শনিবার, ২৩ মার্চ ২০২৪, ১০:৪৮ অপরাহ্ন
Logo
সংবাদ শিরোনাম ::
বিশ্বব্যাপী ওমিক্রন সংক্রমণ বৃদ্ধিতে আইসোলেশন মেয়াদ অর্ধেক করার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট ডেল্টা ও বিটার তুলনায় তিন গুণের বেশী পুনঃ সংক্রমন ঘটাতে পারে : গবেষণা প্রতিবেদন জাতিসংঘ ভবনের বাইরে এক বন্দুকধারী গ্রেফতার শান্তি চুক্তির পঞ্চম বার্ষিকী উপলক্ষে কলম্বিয়া সফর জাতিসংঘ মহাসচিব সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানগণের সাক্ষাৎ করোনা ভাইরাসের সংক্রমন বেড়ে যাওয়ায় অস্ট্রিয়ায় লকডাউন করোনা সংক্রমণ বাড়ায় ইউরোপের বিভিন্ন দেশে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ ভারতে নতুন করে ১০ হাজার ৩০২ জন করোনায় আক্রান্ত নভেম্বর মাসজুড়ে করাঞ্চলে কর মেলার সেবা পাবেন করদাতারা ঔপনিবেশিক আমলের ফৌজদারী কার্যবিধি যুগোপযোগী হচ্ছে

