॥স্টাফ রিপোর্টার॥ রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া থেকে গ্রামীণ ফোনের টাওয়ারের মূল্যবান যন্ত্রাংশ চুরি চেষ্টার অভিযোগে গত রবিবার ভোররাতে গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশ ৫জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
এ সময় তাদের ব্যবহৃত একটি ডাবল ডেকার পিকআপ গাড়ি ও মূল্যবান যন্ত্রাংশ জব্দ করেছে। গ্রেপ্তারকৃত প্রত্যেকে আন্তঃ জেলা ডাকাত দলের সদস্য বলে পুলিশ জানিয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো ঃ গোপালগঞ্জের কাশিয়ানি উপজেলার ভাটিয়াপাড়া গ্রামের আবুল কালাম আজাদ মোল্লার ছেলে রাজিব মোল্লা(২৮), লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মাছিম নগর গ্রামের হোসেন আহম্মেদ ভূইঁয়ার ছেলে এবিএম জাকারিয়া ভূইঁয়া ওরফে রাকিব(৪০), রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার মুরাদ দর্পন গ্রামের আবুল কালামের ছেলে হারুন অর-রশিদ ওরফে দুলাল(৩৫), তার ছোট ভাই দিল পিয়ার হোসেন ওরফে বাবু(৩০) ও বরিশালের কাজির হাট উপজেলার কান্দিারাবাদ চর সোনাপুর গ্রামের খাঁ বাড়ির আব্দুর রহমান মাষ্টারের ছেলে মেহেদী হাসান(৩২)।
গত ৩১শে মার্চ রাতে গোয়ালন্দ ঘাট থানায় এ বিষয়ে পুলিশ সুপার আসমা সিদ্দিকা মিলি প্রেস ব্রিফিং করে সাংবাদিকদের জানান, গ্রেপ্তারকৃতরা সংঘবদ্ধ আন্তঃ জেলা ডাকাত দলের সদস্য। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া সোহরাব মন্ডল পাড়াস্থ গ্রামীণফোন টাওয়ারে কাছে একটি ব্লু রংয়ের ডাবল কেবিন পিকআপ ও একটি মাইক্রোবাস নিয়ে কয়েকজন সন্দেহভাজন ঘোরাঘুরি করছে বলে জানতে পারে। দুটি গাড়ির সামনে গ্রামীণ ফোনের লোগোসহ ষ্টীকার লাগানো রয়েছে। এমন সংবাদে গত শনিবার দিবাগত রাত থেকে গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি(তদন্ত) মোঃ আমিনুল ইসলাম পুলিশ সদস্যদের নিয়ে ওঁত পেতে থাকে। রাত শেষে রবিবার ভোররাতের দিকে পুলিশ দেখতে পায় একটি নেভি ব্লু রংয়ের ডাবল কেবিন পিকআপ গাড়ি(ঢাকা-মেট্রো-চ-১১-২৯৯৩) নিয়ে কয়েকজন লোক গ্রামীণফোণের টাওয়ারের গ্রীলের তালা ভাঙ্গার চেষ্টা করছে। পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌছলে তারা পালানোর চেষ্টা করে। এ সময় মাইক্রোবাসসহ অন্যরা পালিয়ে গেলেও হাতেনাতে এই গাড়িসহ উল্লেখিত ৫জনকে আটক করে। গাড়ির ব্যাগ থেকে একটি লোহার শাবল, ৩টি স্লাই রেঞ্জ, ১টি কাটার প্লাস, ৪টি স্ক্রু-ড্রাইভার, ২টি রিং টালি, ৫টি গুটি টালি, ৫টি ঢাল রেঞ্জ, ২টি হেসকা ব্লেড, ১টি ঢালি, দুই সেট ১৭টি এল,এস ও ২টি তালা জব্দ করে।
পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আন্তঃ জেলা ডাকাত দলের সদস্য এবং দীর্ঘদিন ধরে তারা সংবদ্ধ হয়ে বিভিন্ন মুঠোফোনে কোম্পানীর টাওয়ারের মূল্যবান যন্ত্রাংশ চুরি করে বিক্রি করতো বলে স্বীকার করেছে।
গ্রেপ্তারকৃত হারুন অর-রশিদ ওরফে দুলাল মিয়া সাংবাদিকদের জানান, তিন মাস আগে মাসিক ৩৫হাজার টাকায় উল্লেখিত গাড়িটি ঢাকার এক ব্যক্তি থেকে ভাড়া করেন। বিভিন্ন পোষাক কারখানার কাপড় পাইকারী দরে কিনে বিক্রি করবে বলে চুক্তি করে। কিন্তু মূলত তারা এ ধরনের পেশার কাজে ব্যবহারের জন্য গাড়িটি ভাড়া করে।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি মোঃ এজজা শফী জানান, হারুন অর-রশিদ ওরফে দুলাল ও দিল পিয়ার হেসেন ওরফে বাবু আপন দুই ভাই। সংঘবদ্ধ হয়ে তারা বিভিন্ন মোবাইল কোম্পানীর টাওয়ার থেকে মূল্যবান যন্ত্রাংশ চুরি করতো। কেউ যাতে বুঝতে না পারে এজন্য মোবাইল কোম্পানীর গাড়ির মতো দেখতে গাড়িতে ষ্টীকার সংযুক্ত করে ব্যবহার করতো। তাদের নামে নেত্রকোনার পূর্বধলা থানায় এ ধরনের মামলা রয়েছে। রাজিব মোল্লার বিরুদ্ধে একটি হত্যা ও মাদকের মামলা রয়েছে।
এ ঘটনায় গত ৩১শে মার্চ রাতে তাদের বিরুদ্ধে গোয়ালন্দ ঘাট থানায় মামলা দায়ের শেষে গতকাল সোমবার রাজবাড়ীর আমলী আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।