॥আসহাবুল ইয়ামিন রয়েন॥ জাতীয় কৃমি নিয়ন্ত্রণ সপ্তাহ ও ক্ষুদে ডাক্তার কর্তৃক শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা উদযাপন উপলক্ষে রাজবাড়ী সিভিল সার্জন অফিসের আয়োজনে গতকাল ২৫শে সেপ্টেম্বর সকাল ১০টায় জেলা পর্যায়ের অ্যাডভোকেসী সভা সিভিল সার্জনের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী।
সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ রহিম বক্সের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার হোসনে ইয়াসমীন করিমী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ শেখ মোঃ আব্দুল হান্নান এবং কৃমি সপ্তাহের বিভিন্ন বিষয়ে পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপন করেন সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডাঃ শফিউল আজম শুভ। এছাড়াও অন্যান্যের মধ্যে সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার পারমিস সুলতানা, গোয়ালন্দ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ আব্দুল মালেক, ব্র্যাক প্রতিনিধি নেফাজ উদ্দিন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। সভা সঞ্চালনা করেন সিভিল সার্জন অফিসের জুনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তা মোকরেমা মাঞ্জুরা। এ সময় জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ-পরিচালক মোঃ গোলাম আজম, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাগণ, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগ এবং স্বাস্থ্য বিভাগের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাগণসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী বলেন, স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশনা মোতাবেক প্রতি বছর দেশব্যাপী যে কৃমি সপ্তাহ পালন করা হয় তার ধারাবাহিকতায় এবারও রাজবাড়ীতে ৫-১৬ বছর বয়সী সকল শিশুকে কৃমির ওষুধ খাওয়ানো হবে। এর ফলে শিশুরা কৃমি সংক্রান্ত স্বাস্থ্য ঝুঁকি থেকে নিজেদের মুক্ত রাখতে পারবে। আমি আশা করবো রাজবাড়ী জেলার যারা এই কৃমি সপ্তাহের সাথে সংশ্লিষ্ট তারা সকলে সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে সরকারের এই মহৎ উদ্যোগ সফল করবেন। আর যাতে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম স্বাস্থ্যগত ঝুঁকিমুক্তভাবে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ২০৪১ সালের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলার মাধ্যমে দেশের কল্যাণে নিজেদেরকে যোগ্যভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে।
উল্লেখ্য, আগামী ১লা অক্টোবর থেকে ৭ই অক্টোবর পর্যন্ত রাজবাড়ীসহ সারা দেশব্যাপী কৃমি নিয়ন্ত্রণ সপ্তাহ পালন করা হবে। যার আওতায় রাজবাড়ী জেলার ১ হাজার ১১৪টি প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মোট ১ লক্ষ ৭৩ হাজার ৬শত ৫৪ জন এবং ২৬৩টি মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মোট ১লক্ষ ৭ হাজার ২৮ জন শিক্ষার্থীসহ বিদ্যালয় বহির্ভুত ১ হাজার ৮শত ১৩ জন শিশুকে কৃমি নাশক ওষুধ খাওয়ানো হবে। শিক্ষার্থীদেরকে এই কৃমি নাশক ওষুধ অবশ্যই ভরা পেটে খাওয়াতে হবে। এই ওষুধের কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই কিংবা সেবনের ফলে শিশুদের কোন স্বাস্থ্যগত ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। এরপরও যদি কারো সমস্যা হয় তাহলে ওষুধ খাওয়ানোয় নিয়োজিত স্বাস্থ্য কর্মী, নিকটস্থ স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, রাজবাড়ী সদর হাসপাতাল অথবা সিভিল সার্জন অফিসের কন্ট্রোলরুমে যোগাযোগ করতে হবে। এক্ষেত্রে কোন রকম গুজবে কান না দেওয়ার জন্য অভিভাবকসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। এছাড়াও কৃমি নিয়ন্ত্রণ সপ্তাহের ৭ দিন প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে কৃমি নাশক ওষুধ খাওয়ানোর আগে ক্ষুদে ডাক্তারদের দ্বারা শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে।