শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ১০:২৪ পূর্বাহ্ন
Logo
সংবাদ শিরোনাম ::
বিশ্বব্যাপী ওমিক্রন সংক্রমণ বৃদ্ধিতে আইসোলেশন মেয়াদ অর্ধেক করার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট ডেল্টা ও বিটার তুলনায় তিন গুণের বেশী পুনঃ সংক্রমন ঘটাতে পারে : গবেষণা প্রতিবেদন জাতিসংঘ ভবনের বাইরে এক বন্দুকধারী গ্রেফতার শান্তি চুক্তির পঞ্চম বার্ষিকী উপলক্ষে কলম্বিয়া সফর জাতিসংঘ মহাসচিব সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানগণের সাক্ষাৎ করোনা ভাইরাসের সংক্রমন বেড়ে যাওয়ায় অস্ট্রিয়ায় লকডাউন করোনা সংক্রমণ বাড়ায় ইউরোপের বিভিন্ন দেশে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ ভারতে নতুন করে ১০ হাজার ৩০২ জন করোনায় আক্রান্ত নভেম্বর মাসজুড়ে করাঞ্চলে কর মেলার সেবা পাবেন করদাতারা ঔপনিবেশিক আমলের ফৌজদারী কার্যবিধি যুগোপযোগী হচ্ছে

