॥স্টাফ রিপোর্টার॥ রাজবাড়ী জেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে গতকাল ৪ঠা এপ্রিল বিকালে শহরের আজাদী ময়দানে রেলপথ মন্ত্রী মোঃ নূরুল ইসলাম সুজনকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।
জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ডাঃ শেখ আব্দুস সোবহানের সভাপতিত্বে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন রেলমন্ত্রী মোঃ নুরুল ইসলাম সুজন, এমপি।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলী, সংরক্ষিত মহিলা আসন-৩৪০ এর সংসদ সদস্য এডঃ খোদেজা নাসরিন আক্তার হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফকীর আব্দুল জব্বার, সহ-সভাপতি ও রাজবাড়ী পৌরসভার মেয়র মহম্মদ আলী চেীধুরী এবং ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কাজী ইরাদত আলী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে রেলপথ মন্ত্রী মোঃ নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল এদেশটাকে সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তোলার-গরীব দুঃখী মানুষের মনে হাসি ফোটানোর। ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার সংগ্রাম-মুক্তির সংগ্রামের পাশাপাশি অর্থনৈতিক সংগ্রামের কথাও বলেছিলেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধু তার স্বপ্ন পূরণ করে যেতে পারেননি। আজকে জননেত্রী শেখ হাসিনার উপর দায়িত্ব পড়েছে গরীব-দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর, দেশটাকে সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তোলার। তিনি জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণে নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছেন।
রেলপথ মন্ত্রী বলেন, রাজবাড়ী রেলওয়ের পুরাতন মিলনায়তনটি ভেঙ্গে ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে অত্যাধুনিক একটি অডিটোরিয়াম নির্মাণ করা হবে। এতে সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড বিকশিত হওয়ার পাশাপাশি রেলের আয়ও বৃদ্ধি পাবে। আমাদের আগের সরকারের সময়ে এখানকার সংসদ সদস্য কাজী কেরামত আলী মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে এখানে একটি অত্যাধুনিক অডিটোরিয়াম নির্মাণের ব্যাপারে আবেদন করেছিলেন। তার আবেদনের প্রেক্ষিতে অডিটোরিয়ামটি নির্মাণের ব্যাপারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তৎকালীন রেলমন্ত্রী মুজিবুর হককে নির্দেশনা প্রদান করেছিলেন। তার ধারাবাহিকতায় আজকে আমি অডটোরিয়ামটির প্রস্তাবিত জায়গা পরিদর্শন করে গেলাম।
তিনি আরো বলেন, বিগত বিএনপি-জামাত জোট সরকারের শাসনামলে রেল ব্যবস্থাকে ধ্বংস করা হয়েছিল। রেলের প্রায় সাড়ে ১২হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীকে গোল্ডেল হ্যান্ডশেকের মাধ্যমে বিদায় করেছিল। সেই মৃত প্রায় রেলকে বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সচল করেছেন। বাংলাদেশের প্রতিটি জেলার সাথে রেল যোগাযোগ স্থাপন করা হচ্ছে। রেলের গতি বৃদ্ধির জন্য রেলপথ মন্ত্রনালয় কাজ করে যাচ্ছে।
রেলের অবৈধ দলখদারদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, যারা রেলের সম্পত্তি দখল করে ব্যবসা-বাণিজ্য করে আসছেন তারা নিজ দায়িত্বে রেলের জমি ছেড়ে দিয়ে অন্যত্র চলে যান। আগামীতে রেলে লোকবল বৃৃদ্ধির মাধ্যমে সব অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করা হবে। রাজবাড়ীর রেলপথকে কীভাবে আগের জায়গায় ফিরিয়ে আনা যায় সে ব্যাপারে কাজ করবো। রেলওয়ের বিভাগীয় সদর দপ্তরও রাজবাড়ীতে করা হবে। এ জন্য আপনাদের ধৈর্য্য ধরতে হবে।
রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব কেরামত আলী বলেন, শেখ হাসিনার সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর রেলের যে সমস্যাগুলো ছিল সেগুলো সমাধানের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বন্ধ হয়ে যাওয়া রাজবাড়ী-ভাটিয়াপাড়া ও রাজবাড়ী-ফরিদপুর রেল যোগাযোগ চালু হওয়াসহ রাজবাড়ীর কালুখালী থেকে গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়া পর্যন্তও রেললাইন চালু হয়েছে। তবে রাজবাড়ীবাসীর দাবী টুঙ্গীপাড়ার ট্রেনটি রাজবাড়ী থেকে যাত্রা শুরু করার। মন্ত্রী মহোদয় আজকে অত্যাধুনিক অডিটোরিয়ামটির প্রস্তাবিত জায়গা পরিদর্শন করলেন। খুব শীঘ্রই সেটি নির্মাণ করা সম্ভব হবে বলে আমি আশাবাদী। রাজবাড়ী রেল স্টেশনটির অবস্থাও বেশী ভালো নয়। সেখানে যে সুযোগ-সুবিধা থাকা দরকার তা নেই। জনবলের সমস্যা রয়েছে। লোকশেডকে সক্রিয় করতে হবে। আমাদের এখানে কোন শিশু পার্ক নেই। তাই রেলের যে জায়গা আছে সেখানে একটি শিশু পার্ক করলে বাচ্চারা খেলাধুলা করতে পারবে।
সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য এডঃ খোদেজা নাসরিন আক্তার হোসেন বলেন, বিগত বিএনপি-জামাত সরকারের সময় রাজবাড়ীর গুরুত্বপূর্ণ ২টি রেলপথ বন্ধ করেছিল। আমাদের সরকার এসে আবার তা চালু করেছে। রাজবাড়ী শহরের অধিকাংশ জায়গাই রেলওয়ের। রেলের শহর হিসেবে আমাদের দীর্ঘদিনের সুখ্যাতি রয়েছে। তাই আমি রাজবাড়ী জেলায় একটি রেল বিভাগ করার জোর দাবী জানাচ্ছি। সরকারের উন্নয়নমূলক কাজের ধারাবাহিকতা রক্ষায় আমাদের সকলকে সহযোগিতা করতে হবে।
আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীগণসহ বিপুল সংখ্যক মানুষ রেলমন্ত্রীর এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।