॥শিহাবুর রহমান॥ মোবাইল প্রযুক্তি ব্যবহার করে অপহরণকারী চক্রের ৩ সদস্য ও শেখ মোঃ জসিম উদ্দিন নামে অপহৃত এক শ্রমিককে উদ্ধার করেছে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ থানার পুলিশ। গতকাল ২৭শে মার্চ আদালতের মাধ্যমে গ্রেফতারকৃতদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গত ২৪শে মার্চ হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার জগদ্বীশপুর ইটাখোলা এলাকা থেকে অপহরণ হয় জসিম।
গ্রেফতারকৃতরা হলো-রাজশাহী জেলার শাহমখদুম উপজেলার আরমান আলীর ছেলে জিল্লুর রহমান বিপ্লব(৩৩) ও তার স্ত্রী কাকলী বেগম(৩০) এবং একই জেলার বোয়ালিয়া উপজেলার শালবাগান পাওয়ার হাউজ মোড় এলাকার তাহাজুল ইসলাম টোকনের ছেলে শরিফুল ইসলাম ফরিফ(২২)।
গোয়ালন্দ থানার অফিসার ইনচার্জ এজাজ শফি জানান, উদ্ধার হওয়া শেখ মোঃ জসিম গোয়ালন্দ উপজেলার উজানচর গনি শেখের পাড়ার মৃত শেখ মোঃ নুরুদ্দিন আহম্মেদের ছেলে। সে হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার জগদ্বীশপুর ইটাখোলা এলাকায় আরএকে মশফ্লাই নামক মশার কয়েল ফ্যাক্টারীতে চাকুরী করতো। গত ২৪মার্চ সকালে সে ফ্যাক্টারীর উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি। পরদিন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জসিমের মোবাইল থেকে অজ্ঞাত একজন তার ভাই জাহিদুর রহমানের কাছে ফোন করে ২০হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবী করে। নইলে জসিমকে খুন করা হবে বলে সে হুমকি দেয়। এসময় অপহরণকারীরা চলচিত্রের স্টাইলে মোবাইলে জসিমকে তার সাথে কথা বলতে দেয়। উপায় না পেয়ে জাহিদুর রহিম ভাইকে বাঁচাতে অপহরণকারীদের দেয়া বিকাশ নম্বরে ১৫হাজার টাকা মুক্তিপণ হিসেবে পাঠিয়ে দেন। টাকা পেয়ে তারা জসিমকে মুক্তি না দিয়ে পুনরায় ৪০হাজার টাকা দাবী করে এবং মোবাইলে তারা তাকে জসিমের ওপর নির্যাতনের চিৎকার শোনায়। বাধ্য হয়ে জাহিদুর রহিম কয়েকটি বিকাশ নম্বরে সর্বমোট ৫৫হাজার টাকা প্রদান করেন। এরপরও তারা জসিমকে মুক্তি না দিয়ে আরো ১লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে।
এ ঘটনায় অপহৃতের ভাই জাহিদুর রহিম গত ২৪শে মার্চ গোয়ালন্দ থানায় মামলা দায়ের করেন। এরপর মোবাইল প্রযুক্তি ব্যবহার করে জানা যায় জাহিদুর রহিম অপহরণকারীদের দেয়া যে বিকাশ নম্বরগুলোতে টাকা পাঠিয়ে ছিলেন তার মধ্যে একটি বিকাশ নম্বর শাহমখদুম উপজেলার মধ্যে একটি বিকাশের দোকানে ব্যবহার হচ্ছে। এরপর বিষয়টি শাহমখদুম থানার পুলিশকে জানানো হলে গত ২৬শে মার্চ ওই দোকান থেকে টাকা উত্তোলন করার সময় সেখানকার পুলিশ উল্লেখিতদেরকে হাতেনাতে গ্রেফতার করেন। এসময় তাদের কাছ থেকে ৩২হাজার টাকা ও ৪টি মোবাইল জব্দ করা হয় এবং অপহৃত জসিমকে উদ্ধার করা হয়।
তিনি আরো জানান, গতকাল ২৭মার্চ গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে শরিফুল ইসলাম শরিফ আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী প্রদান করেছে। পরে একই দিন আদালতের মাধ্যমে তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়।