শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:০৬ পূর্বাহ্ন
Logo
সংবাদ শিরোনাম ::
বিশ্বব্যাপী ওমিক্রন সংক্রমণ বৃদ্ধিতে আইসোলেশন মেয়াদ অর্ধেক করার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট ডেল্টা ও বিটার তুলনায় তিন গুণের বেশী পুনঃ সংক্রমন ঘটাতে পারে : গবেষণা প্রতিবেদন জাতিসংঘ ভবনের বাইরে এক বন্দুকধারী গ্রেফতার শান্তি চুক্তির পঞ্চম বার্ষিকী উপলক্ষে কলম্বিয়া সফর জাতিসংঘ মহাসচিব সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানগণের সাক্ষাৎ করোনা ভাইরাসের সংক্রমন বেড়ে যাওয়ায় অস্ট্রিয়ায় লকডাউন করোনা সংক্রমণ বাড়ায় ইউরোপের বিভিন্ন দেশে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ ভারতে নতুন করে ১০ হাজার ৩০২ জন করোনায় আক্রান্ত নভেম্বর মাসজুড়ে করাঞ্চলে কর মেলার সেবা পাবেন করদাতারা ঔপনিবেশিক আমলের ফৌজদারী কার্যবিধি যুগোপযোগী হচ্ছে

গোয়ালন্দে উপজেলা চেয়ারম্যানের গাড়ীতে গ্রেপ্তারকৃত ছাত্রলীগ নেতাকে জামাই আদরে আদালতে নেয়ায় বিক্ষোভ

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী, ২০২০

॥এম.এইচ আক্কাছ॥ দৌলতদিয়া ঘাটে পণ্যবাহী ট্রাক পারাপারে ফেরীর টিকেট বুকিং-এর দালালীকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় গোয়ালন্দ ঘাট থানায় দায়েরকৃত মামলায় ১৯শে জানুয়ারী রাতে পুলিশ উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মেহেদী হাসান রুবেলকে গ্রেপ্তার করে।
গতকাল ২০শে জানুয়ারী দুপুরে উপজেলা চেয়ারম্যানের সরকারী গাড়ীতে গ্রেপ্তারকৃত রুবেলকে কোর্টে নেয়ার সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বাঁধায় রাস্তায় তাকে নামিয়ে দিতে বাধ্য হন ভারপ্রাপ্ত উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান চৌধুরী আসাদ।
এ ঘটনায় ‘উপজেলা চেয়ারম্যানের সরকারী গাড়ী অনৈতিক ব্যবহার ও ভারপ্রাপ্ত উপজেলা চেয়ারম্যানের বিতর্কিত কর্মকান্ডের’ প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
এ সময় বিক্ষোভকারীরা ভারপ্রাপ্ত উপজেলা চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবী করেন এবং এ বিষয়ে গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।
জানা গেছে, যায়, গত ১৭ই জানুয়ারী রাতে দৌলতদিয়া ঘাটে পণ্যবাহী ট্রাকের ফেরীর বুকিংয়ের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গোয়ালন্দ ঘাট থানায় পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করে দু’পক্ষ। একপক্ষের মামলার এজাহারভুক্ত আসামী গোয়ালন্দ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম মন্ডল ওরফে নূরু মন্ডলের ভাগ্নে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মেহেদী হাসান রুবেলকে থানা পুলিশ গত ১৯শে জানুয়ারী রাতে দৌলতদিয়া ঘাট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে।
গতকাল ২০শে জানুয়ারী দুপুরে গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান চৌধুরী আসাদ তার সরকারী গাড়ীতে রুবেল ও তার স্কটে থাকা পুলিশ সদস্যদের নিয়ে আদালতের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। এ খবর জানাজানি হলে স্থানীয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা গোয়ালন্দ বাসস্ট্যান্ডে উপজেলা চেয়ারম্যানের গাড়ীর গতিরোধের চেষ্টা করে। এ সময় গাড়ীটি দ্রুত গতিতে চলে গেলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বেশ কয়েকটি মোটর সাইকেল নিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যানের গাড়ী ধাওয়া করে। একপর্যায়ে রাজবাড়ী সদর উপজেলার আলাদীপুর এলাকায় গিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যানের গাড়ীর নাগাল পায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় উপজেলা চেয়ারম্যান গ্রেপ্তারকৃত রুবেল ও স্কটের পুলিশ সদস্যদের নামিয়ে দিয়ে গাড়ী নিয়ে দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন।
এ ঘটনায় গোয়ালন্দের আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে যান। এ সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী মোল্লা, সাংগঠনিক সম্পাদক আমজাদ হোসেন ফকীর, গোয়ালন্দ পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সফিকুল ইসলাম সুজ্জল, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তুহিন দেওয়ান, সাধারণ সম্পাদক আবির হোসেন হৃদয় ও পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি রাতুল আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। তারা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট ভারপ্রাপ্ত উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ক্ষমতা ও সরকারী গাড়ীর অপব্যবহারের অভিযোগ করেন এবং এ বিষয়ে জরুরী ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানিয়ে লিখিত অভিযোগ করেন।
এ ব্যাপারে গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি মোঃ আশিকুর রহমান বলেন, গ্রেপ্তারকৃত আসামীকে আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলাকালে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা চেয়ারম্যান জানালেন তিনি রাজবাড়ীতে যাবেন এবং তার গাড়ীতে আসামীকে আদালতে নিয়ে যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন। তাই পুলিশের স্কটসহ আসামীকে তার গাড়ীতে তুলে দেয়া হয়। এতে আইনের কোন ব্যত্যয় ঘটেনি বলে তিনি দাবী করেন।
উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান চৌধুরী আসাদ বলেন, গ্রেপ্তারকৃত ছাত্রলীগ নেতা রুবেলকে পুলিশের স্কটসহ গোয়ালন্দ বাসস্ট্যান্ড নামিয়ে দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেখানে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মারমুখী জটলা দেখে কিছুটা দূরে গিয়ে তাদেরকে নামিয়ে দেয়া হয়। সেখান থেকে অন্য যানবাহনে তারা রাজবাড়ীর আদালতে যায়।
গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার(ভূমি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যানের সরকারী গাড়ীতে কোন আসামীকে আদালতে পৌঁছে দেয়া আইনসম্মত নয়। এ নিয়ে যে অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটেছে তা দুঃখজনক। এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর
error: আপনি নিউজ চুরি করছেন, চুরি করতে পারবেন না !!!!!!