রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:৩২ অপরাহ্ন
Logo
সংবাদ শিরোনাম ::
বিশ্বব্যাপী ওমিক্রন সংক্রমণ বৃদ্ধিতে আইসোলেশন মেয়াদ অর্ধেক করার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট ডেল্টা ও বিটার তুলনায় তিন গুণের বেশী পুনঃ সংক্রমন ঘটাতে পারে : গবেষণা প্রতিবেদন জাতিসংঘ ভবনের বাইরে এক বন্দুকধারী গ্রেফতার শান্তি চুক্তির পঞ্চম বার্ষিকী উপলক্ষে কলম্বিয়া সফর জাতিসংঘ মহাসচিব সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানগণের সাক্ষাৎ করোনা ভাইরাসের সংক্রমন বেড়ে যাওয়ায় অস্ট্রিয়ায় লকডাউন করোনা সংক্রমণ বাড়ায় ইউরোপের বিভিন্ন দেশে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ ভারতে নতুন করে ১০ হাজার ৩০২ জন করোনায় আক্রান্ত নভেম্বর মাসজুড়ে করাঞ্চলে কর মেলার সেবা পাবেন করদাতারা ঔপনিবেশিক আমলের ফৌজদারী কার্যবিধি যুগোপযোগী হচ্ছে