রাজবাড়ী জেলা পুলিশের উদ্যোগে পুলিশ মেমোরিয়াল ডে পালিত

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২ মার্চ, ২০১৭

॥আসহাবুল ইয়ামিন রয়েন॥ সারা দেশের ন্যায় রাজবাড়ী জেলা পুলিশের আয়োজনে গতকাল ১লা মার্চ পুলিশ মেমোরিয়াল ডে পালন করা হয়।
১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চের পর থেকে আজ পর্যন্ত যে সমস্ত পুলিশ সদস্য কর্তব্যরত অবস্থায় নিহত ও মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের স্মরণে এবারই প্রথম বাংলাদেশ পুলিশের উদ্যোগে ১লা মার্চকে পুলিশ মেমোরিয়াল ডে ঘোষণা করে দিবসটি পালন করা হয়।
পুলিশ মেমোরিয়াল ডে উপলক্ষে গতকাল ১লা মার্চ সকাল ১০টায় রাজবাড়ী পুলিশ লাইন্সে সদ্য নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে পুষ্পমাল্য অর্পন করেন পুলিশ সুপার সালমা বেগম পিপিএম-সেবা। এরপর সেখানে প্রয়াত পুলিশ সদস্যদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ তারিকুল ইসলাম, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার(ক্রাইম) মোঃ আসাদুজ্জামান, পাংশা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার ফজলুল করিম, সকল থানার অফিসার ইনচার্জগণ, ট্রাফিক ইন্সপেক্টরগণ, জেলা পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তাগণ এবং পুলিশ কনস্টেবলগণসহ রাজবাড়ী জেলার বিভিন্ন সময় দেশের বিভিন্ন স্থানে দায়িত্ব পালনকালে নিহত পুলিশ সদস্যদের পরিবারের সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন।
পুষ্পমাল্য অর্পন শেষে পুলিশ লাইন্সের ড্রিলশেডে নিহত পুলিশ সদস্যদের পরিবারের সদস্যগণকে সম্মাননা প্রদান ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
পুলিশ সুপার সালমা বেগম পিপিএম-সেবা’র সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ তারিকুল ইসলাম, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার(ক্রাইম) মোঃ আছাদুজ্জামান, পাংশা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার বজলুল করিম, রাজবাড়ী সদর খানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আবুল বাশার মিয়া, পাংশা থানার অফিসার ইনচার্জ মোফাজ্জেল হোসেন, গোয়ালন্দ থানার সাব-ইন্সপেক্টর সোমনাথ বসু, কালুখালী থানার সহকারী সাব-ইন্সপেক্টর শহিদুল ইসলাম, নিহত পুলিশ সদস্যদের পরিবারের পক্ষ থেকে বান্দরবানে দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় নিহত পুলিশ সদস্য বাচ্চু আলমের স্ত্রী মোছাঃ রোকেয়া ও ফরিদপুরে নিহত পুলিশ সদস্য আবু তালিবের স্ত্রী সুফিয়া বেগম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। সঞ্চালনা করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ তারিকুল ইসলাম।
সভাপতির বক্তব্যে পুলিশ সুপার সালমা বেগম পিপিএম-সেবা বলেন, পুলিশ বাহিনী হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সারা দিয়ে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণসহ স্বাধীনতার পরবর্তী সময় থেকে অদ্যাবধি দেশের যে কোন প্রয়োজনে অত্যন্ত সুনাম, গর্ব ও ঐতিহ্যের সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছে। সেই গর্বের প্রতীক পুলিশ বাহিনীর কোন সদস্য তাদের দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে মৃত্যুবরণ করলে মৃত্যুকালীন সময় ছাড়া তাদের বীরত্বকে অতীতে আর মনে করা হয়নি। বর্তমান সরকারের আমলে বাংলাদেশ পুলিশের আইজিপি মোঃ শহিদুল হক বিষয়টি অনুধাবন করে সকল পুলিশ সদস্যদের সাথে আলোচনা করে যাতে মৃত্যুবরণকারী সকল পুলিশ সদস্যকে একটি দিনে স্মরণ করা যায় সেই লক্ষ্যে এ বছর থেকে প্রতি বছরের মার্চ মাসের প্রথম দিন পুলিশ মেমোরিয়াল ডে হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আজকে সারা দেশে সকল পুলিশ সদস্য এই দিনটিকে বিশেষ মর্যাদায় পালন করছেন। আমরা অনেক ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য অনেককে স্মরণ করতে বিশেষ দিন পালন করি। কিন্তু আমাদের পুলিশ সদস্যগণ যারা জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও জানমালের নিরাপত্তা বিধান করে দিনরাত পরিশ্রম করতে যেয়ে মাদক ব্যবসায়ী, সন্ত্রাসী, জঙ্গীগোষ্ঠী, ডাকাত, ছিনতাইকারী, নারী নির্যাতনকারীদের প্রতিরোধ করতে গিয়ে নিজের জীবনকে বাজী রেখে দায়িত্ব পালন করতে যেয়ে শহীদ হন বা কোন রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করতে যেয়ে মৃত্যুবরণ করেন তাদের ও তাদের পরিবারের সদস্যদের আমরা কেউ কোন খোঁজ-খবর রাখিনা। আমি পুলিশের একজন সদস্য হিসেবে আশা করব, আমাদের দেশের সাধারণ মানুষসহ পুলিশ বাহিনীর প্রতিটি সদস্য আজ থেকে আগামীতে এই ১লা মার্চ পুলিশ মেমোরিয়াল ডে’র দিনে দেশের কাজে জীবন দানকারী প্রতিটি পুলিশ সদস্য ও তার পরিবারের সদস্যদের স্মরণ করব। যাতে নিহত পুলিশ সদস্যের স্ত্রী, সন্তান ও পরিবারের সদস্যদের প্রিয়জন হারানোর বেদনা কিছুটা হলেও লাঘব হয়।
পুলিশ সুপার সালমা বেগম আরো বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ দেশ থেকে মাদক, জঙ্গী ও সন্ত্রাস নির্মূলে জিরো টলারেন্স নিয়ে কাজ করছে। এছাড়াও তারা নারী নির্যাতন, বাল্য বিবাহ ও ইভটিজিং বন্ধসহ জনগণের জানমালের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা বিধান করা সম্ভব হয় সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। দেশের যে কোন দুর্যোগপূর্ণ মূহুর্তে পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা নিজেদের জীবন দিয়ে সাধারণ মানুষকে রক্ষা করেছে। গুলশানের হলি আর্টিজান রেঁস্তোরায় জঙ্গী দমনে পুলিশের দুইজন কর্মকর্তার জীবন উৎসর্গ, শোলাকিয়ায় ঈদের জামাতে মুসুল্লীদের জীবন রক্ষা করতে গিয়ে পুলিশ সদস্যদের নিজেদের জীবন দানের ঘটনা দেশের সকল মানুষেরই জানা। পুলিশ সদস্যরা বিভিন্ন সময়ে সরকার ও জনগণের নিরাপত্তা বিধান করতে গিয়েও দেশের জন্য নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। সকল ভুলত্রুটির ঊর্ধ্বে উঠে আজকের এই দিনে দেশের জন্য মৃত্যুবরণকারী পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ রেখে পুলিশের প্রতিটি সদস্যসহ দেশের সকল মানুষ সম্মিলিতভাবে দেশের যে কোন সংকট মোকাবেলায় কাজ করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
তিনি দায়িত্ব পালনকালে মৃত্যুবরণকারী পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের পরিবারকে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে যে কোন ধরণের সহযোগিতার আশ্বাস দেন। তিনি ভবিষ্যতে রাজবাড়ী জেলাকে মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গী, ইভটিজিং ও বাল্য বিবাহমুক্ত জেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
আলোচনা অনুষ্ঠানের পূর্বে পুলিশ সুপার সালমা বেগম পিপিএম-সেবা দায়িত্ব পালনকালে মৃত্যুবরণকারী রাজবাড়ী জেলার বাসিন্দা পুলিশ কনস্টবল বাচ্চু আলম, আবু তালিব, মমিমুল ইসলাম, আবু জাফর ইকবাল ও আব্দুল করিম মোল্লার পরিবারের সদস্যদের হাতে ক্রেস্ট ও আর্থিক সহায়তার খাম তুলে দেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর
error: আপনি নিউজ চুরি করছেন, চুরি করতে পারবেন না !!!!!!