॥সবুজ সিকদার॥ বালিয়াকান্দি উপজেলার বহরপুর ইউনিয়নের ইকরজনা বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি জাতীকরণের দাবী তুলেছেন এলাকাবাসী।
২০০৯ সালে ৩৩ শতাংশ জমির উপর প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়টি প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখলেও এখন পর্যন্ত জাতীয়করণের জন্য প্রস্তাবই প্রেরণ করা হয়নি। বর্তমান সরকার ৩টি ধাপে বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোকে জাতীয়করণের আওতায় আনলেও আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় বিদ্যালয়টি জাতীয়করণের জন্য প্রস্তাবই গ্রহণ করা হয়নি। জাতীয়করণের তালিকায় নাম না থাকায় এলাকাবাসী তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা বিদ্যালয়টি জাতীয়করণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে পদক্ষেপ নেওয়ার আহবান জানান। বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রধান শিক্ষকসহ ৪জন শিক্ষক বিনা পারিশ্রমিকে পাঠদান করে চলেছেন।
বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মোঃ মাহবুবুর রহমান লাল চাঁদ জানান, ইকরজানা গ্রামটি বালিয়াকান্দি উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে অবহেলিত। এই গ্রামের ৩/৪কিলোমিটারের মধ্যে কোন প্রাথমিক বিদ্যালয় না থাকায় এলাকার শিশুরা প্রাথমিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছিল। ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে আমার নিজের ৩৩শতাংশ জমির উপর স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করি। কিন্তু অদ্যাবধি ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটেনি এই বিদ্যালয়ের। একটি টিনের ঘরের মধ্যেই চলছে পাঠদান।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সেলিনা আক্তার জানান, বিদ্যালয়টির পাঠদান করাতে আমাদের ভীষণ হিমশিম খেতে হয়। বর্তমানে বিদ্যালয়ে দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী থাকলেও মাত্র একটি টিনের ঘরের মধ্যেই পরিচালনা করতে হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম। এতে কোমলমতি শিশুদের লেখাপড়ার বিঘœ ঘটছে। সরকার থেকে আমরা কোন ধরণের আর্থিক অনুদান না পাওয়ায় পরিবার-পরিজন নিয়ে অভাব অনটনের মধ্যে মানবেতর দিনযাপন করছি। বর্তমানে আমিসহ সহকারী শিক্ষক হিসেবে নাছিমা বেগম, শিরিনা আক্তার ও কোহিনুর বেগম কর্মরত আছেন।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক কল্যাণ সমিতির সভাপতি গওছেল আজম বলেন, ইকরজানা গ্রামে একটি মাত্র বিদ্যালয়। এটি জাতীয়করণ হলে এলাকার শিক্ষার মান আরও বৃদ্ধি পাবে।
বহরপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৩নং ওয়ার্ডের সদস্য মোঃ জিয়াউর রহমান জানান, ইকরজানা গ্রামটি একটি জনবহুল এলাকা। এই গ্রামে শুধুমাত্র একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইকরজানা বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ হলে শিক্ষার মান উন্নয়ন হবে।
ইকরজানা গ্রামের বাসিন্দা আয়ুব মৃধা বলেন, গ্রামের একমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হওয়ায় এই বিদ্যালয়েই কোমলমতি শিশুরা শিক্ষাগ্রহণ করে। আমরা দ্রুত বিদ্যালয়টি জাতীয়করণসহ প্রতিষ্ঠানটির একাডেমিক ভবনের দাবী জানাচ্ছি।