॥স্টাফ রিপোর্টার॥ বাংলাদেশের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যালঘু না ভাবার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন,সংখ্যালঘু বলে নিজেদের খাটো করবেন না। অন্তত আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় থাকে আমরা ভাগবাটোয়ারা করে দেখি না। এই দেশ আপনাদের, এই মাটি আপনাদের, এই জন্মভূমি আপনাদের। বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আয়োজিত জন্মাষ্টমীর শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সব সময় বলি, ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার। বঙ্গবন্ধু আমাদের যে সংবিধান দিয়ে গেছেন সেখানেও কিন্তু ধর্ম নিরপেক্ষতার কথা বলা রয়েছে। ধর্ম নিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা নয়। আমি আপনাদের প্রশ্ন করতে চাই, আপনারা কি এই রাষ্ট্রের নাগরিক না? তাহলে নিজেদের ছোট করে দেখবেন কেন? তিনি বলেন, এই দেশে সব ধর্মের স্বাধীনতা থাকবে। আমাদের সংবিধানের যে চার মূলনীতি সেখানেও তাই বলা আছে। আমাদের ধর্মেও তাই বলা হয়েছে, যার যার ধর্ম সে সে পালন করবে। যে কারণে আমি যখন মসজিদভিত্তিক শিক্ষা বাস্তবায়নের চেষ্টা করলাম, তখন মন্দিরভিত্তিক শিক্ষাও চালু করি। ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি প্রাকপ্রথমিক শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে। আমরা ইমামদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নিয়েছি। সেই সঙ্গে পুরহিত- সেবায়েতের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। খ্রিষ্টান ধর্ম, বৌদ্ধ ধর্ম, হিন্দু ধর্ম কল্যাণ ট্রাস্ট করে দিয়েছি আমরা। ট্রাস্টের পাশাপাশি শারদীয় দূর্গা পূজায় প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে আলাদা করে ২ কোটি টাকা দিয়ে আসছি। আমি আহ্বান জানাতে চাই, আপনারা অনেকেই অর্থশালী আছেন নিজেরাও যদি ট্রাস্টে অনুদান দেন তাহলে অর্থের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। সেই টাকা দিয়ে অসুস্থ-
দরিদ্রদের সহায়তা করা যেতে পারে। শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু এ দেশের মানুষের সঙ্গে মিশে গিয়েছিলেন। তাদের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করেছেন।
বাবার পাশে ছায়ার মতো ছিলেন আমার মা। তার নিজের জীবনেও কোনো চাহিদা ছিল না। দাদা-দাদী বাবাকে সমর্থন করেছেন। ৭৫ এ আমরা আপনজন হারিয়েছিলাম, বাঙালি হারিয়েছিল সব আশা-ভরসা। লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। সেই স্বাধীনতাকে ব্যর্থ করে দেওয়া। বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চেয়েছিল এই সব খুনী ও স্বাধীনতাবিরোধী যারা পরবর্তীতে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছিল। বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করে আমি কাজ শুরু করেছিলাম। আজ এ দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে সক্ষম হয়েছি। তাদের আশার আলো দেখাতে, তাদের ভেতরে আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি। আজ তারা উন্নত জীবনের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে। এই দেশ আপনাদের। ১৯৯১ সালে মন্দির ভাঙা হয়েছে। আমরা ছুটি গিয়েছি। ঢাকার মন্দিরগুলোও ভেঙে দেওয়া হয়েছিল। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পরে বৌদ্ধ ধর্মের লোকজনও রেহাই পায়নি। বিএনপির কাজই ছিল ধ্বংসাত্মক। সব সময় বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা করেছে বলেন প্রধানমন্ত্রী।