॥শিহাবুর রহমান॥ রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দির বকচর খুরশিদা ও সেলিনা-তুজ-জোহরা বালিকা হাফিজিয়া মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা মহতামিম(অধ্যক্ষ) মাওলানা সোয়াইব হোসেন কর্তৃক ধর্ষণের শিকার হয়েছে নতুন যোগদানকারী এক শিক্ষিকা(১৯)।
এ ঘটনায় গতকাল ১০ই নভেম্বর বালিয়াকান্দি থানায় অভিযুক্ত মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা সোয়াইব হাসান (৪০)কে আসামী করে মামলা করেছেন ওই শিক্ষিকার স্বামী। একই দিন বিকেলে ভিকটিমের মেডিকেল পরীক্ষা শেষে আদালতে হাজির করা হলে বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০(সংশোধনী/০৩) এর ৯(১) ২২ ধারায় তার জবানবন্দী রেকর্ড করেন।
গত ৮ই নভেম্বর রাত সাড়ে ১০টার দিকে বালিয়াকান্দি উপজেলার বকচর গ্রামে ওই প্রিন্সিপালের বাড়ীতে এ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে।
ওই শিক্ষিকার স্বামী জানান, তার বাড়ী ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা উপজেলার দেলবারিয়া গ্রামে। বালিয়াকান্দি উপজেলার বকচর কওমী ইসলামিয়া মহিলা মাদ্রাসায় তার স্ত্রীর চাকুরী হয়। চাকুরীতে যোগদানের উদ্দেশ্যে নিজবাড়ী থেকে গত ৮ই নভেম্বর বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে তারা দু’জন (স্বাম-স্ত্রী) বকচর গ্রামে ওই মাদরাসার প্রিন্সিপালের বাড়ীতে আসেন এবং স্ত্রীকে রেখে তিনি বাড়ীতে চলে যান। প্রিন্সিপালের বাড়ী ওই মাদরাসার এরিয়ার মধ্যেই। রাত সাড়ে ৮টার দিকে রাতের খাবার খেয়ে তার স্ত্রীকে এক গ্লাস দুধ খেতে দেয় ওই মাদরাসার এক ছাত্রী। দুধ খাওয়ার পর তারা দু’জন ওই প্রিন্সিপালের বাড়ীর পূর্বপাশের টিন সেড ঘরের মধ্যে শুয়ে পড়ে। এরপর তার স্ত্রী ঘুমিয়ে পড়লে ওই ছাত্রী রুম থেকে বের হয়ে এসে অন্য ছাত্রীদের থাকার রুমে চলে যায়। এ সুযোগে রাত সাড়ে ১০টার দিকে প্রিন্সিপাল মাওলানা সোয়াইব হাসান ওই কক্ষে প্রবেশ করে শিক্ষিকাকে ঝাপটে ধরে। এরপর সে তাকে খুন জখমের ভয়ভীতি দেখিয়ে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে এবং তার গলায় থাকা ১ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন, কান থেকে ৮আনা ওজনের এক জোড়া স্বর্ণের কানের দুল ও ব্যাগের মধ্যে থেকে ৫হাজার টাকা নিয়ে বাইরে থেকে ঘরের দরজা তালাবদ্ধ করে সে চলে আসে। পরদিন সকালে ওই ছাত্রী ঘরের দরজা খুলে দেয়। এরপর ঘটনাটি তার স্ত্রী মোবাইলে তাকে জানান।
এদিকে খবর পেয়ে গত ৯ই নভেম্বর বিকালে বালিয়াকান্দি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ধর্ষিতাকে উদ্ধার করাসহ ধর্ষণের ঘটনায় সহায়তাকারী শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসে।
এ ঘটনায় ওই শিক্ষিকার স্বামী বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। বালিয়াকান্দি থানার মামলা নং-১০, তাং-১০/১১/১৮, ধারাঃ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০(সংশোধনী/০৩) এর ৯(১)।
বালিয়াকান্দি থানার ওসি একেএম আজমল হুদা জানান, খবর পেয়ে গত শুক্রবার বিকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে ধর্ষিতাকে উদ্ধার করাসহ এক শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। গতকাল শনিবার ওই শিক্ষিকার ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। অভিযুক্ত প্রিন্সিপাল মহতামিম ডাঃ সোয়াইব হোসেন পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।