॥বালিয়াকান্দি প্রতিনিধি॥ রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের আলোকদিয়া গ্রামের গোবিন্দ বিশ্বাসের বাড়ীর সর্বজনীন দুর্গা মন্দিরে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ৪ শতাধিক প্রতিমা নিয়ে বিশাল আয়োজনে দুর্গা পূজার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে।
গত ৩ মাসেরও অধিক সময় ধরে ২৫-৩০ জন শিল্পী ৪শত দেব-দেবীর প্রতিমা তৈরীর কাজ করে চলেছে। ইতিমধ্যে প্রতিমা তৈরীর কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর এখন রঙের কাজ করা হচ্ছে। বিপুল সংখ্যক প্রতিমা তৈরীর পাশাপাশি ৫ সহ¯্রাধিক বাঁশ দিয়ে ৭টি স্থানে পূজা মন্ডপ তৈরী করা হয়েছে।
আয়োজকরা জানান, এবারের পূজার আকর্ষণের মধ্যে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মায়াপুরের ইসকন পঞ্চতন্ত্র মন্দিরের আদলে একটি পূজা মন্ডপ তৈরী করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুর বৃন্দাবন যাত্রা, রামানন্দের নিকট মহাপ্রভুর ভাগবত শ্রবণ-স্বরূপ দর্শন, ঝাড়খন্ড বনের জীব-জন্তুর কাছ থেকে বিদায় নেয়া এবং বৃন্দাবনে পৌঁছে মহন্তের সঙ্গে সেবারত অবস্থার কাহিনী তুলে ধরা হবে। এছাড়াও থাকছে কুঞ্জবনের শ্রীকৃষ্ণের রাসলীলা কাহিনী, ভগবান শ্রীরামচন্দ্রের দর্শন, রামভক্ত হনুমান, মহাসমুদ্রে নারায়ণ, সবার উপরে শিব, মহাদেবের তৃতীয় নয়ন থেকে জলন্ধরের সৃষ্টি, অসুর-দেবতাদের যুদ্ধ, জলন্ধর বধ, জলপরী, হাতি, ময়ুর, মৎস্য কন্যা, জলের ফোয়ারা ইত্যাদি। বর্তমানে পূজা মন্ডপ তৈরীর কাজ চলছে। প্রতিমার মাটির কাজ প্রায় শেষের পথে। আগামী সপ্তাহে রং-তুলির কাজ আরম্ভ হবে।
পূজা কমিটির সভাপতি গোবিন্দ বিশ্বাস জানান, তারা আশা করছেন এবারও দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যাপক ভক্ত-দর্শনার্থীর সমাগম হবে। তাদের প্রস্তুতিও জোরদারভাবে চলছে। সুষ্ঠুভাবে দুর্গোৎসব সম্পন্ন করতে তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
বালিয়াকান্দি উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি রামগোপাল চট্টোপাধ্যায় জানান, এ বছর বালিয়াকান্দি উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে ১৪৬টি দুর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হবে। মন্দিরগুলোতে প্রতিমা তৈরীসহ যাবতীয় প্রস্তুতির কাজ চলছে।
বালিয়াকান্দি থানার ওসি একেএম আজমল হুদা জানান, এবারের দুর্গা পূজা শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা বিশেষভাবে তৎপর থাকবে। জামালপুরের বৃহৎ পূজাটির ব্যাপারে বিশেষ নজর দেয়া হবে। কেউ কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাতে চাইলে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুহ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইশরাত জাহান জানান, শান্তিপূর্ণ শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপনে প্রশাসনের ব্যাপক তৎপরতা ও নজরদারী থাকবে। নির্বিঘেœ পূজা সম্পন্ন করার ব্যাপারে আয়োজকদের যাবতীয় সহযোগিতা করা হবে।