একোয়াকালচার বিজ্ঞান গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন

  • আপডেট সময় রবিবার, ২ ফেব্রুয়ারী, ২০২০

॥স্টাফ রিপোর্টার॥ মাছ চাষের উপর প্রকাশিত বই ‘একোয়াকালচার বিজ্ঞান’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে।
গত ৩১শে জানুয়ারী সন্ধ্যা ৭টার দিকে রাজধানী ঢাকার সৈয়দ নজরুল ইসলাম সম্মেলন কক্ষে বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. গওহর রিজভী।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্য বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোঃ আহসান বিন হাবিবের সভাপতিত্বে বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ বখতিয়ার ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সিস্টেমের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোঃ আবু হাদী নূর আলী খান উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান।
বইটি প্রধান লেখক হচ্ছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্য বিজ্ঞান অনুষদের একোয়াকালচার বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাহফুজুল হক, তার ছাত্র পিএইচডি শিক্ষার্থী নিয়াজ আল হাসান এবং মোঃ মেহেদী আলম ইমরান। এদের মধ্যে মোঃ মেহেদী আলম ইমরান রাজবাড়ী সদর উপজেলার দাদশী ইউনিয়নের আগমাড়াই গ্রামের বাসিন্দা। মেহেদী আলম ইমরানও একোয়াকালচার বিভাগ, বাকৃবি থেকে পিএইচডি গবেষণা সম্পন্ন করেছেন।
অনুষ্ঠানে ড. গওহর রিজভী বলেন, বাংলাদেশ মাছ চাষে বিশ্বে ৫ম। বাংলাদেশে এখনও মাছের উৎপাদন বাড়ানোর অনেক সুযোগ আছে। একোয়াকালচার বিজ্ঞান বইটির মাধ্যমে দেশে মৎস্য খাতে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে বলে আশা করছি।
একোয়াকালচার বিজ্ঞান বইয়ের প্রধান লেখক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাহফুজুল হক বলেন, পৃথিবীর প্রধান একোয়াকালচার ভিত্তিক মৎস্য উৎপাদনকারী ১৫টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান পঞ্চম। বাংলাদেশ অন্যতম একটি নেতৃস্থানীয় একোয়াকালচার উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে বিশ^ দরবারে সমাদৃত। বাংলাদেশে মোট উৎপাদিত ৪২ লক্ষ টন মাছের প্রায় ৫৭% আসে একোয়াকালচার সিস্টেম থেকে। যেমনঃ পুকুর, খাঁচা, ট্যাংক, আরএএস, ইত্যাদি।
আধুনিক মাছচাষের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মোট ১৩টি অধ্যায় নিয়ে বইটি রচনা করা হয়েছে। মাছ এবং বাঙ্গালীর নিবিড় সম্পর্ককে প্রধান্য দিয়ে বইটির প্রথম অধ্যায় রচনা করা হয়েছে এবং নাম দেয়া হয়েছে “মাছ, বাঙ্গালী এবং একোয়াকালচার”। দ্বিতীয় অধ্যায় “মৎস চাষের ইতিহাস” এ সারা বিশ্বের একোয়াকালচার প্রধান দেশসমূহের পাশাপাশি বাংলাদেশে একোয়াকালচারের বিকাশ সম্পর্কে সম্যক ধারণা দেয়া হয়েছে। সময়ের পরিক্রমায় একোয়াকালচারের বিকাশের পাশাপাশি মাছচাষের অনেক নতুন নতুন সিস্টেম বা পদ্ধতির উদ্ভাবন হয়েছে, যা বইটির তৃতীয় অধ্যায়ে আলোচনা করা হয়েছে। বইটির চতুর্থ অধ্যায়ে মাছ চাষের অবিচ্ছেদ্য উপাদান পানির বিভিন্ন নিয়ামক এবং গুরুত্বপূর্ণ কিছু নিয়ামক নিয়ে সম্প্রতি সময়ে যুক্তরাজ্যের এক্সেটার বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে আমাদের যৌথ গবেষণালব্ধ ফলাফল সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে।
পঞ্চম অধ্যায়ে আলোচ্য সিস্টেমসমূহের মধ্যে বাংলাদেশে জনপ্রিয় বিভিন্ন সিস্টেম, যেমন- পুকুর, খাঁচা, পেন, ট্যাংক, রেসওয়ে, আরএএস-এর ডিজাইন ও নির্মাণ পদ্ধতি নিয়ে সম্পাদনা করা হয়েছে। ষষ্ঠ অধ্যায়ে বাংলাদেশে অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ কিছু মাছের প্রজাতির (যেমন- ক্যাটফিশ, পার্চ, কার্প, চিংড়ি, কাঁকড়া, সমন্বিত একোয়াকালচার বিশেষকরে ইফকাস) চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে বিশদভাবে আলোচনা করা হয়েছে। যা মাঠ পর্যায়ে চাষিদের জন্য অনেক সহায়ক হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
মাছ চাষের আরেক অবিচ্ছেদ্য অংশ মাছের খাদ্য। বইটির সপ্তম অধ্যায় মাছের খাদ্যের প্রকারভেদ, মাছের খাদ্যের উপকরণ, পিয়ারসন স্কয়ার মেথড ব্যবহার করে মাছের জন্য খামারের আঙ্গিনায় খাদ্য প্রস্তুত, খাদ্য প্রয়োগের বিভিন্ন কৌশল, বাংলাদেশের মৎস খাদ্য আইন, ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়কে তুলে ধরা হয়েছে। মাছ বা চিংড়ি চাষের অনেক প্রতিবন্ধকতার মধ্যে রোগ একটি প্রধান অন্তরায়। বাংলাদেশে মাছ ও চিংড়ির দৈনন্দিন কিছু রোগ এবং এসব রোগের চিকিৎসা বিষয়ক পরামর্শ নিয়ে অষ্টম অধ্যায় “মাছ ও চিংড়ির রোগ এবং চিকিৎসা” সম্পাদনা করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক নীতিমালা অনুসরণ করে স্বাস্থ্য সম্মতভাবে মাছচাষ করে কীভাবে সার্টিফিকেশন অর্জনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বাজারে মাছ রপ্তানি করা যায় সেসব বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে নবম অধ্যায় “স্বাস্থ্যসম্মত ও নিরাপদ মৎস্য উৎপাদন” এবং দশম অধ্যায় “একোয়াকালচার সার্টিফিকেশন ও আন্তর্জাতি মৎস্য বাণিজ্য” সাজানো হয়েছে। প্রতিনিয়ত বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে একোয়াকালচারের বিকাশে কী প্রভাব পড়ছে এবং এ সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য কিছু সুপারিশমালা একাদশ অধ্যায় “ফিশারিজ ও একোয়াকালচারে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব” এ সন্নিবেশন করা হয়েছে। একোয়াকালচার বর্তমানে এক ধরনের এন্টারপ্রাইজ। অন্যান্য এন্টারপ্রাইজের মত একোয়াকালচারের বিভিন্ন ধরনের ব্যয়ের অর্থনৈতিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে চাষিদের জন্য সহজবোধ্য করার জন্য বইটির দ্বাদশ অধ্যায় “একোয়াকালচার এন্টারপ্রাইজের অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ” লেখা হয়েছে এবং বইটির শেষ অধ্যায়ে সাম্প্রতিক জাতীয় মৎস্য পরিসংখ্যান সন্নিবেশিত করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, একোয়াকালচার বিজ্ঞান বইটি শিক্ষার্থী, শিক্ষক, গবেষক, উন্নয়নকর্মী ও চাষিদের বিভিন্নভাবে কাজে লাগবে। শিক্ষার্থীরা তাদের বিষয়ভিত্তিক পড়াশুনার জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান পাবেন, গবেষকগণ নতুন নতুন গবেষণার ক্ষেত্র সম্পর্কে ধারণা পাবেন এবং চাষীরা মৎস্য চাষ সংক্রান্ত নতুন তথ্য ও বিভিন্ন সমস্যার সমাধান খুঁজে পাবেন।
কৃষিবিদদের প্রথম শ্রেণীর মর্যাদা দিয়েছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তাঁর জন্ম শতবার্ষিকীতে বইটিতে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পেরে আমরা আনন্দিত। বইটি উৎসর্গ করেছি মৎস্য বিজ্ঞান অনুষদের মুক্তিযুদ্ধে শহীদ তিনজন ছাত্র ম. জামাল হোসেন, আব্দুল মতিন খন্দকার(টিপু) এবং মনিরুল ইসলাম আকন্দের প্রতি।

নিউজটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর
error: আপনি নিউজ চুরি করছেন, চুরি করতে পারবেন না !!!!!!