॥এম.এইচ আক্কাস॥ রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলা মৎস্য দপ্তরের উদ্যোগে গতকাল ৮ই অক্টোবর বিকালে দেবগ্রাম ইউনিয়নের আতর আলী সরদার চেয়ারম্যান বাজার ও উজানচর ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গনে মা ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধকালীন সময়ের জন্য জেলেদের মধ্যে বিশেষ ভিজিএফ চাল বিতরণ ও সচেতনতামূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী। নবাগত গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুবায়েত হায়াত শিপলুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবিএম নুরুল ইসলাম এবং জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ মজিনুর রহমান। এ সময় দেবগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতর আলী সরদার এবং উজানচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল হোসেন ফকিরসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ মৎস্যজীবীরা উপস্থিত ছিলেন। সভা পরিচালনা করেন গোয়ালন্দ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ রেজাউল শরীফ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে ইলিশ ধরার বিষয়ে জেলেদের সতর্ক করে দিয়ে বলেন, গত বছরের নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে অনেক জেলেকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তখন জেলেদের কোন খাদ্য সহায়তা দিতে পারি নাই। শাস্তি দিতে গিয়েও মানবিক কারণে অনেক ক্ষেত্রে শাস্তি কমিয়ে দিয়েছি। এ বছর সরকার আপনাদের জন্য খাদ্য সহায়তার ব্যবস্থা করেছে। তাই এ বছর নদীতে কাউকে পাওয়া গেলে কোন মানবিকতা দেখানো হবে না। সরকারী আদেশ তথা আমাদের অনুরোধ উপেক্ষা করে যদি কেউ মা ইলিশ শিকারে লিপ্ত হয় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা নেয়া হবে। নদীতে মাছ শিকার করুক আর না করুক কোন জেলে নৌকা যদি নদীতে পাওয়া যায় তা জব্দ করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা প্রশাসক আরো বলেন, দেশ-জাতি তথা আপনাদের মঙ্গলের জন্যই সরকার এই নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। সারা বছর নদীতে মাছ পাওয়া গেলে আপনারাই ভালো থাকবেন। তাহলে মাত্র এই কয়টি দিন কেন আপনারা ধৈর্য্য ধরবেন না। আজ আমি আপনাদের অনুরোধ করছি, আশা করি আপনারা আমার অনুরোধ আমলে নিবেন। তা নাহলে কঠিন শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। অনুষ্ঠানে দেবগ্রাম ইউনিয়নের ৫১৮জন ও উজানচর ইউনিয়নের ৩৯৮জন জেলের মধ্যে ২০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়।
গোয়ালন্দ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ রেজাউল শরীফ জানান, উপজেলার অবশিষ্ট জেলেদের মধ্যে ৯ই অক্টোবর(আজ) ছোট ভাকলা ইউনিয়নের ৮৫জন ও গোয়ালন্দ পৌরসভার ১২১জন জেলের মধ্যে এই বিশেষ ভিজিএফ চাল বিতরণ করা হবে। পরবর্তীতে দৌলতদিয়া ইউনিয়নের ৫২১জন জেলের মধ্যে এই চাল বিতরণ করা হবে।
উল্লেখ্য, গত ৭ই অক্টোবর থেকে ২২দিনব্যাপী মা ইলিশ আহরণের উপর নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছে। আগামী ২৮শে অক্টোবর পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে।