॥কবির হোসেন॥ রাজবাড়ী সদর হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা গতকাল ৩০শে মার্চ সকাল ১০টায় সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।
কমিটির সভাপতি ও রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলীর সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য কামরুন নাহার চৌধুরী, সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ রহিম বক্স, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফকীর আব্দুল জব্বার, ডিডিএলজি আব্দুল কাদের শেখ, রাজবাড়ী পৌরসভার মেয়র মহম্মদ আলী চৌধুরী, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডঃ এম.এ খালেক, জেলা বিএমএ’র সভাপতি ডাঃ গোলাম মোস্তফা, গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ জাকির হোসেন, ফরিদপুর বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এইচ.ই.ডি মীর মোঃ আব্দুল হান্নান, এডঃ দেবাহুতি চক্রবর্তী, ক্লিনিক সমিতির সভাপতি প্রদীপ্ত চক্রবর্তী কান্ত প্রমুখ। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে হাসপাতালের আরএমও ডাঃ সুশীল কুমার রায়, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হেদায়েত আলী সোহরাব, শহর সমাজসেবা অফিসার মাজহারুল ইসলাম, ডিবি’র ওসি মোঃ ওবাইদুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সভায় বক্তাগণ সদর হাসপাতালের উন্নয়নে আলোচনা করেন ও বিভিন্ন প্রকার দাবী জানান।
এডঃ দেবাহুতি চক্রবর্তী বলেন, এই সদর হাসপাতালের ইমার্জেন্সী বিভাগে বিনা চিকিৎসায় আমার বাবা মারা গিয়েছিলেন। সিরিয়াস কোন রোগী এলে তাকে ভর্তি না করে প্রাথমিক চিকিৎসা না দিয়ে রেফার করা হয় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এতে দেখা যায় পথেই রোগী মারা যায়। সদর হাসপাতালের ইমার্জেন্সীতে দক্ষ ডাক্তারের অভাব আজও রয়েছে। তিনি অবিলম্বে এ দুরবস্থা দূর করার দাবী জানান।
জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফকীর আব্দুল জব্বার বলেন, সরকারী হাসপাতালের ডাক্তারগণ ডেপুটিটেশনে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে গিয়ে সেবা দেন। তিনি তার নিজের এলাকার গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নাম উল্লেখ করে বলেন, সেখানে ৫জন চিকিৎসক রয়েছে কিন্তু তারা ডেপুটেশনে অন্য মেডিকেল কলেজে গিয়ে সার্ভিস করছে আর মাসিক বেতন এখান থেকে তুলে নিচ্ছে। হাইওয়ের পাশে অবস্থিত গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যে কোন দূর্ঘটনার রোগী এলে সেবা পায় না ডাক্তারের অভাবে। তাই তিনি ডেপুটেশনে যাওয়া ডাক্তারদের বেতন না দেওয়ার জোর দাবী জানান।
সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য কামরুন নাহার চৌধুরী লাভলী বলেন, প্রতি মাসে অবশ্যই হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির মাসিক মিটিং করতে হবে। যে সকল ডাক্তার অনিয়মিত তাদের তালিকা আমাদের দিবেন। ডেপুটেশনে যে সকল ডাক্তার রয়েছেন তাদের ব্যাপারে সিভিল সার্জনকে সঠিক ব্যবস্থা নিতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে সংসদ সদস্য আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলী বলেন, রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে যে সমস্যা রয়েছে তা অবিলম্বে দূর করতে হবে। হাসপাতালের উন্নয়ন মূলক কাজ ঠিকাদারদের সঠিকভাবে করতে হবে।
তিনি হেদায়েত আলী সোহরাবকে সভাপতি করে ৭সদস্য বিশিষ্ট কমিটি করতে বলেন যারা হাসপাতালের উন্নয়ন মূলক কাজগুলো তদারকি করবে। তিনি নিয়মিত মাসিক সভা করার উপর গুরুত্বারোপ করেন এবং আগামী ২৬শে এপ্রিল পরবর্তী সভার দিন ধার্য্য করেন।
তিনি আরো বলেন, সরকার ইতিপূর্বে ৬হাজার ডাক্তার নিয়োগ দিয়েছিল, তারা আবার চলে যায় ট্রেনিংয়ের জন্য। ড্যাব, বিএমএ, স্বাচিপের রাজনীতির কারণে ডাক্তাররা স্থায়ীভাবে সেবা দিতে পারে না। মিটিং শেষে সংরক্ষিত মহিলা সংসদ সদস্য কামরুন নাহার চৌধুরী লাভলী হাসপাতাল ঘুরে দেখেন।