Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

বোয়ালমারীতে জোড়া খুনের মামলা তুলে নিতে বাদীকে হুমকী॥নিহতের পরিবার চরম উৎকণ্ঠায়

॥মাহবুব হোসেন পিয়াল॥ ফরিদপুরে সন্ত্রাসী হামলা করে দুই সহোদর ভাইকে কুপিয়ে খুনের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলা তুলে নিতে বাদী ও তার পরিবারকে অব্যাহতভাবে হুমকি দেয়া হচ্ছে।
এ ঘটনায় আদালতে মামলা করার পর থানায় একাধিক জিডি করা হয়েছে। তবে আসামীদের দাপট তাতে কমেনি। ফলে নিহতদের পরিবার ও স্বজনেরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
জানা গেছে, ২০১৭ সালের ৯ই নভেম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে আলফাডাঙ্গা বাজারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে বাড়িতে ফেরার পথে খুন হন বোয়ালমারী উপজেলার শেখর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইদ্রিস মোল্যা(৪৮) ও ওই ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি লাভলু মোল্যা(৩৮)। তারা পরস্পর সহোদর ভাই। হত্যাকান্ডের পর নিহতদের ভাই আবুল কাশেম মোল্যা বাদী হয়ে ৩৩জনকে আসামী করে আলফাডাঙ্গা থানায় হত্যা মামলা করেন।
পুলিশ ঘটনার পরপরই সাতজনকে আটক করে ওহিদ ও ইয়াকুব নামে দু’জনের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত রামদা, রক্তমাখা চাপাতি, লম্বা ছোড়া, চাইনিজ কুড়াল উদ্ধার করে। এলাকায় প্রভাব বিস্তার ও রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব থেকে তাদের পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়। জোড়া খুনের এই ঘটনাটি সে সময়ে বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। মামলার ২০ নম্বর আসামী বুদ্ধ মোল্যা(৪০) এখনো পলাতক রয়েছে। অন্যদের মধ্যে প্রথমে কয়েকজন উচ্চ আদালত হতে এবং অন্যরা জেলা জজ আদালত হতে জামিন নেন।
মামলার বাদী আবুল কাশেম মোল্যা জানান, জামিনে বেরিয়ে এসেই আসামীরা তাকে মামলা তুলে নিতে হুমকি দিতে থাকে। এ ঘটনায় তিনি ১০৭/১১৭ ধারায় আদালতে মামলা করেন। ওই মামলা শেষ হলে প্রধান আসামী কাওসারসহ অন্যরা এসে আবারো তাকে খুন করার হুমকি দেয়। তিনি জিডি করেছেন। এরপর তার ভাই দিদার মোল্যাকেও একইভাবে হুমকি দিলে তিনিও গত ২রা ফেব্রুয়ারী বোয়ালমারী থানায় একটি জিডি করেছেন। তিনি অভিযোগ করেন, পুলিশের সামনেই আসামীদের লোকেরা মহড়া দেয়। তারা পরিবার নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন।
এ ব্যাপারে বোয়ালমারী থানার এস.আই মোজাফফর হোসেন বলেন, আবুল কাশেমের জিডির তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেছি। প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছি।
নিহত ইদ্রিস মোল্যার বড় কাপড়ের দোকান ও লাভলুর বড় ফার্নিচারের ব্যবসায়ী ছিলো আলফাডাঙ্গা বাজারে। সাগরী(২৬) নামে এক মেয়ে এবং ইয়াসিন (২২) ও ইসমাইল (১৭) নামে দুই ছেলে রয়েছে ইদ্রিস মোল্যার। আর লাভলুর লামিয়া (৫) নামে এক মেয়ে এবং নাইম (১৫) ও সম্রাট(৯) নামে দুই ছেলে রয়েছে। নিহতদের স্ত্রী ও সন্তানসহ স্বজনেরা তাদের নিরাপত্তার পাশাপাশি চাঞ্চল্যকর এই জোড়া হত্যাকান্ডের সুষ্ঠ বিচার দাবী করেছেন।