॥রফিকুল ইসলাম॥ পানির অভাবে পাট জাগ দেয়া নিয়ে রাজবাড়ী জেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকরা বিপাকে পড়েছে। জেলার কৃষকদের প্রধান কৃষি ফসলই হচ্ছে পাট। পানির অভাবে পাটের সোনালী আঁশ এখন যেন কালো আঁশে পরিণত হয়েছে।
রাজবাড়ী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ ফজলুর রহমান জানান, ‘জেলায় চলতি বছর ৪৭ হাজার ১২০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। এবার পাটের ফলনও ভালো হয়েছে।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বৃষ্টির ভরা মৌসুমেও খাল-বিল-ডোবায় পানি না থাকায় রাজবাড়ী সদর উপজেলার খানখানাপুর, পাঁচুরিয়া, মূলঘর, বানীবহ, সুলতানপুর, বসন্তপুর, মিজানপুর, খানগঞ্জ, চন্দনী, কালুখালী উপজেলার মৃগী, সাওরাইল, রতনদিয়া, পাংশা উপজেলার মাছপাড়া, বাবুপাড়া, বালিয়াকান্দি উপজেলার বহরপুর, ইসলামপুর, নারুয়া, জঙ্গল, জামালপুর, নবাবপুর ইউনিয়নের হাজার হাজার পাটচাষী বিপাকে পড়েছে।
বসন্তপুর ইউনিয়নের খালিশা সোনাপুর গ্রামের কৃষক কালাম বাউল জানান, ১বিঘা জমির পাট শ্যালো মেশিন দিয়ে পানি উত্তোলন করে জাগ দিতে ১হাজার থেকে ১২শ’ টাকা খরচ হচ্ছে। নিরুপায় হয়ে অনেক কৃষকই ৮/১০ কিঃ মিঃ দূরে ভ্যান-নসিমন-ঘোড়ার গাড়ীযোগে মরা পদ্মা নদীতে নিয়ে পাটের জাগ দিচ্ছে। একজন পাট কাটা শ্রমিকের মজুরী প্রতিদিন ৬/৭শত টাকা। বাজারে প্রতি মণ পাট ২হাজার থেকে ২২শত টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এই মূল্যে পাট বিক্রি করায় খরচের টাকাও পাওয়া যাচ্ছে না।
এদিকে সরকারী পাট ক্রয় কেন্দ্রগুলো এখনো হাত গুটিয়ে বসে আছে। গত বছর কোটি কোটি টাকার পাট বাকীতে ক্রয় করলেও এখনো ব্যবসায়ীদের টাকা পরিশোধ না করায় ব্যবসায়ীরা পাট ক্রয়ের সামর্থ্য হারিয়ে ফেলেছে। ব্যবসায়ীরা পাট ক্রয় না করায় পাটের ভরা মৌসুমেও কম দামে পাট বিক্রি হচ্ছে। সামনে ঈদ হলেও কৃষকের মুখে হাসি নেই।