॥স্টাফ রিপোর্টার॥ রাজবাড়ীর নবাগত জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী গত ১১ই মে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্বভার গ্রহণের পর দৌলতদিয়া ফেরী ঘাট এলাকার নদী ভাঙ্গন পরিদর্শন করে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবকে পত্র প্রদান করেছেন।
উক্ত পত্রে ফেরী ঘাটের প্রতিরক্ষার জন্য প্রাক্কলিত ব্যয় ১৪ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেওয়াসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলায় অবস্থিত দৌলতদিয়া ফেরী ঘাট বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল এবং দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের জেলা সমূহের জনসাধারণের সুষ্ঠু যাতায়াত, দৌলতদিয়া-ফরিদপুর-মাগুরা-ঝিনাইদহ-যশোর-খুলনা-মংলা(দিগরাজ) জাতীয় মহাসড়কের (ঘ-৭)-এর প্রবেশদ্বার এবং রাজধানী ঢাকাসহ স্থলবন্দর বেনাপোল ও বন্দর নগরী চট্টগ্রামের সাথে সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করে আসছে। এ রুটে প্রতিদিন ১৮টি ফেরী চলাচল করে থাকে। এ ঘাট দিয়ে প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক যানবাহন ও যাত্রীসাধারণ পারাপার হয়ে থাকে। পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর, ঈদ-উল-আযহা এবং বিভিন্ন পূজা-পার্বনসহ এতদঅঞ্চলের বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে অনুষ্ঠিত ওরশ মাহফিলের সময়ও এ ঘাটে বাড়তি যানবাহন ও যাত্রীসাধারণের পারাপারের চাপ থাকে। কিন্তু দৌলতদিয়া ফেরী ঘাটের ৪টি ঘাটই বর্তমানে নদী ভাঙ্গনের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। তন্মধ্যে ৩ ও ৪ নং ঘাট যে কোন সময় নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে। যদিও ফেরী চলাচল স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে বিআইডব্লিউটিএ এখানে কিছু প্রতিরক্ষামূলক কাজ বাস্তবায়ন করছে। যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল বলে স্থানীয় বিশিষ্টজনেরা মনে করেন। বর্তমানে নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় ৩ ও ৪নং ঘাট হুমকীর সম্মুখীন। আসন্ন ঈদ-উল-ফিতরের প্রাক্কালে ঘাট দুইটি নদী গর্ভে বিলীন হলে যানবাহনসমূহের ফেরী পারাপারে বিঘœ সৃষ্টি হয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থায় মারাত্মক বিপর্যয় দেখা দিবে। এর ফলে জন অসন্তোষের সৃষ্টি হয়ে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির উদ্ভব হতে পারে। বিরাজিত অবস্থায় দৌলতদিয়া ফেরী ঘাটসহ ঘাট এলাকার কয়েকটি গ্রামের জনসাধারণের বসতবাড়ী রক্ষার্থে ফেরী ঘাট ও তদসংলগ্ন প্রায় ১.০৫০ কিঃ মিঃ এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক জরুরী প্রতিরক্ষা কাজ বাস্তবায়ন করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। এ কাজ বাস্তবায়নে প্রায় ১৪.৫০ কোটি টাকার প্রয়োজন হবে বলে নির্বাহী প্রকৌশলী, রাজবাড়ী পাউবো জানিয়েছেন। বিষয়টি জেলা ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট সেলের একাধিক সভায় ব্যাপক আলোচনান্তে ঘাটের স্থায়ীত্ব রক্ষায় আগামী বর্ষা মৌসুম এবং আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরের পূর্বেই ফেরী ঘাট ও তদসংলগ্ন প্রায় ১.০৫০ কিঃ মিঃ এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক জরুরী প্রতিরক্ষা কাজ বাস্তবায়ন করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবরে পত্র প্রেরণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এমতাবস্থায় দৌলতদিয়া ফেরী ঘাট ও তদসংলগ্ন প্রায় ১.০৫০ কিঃ মিঃ এলাকা নদী ভাঙ্গন হতে রক্ষার্থে ঘাট এলাকায় প্রতিরক্ষা কাজ বাস্তবায়নের জন্য প্রাক্কলিত ব্যয় ১৪.৫০ কোটি টাকা অর্থ বরাদ্দ এবং অতি জরুরী ভিত্তিতে প্রতিরক্ষা কাজ বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা সবিনয় অনুরোধ জানানো হয়েছে।
পত্রের অনুলিপি মন্ত্রীপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব, ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার ও বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক, রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলী, সংরক্ষিত মহিলা সংসদ সদস্য কামরুন নাহার চৌধুরী লাভলী, গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী প্রকৌশলী, রাজবাড়ী প ও ব বিভাগ, বাপাউবো, রাজবাড়ীকে প্রদান করা হয়েছে।