॥চঞ্চল সরদার॥ রাজবাড়ী সদর উপজেলার মিজানপুর ইউপির চেয়ারম্যান ও সচিব সপ্তাহে মাত্র ১দিন পরিষদে বসেন। সপ্তাহের অবশিষ্ট দিনগুলো তারা রাজবাড়ী শহরের অস্থায়ী অফিসে বসেন। অথচ ইউনিয়ন পরিষদ যথারীতি সপ্তাহের ৬দিনই খোলা থাকে। যারা সেবা নিতে আসেন তাদেরকে নিরুপায় হয়ে শহরেই ছুটে যেতে হয়। কারণ চেয়ারম্যান ও সচিবের স্বাক্ষর ছাড়া কোন কাজই হয় না। এ কারণে ইউনিয়ন পরিষদে সেবা নিতে আসা জনগণের দুর্ভোগের শেষ নেই।
বাগমারা গ্রাম থেকে ইউনিয়ন পরিষদের সেবা গৃহবধূ লাকি বেগম বলেন, আমার ছেলের জন্ম নিবন্ধনের কাগজ নিতে এসেছি। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে কাগজ উঠাইছি কিন্তু এখন চেয়ারম্যান ও সচিবের সই লাগবে, সেটা আমি পাচ্ছি না। এখন তাদের সই আনার জন্য আমাকে তাদের রাজবাড়ী শহরের অফিসে যেতে হবে। যদি তারা ইউনিয়ন পরিষদে বসতো তাহলে আমার এই সমস্যা হতো না। আমি চাই তারা নিয়মিত এখানেই বসুক।
মিজানপুর ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ওয়ার্ডের সদস্য রফিকুল ইসলাম মিন্টু বলেন, আমরা এখানেও বসি আবার রাজবাড়ীতেও বসি। সপ্তাহের প্রতি সোমবার পরিষদে বসি, অন্য দিনগুলোতে রাজবাড়ীতে বসি। যদিও আমাদের বসার কথা নির্দিষ্ট ইউনিয়নেই। এত বড় ইউনিয়ন হওয়াও সমস্যাটা সবারই হয়।
মিজানপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব গোলাম মোস্তফা বলেন, আমি দুই বছর যাবৎ এই ইউনিয়ন পরিষদের সচিবের দায়িত্বে আছি। আমি শুনেছি গত ৩০-৪০ বছর নাকি এভাবেই অফিস চলছে। বিষয়টি আমি চেয়ারম্যানকে বলছি। আমারও অনেক সমস্যা হয় সূর্যনগর ও রাজবাড়ীতে অফিস করতে। আমি চাই একটা স্থানেই অফিস থাকুক। তাতে সবার জন্যই ভালো হবে।
এ বিষয়ে মিজানপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতিয়ার রহমান বলেন, আমাদের ইউনিয়নটা শহরতলির ইউনিয়ন। ইউনিয়নের পরিধি প্রায় ৩০ কিলোমিটার। ইউনিয়নের পূর্ব এলাকার মানুষের সুবিধার জন্যই আমরা শহরে বসি। তাছাড়া বিচার-শালিসতো ইউনিয়নেই করি। এটা নিয়ে জনগণের কোন আপত্তি আছে বলে আমার মনে হয় না। তারাও শহরমুখী, শহর থেকেই তারা সেবা নেয়।
রাজবাড়ী সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সাঈদুজামান খান বলেন, আমি তাদেরকে বলছিলাম আপনারা কেন এটা করছেন। তারা বলেছেন, রাস্তা-ঘাটের অবস্থা নাকি ভালো না-তাই পাবলিকের সুবিধার জন্যই এটা করছেন। আমি তাদেরকে বলেছি রাস্তা ভালো হওয়ার সাথে সাথে রেগুলার পরিষদে বসবেন। ইউনিয়ন পরিষদের অফিস অবশ্যই ইউনিয়ন পরিষদেই করতে হবে।