॥সোহেল মিয়া॥ শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূল্যে বিতরণের জন্য বরাদ্ধকৃত সরকারী বই নিয়ে বিপাকে পড়েছে রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার বই বিতরণ ও সংরক্ষণ কমিটি।
বই সংরক্ষণের জন্য নির্দিষ্ট কোন গুদাম না থাকায় বিতরণের নির্দিষ্ট সময়ের অনেক আগেই বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের হাতে বই তুলে দিতে হচ্ছে তাদের। এতে বই নষ্ট হওয়ার বা হারিয়ে যাওয়ার আশংকা রয়েছে। এ অবস্থায় শিক্ষা বিভাগ ও প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষ থেকে উপজেলাতে বই সংরক্ষণের জন্য গুদাম নির্মাণের দাবী উঠেছে। প্রশাসনও বলছে, খুব শীঘ্রই একটি গোডাউন তৈরীর প্রস্তাবনা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে।
জানা গেছে, সরকার কর্তৃক বিনামূল্যে বিতরণের বই এরই মধ্যে বালিয়াকান্দি উপজেলাতে আসা শুরু করেছে। কিন্তু উপজেলায় বই সংরক্ষণের জন্য কোন গুদাম না থাকার কারণে বইগুলো আপাতত বালিয়াকান্দি সরকারী পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের লাইব্রেরী কক্ষে রাখা হচ্ছে। কক্ষটি ভরে গেলেই কর্তৃপক্ষ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্ধকৃত বিনামূল্যের বইগুলো প্রতিষ্ঠান প্রধানদের কাছে বুঝে দিচ্ছে। গত ২৪শে সেপ্টেম্বর সকালে বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইশরাত জাহান এবং উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কাজী এজাজ কায়ছারের উপস্থিতিতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের কাছে বই বুঝে দেয়া হয়।
বালিয়াকান্দি উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার মিয়াদ হোসেন বলেন, উপজেলাতে মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুল রয়েছে ৩০টি আর মাদ্রাসা রয়েছে ১২টি। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের জন্য ২ লাখ ৬৫ হাজার ৩০০টি বই বরাদ্ধ হয়েছে। কিন্তু এতো বই সংরক্ষণের জন্য আমাদের কোন জায়গা নেই। পাইলট সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের যে কক্ষটি আমরা ব্যবহার করছি সেটিতে ১০ থেকে ১৫ হাজার বই রাখা সম্ভব। তাই আমরা কক্ষটি ভরে গেলেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের ডেকে তাদের কাছে বই বুঝে দিচ্ছি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কাজী এজাজ কায়ছার বলেন, বছরের প্রথম দিন ১লা জানুয়ারী শিক্ষার্থীরা বিনামূল্যের নতুন বই হাতে পাবে। নির্দিষ্ট সময়ে যাতে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই পৌঁছে সেই লক্ষ্যে সরকার এরই মধ্যে প্রতিটি উপজেলায় বই পাঠানো শুরু করেছে। কিন্তু আমাদের বই সংরক্ষণের জন্য কোন গুদাম না থাকায় আমরা আগেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের কাছে তাদের বিদ্যালয়ের বই তুলে দিচ্ছি। এতো আগে বিদ্যালয়ে বই পাঠানোয় কিছুটা ঝুঁকি থাকে।
উপজেলার বই বিতরণ ও সংরক্ষণ কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইশরাত জাহান বলেন, এটা বড় ধরনের একটা সমস্যা। প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক পর্যায়ের সরকারের বিনামূল্যের এতোগুলো বই রাখার জন্য এখানে কোন গোডাউন নেই। আমি এখানকার পুরনো ভবনটি ভেঙ্গে সেখানে একটি গোডাউন তৈরীর জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ পাঠাবো।