॥রফিকুল ইসলাম॥ রাজবাড়ী সদর উপজেলা মৎস্য দপ্তরের উদ্যোগে গতকাল ৭ই অক্টোবর সকালে গোদার বাজার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে মা ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধকালীন সময়ের জন্য জেলেদের মধ্যে বিশেষ ভিজিএফের চাল বিতরণ ও সচেতনতামূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ও রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলী।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডঃ এম.এ খালেক, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ মজিনুর রহমান ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সাঈদুজ্জামান খান।
অন্যান্যের মধ্যে জেলা মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি শচীন হলদার, মিজানপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতিয়ার রহমান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন সদর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ সাঈদ আহম্মেদ। এ সময় জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হেদায়েত আলী সোহরাবসহ মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও জেলেরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলী বলেন, জেলেদেরকে মা ইলিশ আহরণের নিষেধাজ্ঞাকালীন ২২দিন একটু কষ্ট করে চলতে হবে। এ সময় মা ইলিশ না ধরলে ইলিশের উৎপাদন অনেক বৃদ্ধি পাবে, যাতে জেলেরাসহ সমগ্র দেশবাসী উপকৃত হবে। জানতে পেরেছি অনেকে এ সময়ে মা ইলিশ আহরণের জন্য পাঁয়তারা করছে, জাল-নৌকা প্রস্তুত করেছে। এটা করতে গেলে আপনারা বিপদে পড়বেন। আপনাদের ভাই হিসেবে বলছি নিষেধাজ্ঞার সময়ে আপনারা নদীতে নামবেন না। সরকারের পক্ষ থেকে যতটা সম্ভব সাহায্য-সহযোগিতা করা হবে। আগে জলমহালগুলো ইজারা দেয়া হতো, কিন্তু এখন জলমহালগুলো উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। নদী থেকে মাছ ধরতে কাউকে আর পয়সা দিতে হয় না। এটা বর্তমান সরকারের উদারতা। আমরা কথায় নয়, কাজে বিশ্বাসী। গোদার বাজার স্কুলের মতো সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন করেছি।
জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী বলেন, গত বছর নিষেধাজ্ঞা অমান্যকারী ৪১০জন জেলেকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছিল। আমরা কাউকে জেলে পাঠাতে চাই না। একটি মা ইলিশের পেটে লক্ষ লক্ষ ডিম থাকে। এই মা ইলিশ না ধরলে মাছের উৎপাদন অনেক বৃদ্ধি পাবে, যার সুফল সবাই ভোগ করতে পারবে। কেউ সরকারী নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মা ইলিশ ধরবেন না। তাহলে আমরা আইন প্রয়োগ করতে বাধ্য হবো। এবার জেলার ৪হাজার ৬শত ৪০জন জেলের মধ্যে ২০ কেজি করে মোট ৯৩হাজার ৮শত কেজি বিশেষ ভিজিএফের চাউল বিতরণ করা হবে। এর মধ্যে রাজবাড়ী সদর উপজেলার ২২শত ৮১জন জেলের মধ্যে এই চাল বিতরণ করা হবে।
অনুষ্ঠানে সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নের ৪৭১জন, চন্দনী ইউনিয়নের ৫০৬ জন ও বরাট ইউনিয়নের ২৫০জন জেলের মধ্যে ২০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়। পর্যায়ক্রমে তালিকাভূক্ত অবশিষ্ট জেলেদের মধ্যে এই বিশেষ ভিজিএফের চাল বিতরণ করা হবে।
উল্লেখ্য, গতকাল ৭ই অক্টোবর থেকে ২২ দিনব্যাপী মা ইলিশ আহরণের উপর নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছে। আগামী ২৮শে অক্টোবর পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে।