॥আসহাবুল ইয়ামিন রয়েন॥ রমজান মাসের পবিত্রতা রক্ষা, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির মূল্য নিয়ন্ত্রণ এবং নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে রাজবাড়ী জেলা প্রশাসনের আয়োজনে গতকাল ২রা মে সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এক প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলীর সভাপতিত্বে সভায় রাজবাড়ী পৌরসভার মেয়র মহম্মদ আলী চৌধুরী, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডঃ ইমদাদুল হক বিশ্বাস, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাকিব খান, রাজবাড়ী বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আব্দুল মতিন মন্ডল, কৃষি বিপনন অধিদপ্তরের বাজার মনিটরিং অফিসার আকমল হোসেন, হোটেল-রেস্টুরেন্ট মালিক সমিতির সভাপতি নূরুন্নবী বাবু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এ সময় রাজবাড়ী সরকারী আদর্শ মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর দিলীপ কুমার কর, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) মোহাম্মদ আশেক হাসান, জেলা তথ্য অফিসার তাহমিনা আক্তার, জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনারগণ, বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের কর্মকর্তাগণ এবং রাজবাড়ীর বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী বলেন, দেশের বিভিন্ন বড় বড় শহরে পবিত্র রমজান মাসকে সামনে রেখে দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখা ও ভেজাল, বাসী-পঁচা খাবার বিক্রি বন্ধে বর্তমানে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে জেল-জরিমানা করা হচ্ছে। কিন্তু রাজবাড়ী একটি ছোট জেলা এবং এখানকার ব্যবসায়ীরা বড় ধরণের ব্যবসায়ী না হওয়ায় তারা যাতে ভেজাল, বাসী-পঁচা দুর্গন্ধযুক্ত পণ্য বিক্রি না করে সে জন্য তাদেরকে আগেই সতর্ক করার জন্য আজকের এই সভার আয়োজন করা হয়েছে।
রমজানে মাসের বিভিন্ন ইফতার সামগ্রী বিশেষ করে জিলাপীতে ক্ষতিকারক রং ও ছোলা-পেঁয়াজু ভাজতে ব্যবহার করা তেল পুনরায় ব্যবহার, ফলমূল, শাক-সবজি ও মাছে ক্ষতিকারক রাসায়নিক ব্যবহার, গুড়ে ভেজাল, পঁচা-বাসী খাবার বিক্রি করা যাবে না। হোটেল-রেঁস্তোরায় অপরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশে খাবার বিক্রি এবং দিনের বেলায় কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে। ভোক্তাদের ঠকিয়ে বেশী মূল্যে পণ্য বিক্রি করা যাবে না। জেলা প্রশাসন বিষয়টি মনিটরিং করবে এবং এসবের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। যেহেতু নতুন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন এসবের বিরুদ্ধে অত্যন্ত কঠোর এবং জরিমানার পরিমাণও অনেক বেশী। তাই ব্যবসায়ীদের আইন মেনে ব্যবসা পরিচালনা এবং হোটেল রেঁস্তোরাগুলোতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বা পঁচা-বাসী খাবার বিক্রি করা যাবে না।
জেলা প্রশাসক আরও বলেন, বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জঙ্গীবাদী গোষ্ঠী বোমা বিস্ফোরণ, হত্যাসহ নানা ধরণের অপকর্ম করছে। ইসলামিক ফাউন্ডেশনকে জেলার সকল মসজিদে তারাবীর নামাজের সময় বা অন্য কোন সময় যাতে কেউ ব্যাগ নিয়ে প্রবেশ করতে না পারে সে ব্যাপারে সতর্ক করতে হবে। সন্দেহভাজনদের ব্যাপারে বিশেষভাবে নজর রাখতে হবে।
রাজবাড়ীর মসজিদগুলোতে জুম্মার নামাজের সময় জঙ্গীবাদ, মাদক, সন্ত্রাস, বাল্যবিবাহ এসব সম্পর্কে আলোচনা করা হয় না। যাতে মসজিদগুলোতে জুম্মার নামাজের বয়ানে ইমামরা এসব বিষয় নিয়ে কথা বলে সে জন্য ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে তাদেরকে চিঠি দিতে হবে। আর রমজানের সময় বিশেষ করে সেহরী, ইফতার ও তারাবীর সময় নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য রাজবাড়ীর বিদ্যুৎ বিভাগকে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
এছাড়াও সভায় রমজানের পবিত্রতা রক্ষা, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করা হয়।