॥স্টাফ রিপোর্টার॥ রাজবাড়ী সদর ও গোয়ালন্দ উপজেলা নিয়ে গঠিত রাজবাড়ী-১ নির্বাচনী আসনটি একসময় জাতীয় পার্টির দখলে ছিল। এরপর যোগ্য প্রার্থীর অভাবে আসনটি হারাতে হয়।
এরশাদের আশীর্বাদ নিয়ে আসনটি পুনরুদ্ধারের জন্য আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হতে চান আলহাজ্ব শাহাদত হোসেন মিল্টন। বর্তমানে তিনি জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য এবং রাজবাড়ী জেলা শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক।
জাতীয় পার্টির মনোনয়ন প্রত্যাশী হয়ে তিনি রীতিমত গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। তার মরহুম পিতা আলহাজ্ব মোতাহার হোসেনও প্রতিষ্ঠাকাল থেকে জাতীয় পার্টির রাজনীতি করেছেন। জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাকাল থেকে ১৮দফা বাস্তবায়নসহ ৯০ এর দশক পর্যন্ত জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। আলহাজ্ব শাহাদত হোসেন মিল্টনও ২০০৩ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তার ধারাবাহিকতায় বর্তমানে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির অন্যতম সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। পিতার মৃত্যুর পর নিজেকে জনসেবায় নিয়োজিত রাখতে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
আসন্ন একদাশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদের ভালোবাসা নিয়ে রাজবাড়ী-১ আসনে জাতীয় পার্টির জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। জাতীয় পার্টিকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হচ্ছেন।
নির্বাচনকে সামনে রেখে তিনি ব্যাপক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। জাতীয় পার্টির তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের মধ্যেই তার গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। রাজনীতির পাশাপাশি তিনি প্রতিষ্ঠিত একজন ব্যবসায়ী। জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গেও তার অত্যন্ত নিবিড় রয়েছে।
সবদিক বিবেচনায় আলহাজ্ব শাহাদত হোসেন মিল্টনই রাজবাড়ী-১ আসনে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন বলে দলীয় অধিকাংশ নেতাকর্মীদের অভিমত।
নির্বাচন জানতে চাইলে আলহাজ্ব শাহাদত হোসেন মিল্টন বলেন, দুই বার এই আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছিলেন। পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে এই জনপদের মানুষ অত্যন্ত ভালোবাসেন। বিগত ২/৩টি নির্বাচনে যারা জাতীয় পার্টির মনোনয়ন পেয়েছিলেন, তারা কেউই সেভাবে নির্বাচন করেননি। উপযুক্ত প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়া হলে এখানে জাতীয় পার্টির সম্ভাবনা অত্যন্ত উজ্জ্বল। পার্টির চেয়ারম্যান পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এবার আমাকে মনোনয়ন দিলে জাতীয় পার্টির সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে লাঙ্গলের হয়ে কাজ করবে এবং আমরা লাঙলের হারানো গৌরব পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হবো।
উল্লেখ্য, ১৯৮৬ সালের তৃতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজবাড়ী-১ আসনে জাতীয় পার্টির আক্কাস আলী মিয়া(লাঙ্গল) প্রতীকে ৩৪ হাজার ৪৭৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি আওয়ামী লীগের এডঃ আঃ ওয়াজেদ চৌধুরী আলী চৌধুরী(নৌকা) প্রতীকে পান ২০ হাজার ১৯৩ ভোট। ৮৮’র নির্বাচনে মুন্সী আব্দুল লতিফ জাতীয় পার্টির মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে অনেক উন্নয়ন করেছিলেন। ৯০’র পরে নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও কয়েকটি নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে গড়ে তোলেন শক্ত অবস্থান।
১৯৯৬ সালের সপ্তম সংসদ নির্বাচনে মাত্র ৯হাজার ৬৫ ভোটের ব্যবধানে রাজবাড়ী-১ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোঃ গোলাম মোস্তফা(লাঙ্গল) প্রতীক আওয়ামী লীগের প্রার্থী আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলীর(নৌকা প্রতীক) কাছে পরাজিত হন।
ওই নির্বাচনে কাজী কেরামত আলী পেয়েছিলেন ৫১হাজার ৯৬৫ ভোট এবং জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোঃ গোলাম মোস্তফা পান ৪২ হাজার ৮৮১ ভোট।
নির্বাচন পরবর্তীতে সময়ে নেতৃত্বের পালাবদলে ঝিমিয়ে পড়ে জেলা জাতীয় পার্টি। ২০০৩ সালে আলহাজ্ব শাহাদত হোসেন মিল্টন রাজবাড়ীতে লাঙ্গলের হাল ধরায় ফের চাঙ্গা হতে শুরু হয়।
আলহাজ্ব শাহাদত হোসেন মিল্টন বলেন, এরশাদ সরকারের শাসনামলে শহর রক্ষা বেড়িবাঁধ ও কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল নির্মাণ, উপজেলা পরিষদ গঠন, জেলা পরিষদ সক্রিয় করা ও অনেক উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের কারণে রাজবাড়ী-১ আসনে এলাকাবাসীর মনে এখনও জাতীয় পার্টি ভালো অবস্থানে রয়েছে। আর দল মনোনয়ন দিলে তিনি বিজয়ী হবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।