আজ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী

  • আপডেট সময় রবিবার, ২৩ জুন, ২০১৯

॥স্টাফ রিপোর্টার॥ মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশের স্বাধীনতা অর্জনে নেতৃত্বদানকারী দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আজ ৭০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী।
১৯৪৯ সালের ২৩শে জুন পুরনো ঢাকার ঐতিহ্যবাহী রোজ গার্ডেনে এই রাজনৈতিক দলটি প্রতিষ্ঠিত হয়।
পরবর্তীতে দেশের অন্যতম প্রাচীন এই দলটি প্রতিটি গণতান্ত্রিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে এদেশের গণমানুষের সংগঠনে পরিণত হয়।
যথাযথ মর্যাদায় দিবসটি পালন উপলক্ষে আওয়ামী লীগ বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। রাজধানী এবং জেলা-উপজেলা পর্যায়ে এসব কর্মসূচি পালন করা হবে। প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে ঢাকায় কর্মসূচি শুরু হবে আজ ২৩শে জুন সকালে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের মধ্য দিয়ে।
এছাড়াও দু’দিনব্যাপী কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ঃ আজ ২৩শে জুন সকালে সূর্যোদয় কালে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও সারাদেশের সব কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন। সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে বঙ্গবন্ধু ভবনে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে এবং সকাল ১১টায় টুঙ্গীপাড়ায় দলের কেন্দ্রীয় সংসদের পক্ষ থেকে জাতির জনকের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন।
পরের দিন ২৪শে জুন সোমবার বিকাল ৪চায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে আলোচনা সভা। এতে সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ এবং বিশিষ্টজনেরা মনে করেন, আওয়ামী লীগের অর্জন পাকিস্তান আমলের গণতান্ত্রিক মানুষের অর্জন, এই দলের অর্জন বাংলাদেশের অর্জন। জাতির জন্য যখন যা প্রয়োজন মনে করেছে, সেটি বাস্তবায়ন করেছে এ দলটি।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য এবং কেন্দ্রীয় ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম বলেন, আওয়ামী লীগ শুধু দেশের পুরনো ও সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দলই নয়, এটি গণতন্ত্র ও অসাম্প্রদায়িক ভাবাদর্শের মূলধারাও। প্রতিষ্ঠা থেকে শুরু করে এই পর্যন্ত নানা আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ আমাদের সমাজ-রাজনীতির এ ধারাকে নিরবচ্ছিন্নভাবে এগিয়ে নিচ্ছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বাঙালির জাতীয় মুক্তির সংগ্রামে নেতৃত্বদানকারী অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দল। আর অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের গড়ার কাজ প্রথম শুরু করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
তিনি এ দলটিকে দেশের অন্যতম প্রাচীন সংগঠন হিসাবে আখ্যায়িত করে বলেন, ভাষা, স্বাধিকার, গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা অর্জনে মহোত্তম গৌরবে অভিষিক্ত আওয়ামী লীগের সাত দশকের অভিযাত্রায় শান্তি, সমৃদ্ধি ও দিন বদলের লক্ষ্যে অবিচল বাঙালি জাতির মুক্তির দিশারী।
ইতিহাসবিদ, লেখক ও লোক সাহিত্যিক শামসুজ্জামান খান এই দলকে মূল্যায়ন করে বলেছেন, আওয়ামী লীগ ‘পাকিস্তান’ নামের অবৈজ্ঞানিক এবং ভৌগোলিক ও নৃতাত্ত্বিকভাবে এক উদ্ভট রাষ্ট্রের পূর্ব বাংলার বাঙালি জনগোষ্ঠী ও অন্যান্য ক্ষুদ্র জাতিসত্তাকে অবজ্ঞায়, অবহেলায় ও ঔপনিবেশিক কায়দায় শোষণ-পীড়ন-দমন ও ‘দাবিয়ে রাখা’র বিরুদ্ধে লাগাতার প্রতিবাদ, প্রতিরোধ এবং গণসংগ্রামের মধ্যদিয়ে গড়ে ওঠা বিপুল জনপ্রিয় একটি রাজনৈতিক দল। এই দলের নেতা-কর্মীদের ত্যাগ-তিতিক্ষা ও অঙ্গীকারদীপ্ত সংগ্রামী ভূমিকা ইতিহাস বিদিত ।
বিশিষ্টজনদের মতে দলটির বর্তমান সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিকে সফলতার নতুন পথ দেখিয়েছেন, দেশের টাকায় পদ্মাসেতু নির্মাণ শুরু করার সুবাদে বাংলাদেশের মর্যাদা আন্তর্জাতিকভাবে সৃষ্টি করেছে এবং আমরা মর্যাদাশীল জাতিতে রূপান্তরিত হয়েছি।
পুরনো ঢাকার ঐতিহ্যবাহী রোজ গার্ডেনে আওয়ামী মুসলিম লীগ নামে এই দলের আত্মপ্রকাশ ঘটলেও পরে তা শুধু আওয়ামী লীগ নাম নিয়ে অসাম্প্রদায়িক সংগঠন হিসেবে বিকাশ লাভ করে।
প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এ দেশে পাকিস্তানী সামরিক শাসন, জুলুম, অত্যাচার-নির্যাতন ও শোষণের বিরুদ্ধে সকল আন্দোলন-সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে এ দলটি।
’৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ’৫৪-এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, আইয়ুবের সামরিক শাসন-বিরোধী আন্দোলন, ’৬৪-এর দাঙ্গার পর সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠা, ’৬৬-এর ছয় দফা আন্দোলন ও ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের পথ বেয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের ২৪ বছরের আপোষহীন সংগ্রাম-লড়াই এবং ১৯৭১ সালের নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধ তথা সশস্ত্র জনযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা লাভ করে।
ওই বছরের ১৬ই ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের মধ্যদিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় বাঙালির হাজার বছরের লালিত স্বপ্নের ফসল স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ।
পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগকে ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার ব্যর্থ চেষ্টা হলেও দীর্ঘ একুশ বছর লড়াই সংগ্রামের মাধ্যমে ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে দলটির প্রধান শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জয়ী হয়ে ২৩শে জুন দলটি ক্ষমতায় ফিরে আসে।
২০০১ এবং পরে ২০০৭ সালের ১১ই জানুয়ারীর পর আর এক দফা বিপর্যয় কাটিয়ে ২০০৮ সালের ২৯শে ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে তিন-চতুর্থাংশ আসনে বিজয়ী হয়ে আবারো রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পায় আওয়ামী লীগ। পরবর্তীতে ২০১৪ সালের ৫ই জানুযারী এবং ২০১৮ এর ৩০শে ডিসেম্বর সাধারণ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে বাংলাদেশের ইতিহাসে টানা তিন মেয়াদে সরকার পরিচালনা করছে এ দলটি।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী গতকাল শনিবার এক বিবৃতিতে দলের গৌরবোজ্জ্বল ৭০ বছর পূর্তিতে গৃহিত কর্মসূচি পালনের জন্য আওয়ামী লীগ, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সকল জেলা, উপজেলাসহ সকল স্তরের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর
error: আপনি নিউজ চুরি করছেন, চুরি করতে পারবেন না !!!!!!