॥মোক্তার হোসেন॥ রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলের সরিষা ইউপির নাওরা-বনগ্রাম এলাকার তিনরাস্তা মোড় বটতলা নামক স্থানে গত গভীর রাতে পুলিশের সাথে বন্দুক যুদ্ধে চরমপন্থী বিপুল বাহিনীর সেকেন্ড-ইন-কমান্ড চরমপন্থী সন্ত্রাসী মোয়াজ্জেম ফকির(৩২) নিহত হয়েছে।
সে উপজেলার পাট্টা ইউপির মধ্যপাট্টা গ্রামের আব্দুল মজিদ ফকির ওরফে মজিদ বাউলের ছেলে। তার বিরুদ্ধে পাংশা ও কালুখালী থানায় হত্যা মামলাসহ মেটি ৮টি মামলা রয়েছে।
পুলিশের সাথে বন্দুক যুদ্ধে চরমপন্থী সন্ত্রাসী মোয়াজ্জেম নিহত হওয়ার খবরে উপজেলার পাট্টা, মৌরাট, সরিষা, কলিমহর ও কসবামাজাইল এলাকার শান্তিপ্রিয় মানুষের মাঝে স্বস্তিভাব বিরাজ করছে। কোথাও কোথাও মিষ্টি বিতরণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
পাংশা থানার অফিসার ওসি মোঃ মোফাজ্জেল হোসেন জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পাংশা থানা ও রাজবাড়ী ডিবি পুলিশের একটি দল বৃহস্পতিবার সকাল পৌনে ৬টার দিকে ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানার জিরানী এলাকা থেকে চরমপন্থী বিপুল বাহিনীর সেকেন্ড-ইন-কমান্ড চরমপন্থী সন্ত্রাসী মোয়াজ্জেম ফকিরকে গ্রেপ্তার করে ওইদিন দুপুর দুইটার দিকে তাকে পাংশা থানায় নিয়ে আসা হয়। থানায় পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে অবৈধ অস্ত্র-গুলি থাকার কথা স্বীকার করলে গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে রাজবাড়ী ডিবি পুলিশের ওসি ওবায়দুর রহমান, ডিবির এস.আই নিজাম উদ্দিন, পাংশা থানার এস.আই মোশাররফ হোসেন ও কসবামাজাইল পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এস.আই মোঃ হাফিজুর রহমানসহ সঙ্গীয় পুলিশ দল আসামী চরমপন্থী সন্ত্রাসী মোয়াজ্জেম ফকিরকে সাথে নিয়ে অবৈধ অস্ত্র-গুলি উদ্ধারে সরিষা ইউপির নাওরা-বনগ্রাম এলাকার তিনরাস্তা মোড় বটতলা নামক স্থানে পৌঁছিলে সেখানে পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা সন্ত্রাসীরা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। ওই সময় চরমপন্থী সন্ত্রাসী মোয়াজ্জেম ফকির পুলিশের গাড়ী থেকে কৌশলে নেমে পালানোর চেষ্টা করে। পরে পুলিশ ও সন্ত্রাসীদের মধ্যে গোলাগুলির এক পর্যায়ে আসামী চরমপন্থী সন্ত্রাসী মোয়াজ্জেম হোসেন বুকে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সন্ত্রাসীদের ফেলে যাওয়া দেশীয় তৈরি ১টি ওয়ান শুটার গান, ১রাউন্ড তাজা কার্তুজ ও ২রাউন্ড ফায়ারিং কার্তুজ উদ্ধার করে। ঘটনার পরপরই গুলিবিদ্ধ মোয়াজ্জেম ফকিরকে পাংশা হাসপাতালে নেওয়া হলে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
পুলিশের সাথে সন্ত্রাসীদের গোলাগুলির সময় পুলিশ রাউন্ড গুলি ছোড়ে। তবে সন্ত্রাসীরা কত রাউন্ড গুলি ছোড়ে তা জানা সম্ভব হয় নাই। নিহত মোয়াজ্জেম ফকির পাংশা থানার মামলা নং-৫, তাং-১৫/২/২০১৩, ধারাঃ ৩০২/৩৪ দঃ বিঃ এর মানিক ও শহিদ হত্যার ১৬৪ধারার, পাংশা থানার মামলা নং-১, তাং-৪/৭/২০১৩, ধারাঃ ৩০২/৩৪ দঃ বিঃ-এর ডালিম হত্যার ১৬৪ ধারার, পাংশা থানার মামলা নং-১৫, তাং-২৬/৮/২০১৩, ধারাঃ ৩০২/৩৪ দঃ বিঃ, আক্কাস মেম্বার হত্যার ১৬৪ ধারার, পাংশা থানার মামলা নং-৭, তাং-২১/৭/২০১৩, ধারাঃ ৩০২/২০১/৩৪ দঃ বিঃ শরিফুল হত্যার ১৬৪ ধারার, পাংশা থানার মামলা নং-১৪, তাং-১৭/৫/২০১৫, ধারাঃ ৩৬৪/৩০২/৩৪ দঃ বিঃ মন্টু হত্যার ১৬৪ ধারার, পাংশা থানার মামলা নং-১২, তাং-১০/৬/২০১৫, ধারাঃ ৩৬৪/৩২৩/৩০২/৩৪ দঃ বিঃ, প্রীতিশ হত্যার এজাহার নামীয়, কালুখালী থানার মামলা নং-১১, তাং-২৫/৯/২০১৩, ধারাঃ ১৪৩/৩২৩/৩২৬/৩০৭/৩০২/৫০৬/৩৪ দঃ বিঃ, জি.আর-৮৭/১৩ এর দেবেশ মেম্বার হত্যার ১৬৪ ধারার আসামী ও পাংশা থানার মামলা নং-১, তাং-৩/৪/১৬, ধারা ৪৫৭/৩৮৫/৫০৬(২) পিসি তৎসহ বিস্ফোরক উপাদানাবলী আইন ২০০৩ এর ৩(ক) এর সন্ধিগ্ধ আসামী বলে জানা গেছে।
এদিকে বন্দুক যুদ্ধে চরমপন্থী সন্ত্রাসী মোয়াজ্জেম ফকির নিহত ও অবৈধ অস্ত্র-গুলি উদ্ধারের ঘটনায় পাংশা থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।