॥মোক্তার হোসেন॥ রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে গতকাল ১৮ই মে দুপুরে জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, উপজেলা পরিষদের কর্মকর্তা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে নবাগত জেলা মোঃ শওকত আলীর মতবিনিময় সভা করেছেন।
মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন রাজবাড়ী-২ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ জিল্লুল হাকিম।
তিনি বলেন, রাজবাড়ীতে অনেক ডিসি উন্নয়ন কর্মকান্ড ও আচরণ দিয়ে জেলাবাসীকে আপন করে নিতে সক্ষম হয়েছিলেন। তিনি কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে বলেন, আমিরুল করিম, মরহুমা রাজিয়া বেগম, হানিফ উদ্দিন সরকার ও রফিকুল ইসলাম খান প্রমুখ জনপ্রিয় ডিসি ছিলেন। আমরা আপনাকেও সার্বিক সহযোগিতা করব। প্রশাসনের কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ের মধ্য দিয়েই বর্তমান সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ডকে এগিয়ে নিতে হবে।
প্রধান অতিথি এমপি মোঃ জিল্লুল হাকিম আরো বলেন, বিগত বিএনপি সরকারের সময়ে পদ্মা নদীতে বালু কাটার ফলে নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। নদী ভাঙনের ফলে অনেক ধনী মানুষ এখন অসহায় হয়ে পড়েছেন। অনেক ঘর-বাড়ী, প্রতিষ্ঠান ও ফসলী জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। এখনও পাবনা সীমান্তে বালু কাটা হচ্ছে। যার প্রভাব পড়ছে অত্র এলাকায়। তাই যে কোনো মূল্যে নদীতে বালু কাটা বন্ধ করতে হবে।
রাজবাড়ীর নবাগত জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী বলেন, রাজবাড়ীতে যোগদান করেই এখানকার দু’টি সমস্যা উপলব্ধি করেছি। যার একটি হলো নদী ভাঙন, অন্যটি বিদ্যুৎ সমস্যা।
তিনি বলেন, নদী ভাঙনের ফলে রাজবাড়ী শহর রক্ষা বাঁধ তথা রাজবাড়ী শহর ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। নদীতে বালু কাটা বন্ধ এবং নদী ভাঙন রোধে স্থায়ী ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী বলেন, বর্তমান সরকার বিদ্যুৎ বিভাগে অভাবনীয় সাফল্য অর্জণ করেছে। কিন্তু জরাজীর্ণ বিদ্যুৎ লাইনের কারণে মানুষ বিদ্যুতের সুফল পুরোপুরি ভোগ করতে পারছে না। বিদ্যুতের জরাজীর্ণ লাইন মেরামতের গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, শিক্ষা ক্ষেত্রে আরো উন্নয়ন ঘটাতে হবে। বর্তমানের উন্নত অবস্থা থেকে উন্নততর অবস্থায় নিয়ে যেতে হবে। মাদক ব্যবসার সাথে যারা জড়িত আছে তাদের মুখোশ উন্মোচন করে দিতে হবে। যারা মাদক ব্যবসা করে তাদেরকে সামাজিক ভাবে বয়কট করতে হবে। এ লক্ষ্যে জনমত সৃষ্টির গুরুত্বারোপ করেন তিনি। জনপ্রতিনিধি ও কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে বর্তমান সরকারের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার জন্য সকল শ্রেণি পেশার মানুষের আন্তরিক সহযোগিতা প্রত্যাশা করে তিনি বলেন, এখানে সুনাম অর্জন করতে পারি আর না পারি তবে দুর্নাম হয় এমন কাজ আমি করব না।
পাংশা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম নজরুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে পাংশা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ ফরিদ হাসান ওদুদ, পাংশা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পাংশা সরকারী কলেজের উপাধ্যক্ষ একেএম শফিকুল মোরশেদ আরুজ, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোস্তফা মাহমুদ হেনা মুন্সী, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহিদা আহম্মেদ ও পাংশা থানার অফিসার্স ইনচার্জ মোঃ মোফাজ্জেল হোসেন বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে মাছপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোন্দকার সাইফুল ইসলাম(বুড়ো), পাংশা উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা খোন্দকার সফিকুল ইসলাম ও পাংশা প্রেসক্লাবের সভাপতি মোঃ মোক্তার হোসেন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসকের স্টাফ অফিসার ও সহকারী কমিশনার সাদিয়া শাহনাজ খানম ও মোঃ মহিউদ্দিন, এয়াকুব আলী চেীধুরী স্মৃতি পাঠাগারের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মুহম্মদ আবদুল ওয়াহাব, মুক্তিযোদ্ধা খান আব্দুল হাই, পাংশা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার চাঁদ আলী খান, পাংশা শাহজুঁই(রাঃ) কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মুহাঃ আবু মুসা আশয়ারী, পাংশা সিদ্দিকীয়া ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মোঃ নুরুল ইসলাম, আইডিয়াল গার্লস কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ আব্দুল মান্নানসহ ইউপি চেয়ারম্যানবৃন্দ, উপজেলা পরিষদের কর্মকর্তাবৃন্দ ও স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণি পেশার বিশিষ্ট ব্যক্তিগণ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে নবাগত জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলীকে উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা ও শুভেচ্ছা স্মারক ক্রেষ্ট প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন পাংশা উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা শ্যামল কুমার বিশ্বাস।