।