॥দেবাশীষ বিশ্বাস॥ রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের ক্যাম্পাসে অবস্থিত নার্সিং ইনস্টিটিউটের এক ছাত্রী নার্সকে যৌন হয়রানী করায় গতকাল ১৬ই সেপ্টেম্বর দুপুরে ইনস্টিটিউটের অফিস সহকারী মোঃ রফিকুল ইসলাম তার নিজ কক্ষে অবরুদ্ধ করে ছাত্রীরা জুতা পেটা করাসহ গলায় জুতার মালা পরিয়ে দিয়েছে।
ইনস্টিটিউটের ছাত্রী নার্সরা রফিকুল ইসলামকে অবরুদ্ধ করে জুতাপেটা করাসহ বিচারের দাবীতে শ্লোগান দিতে থাকে। এ সময় ছাত্রীদের চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে আসে। পরে সদর হাসপাতালের ব্রাদার আব্দুল্লাহ আল মামুন অবরুদ্ধ প্রধান সহকারীকে উদ্ধার করে নার্সিং ইনস্টিটিউটের ইনচার্জের রুমে রাখলে সেখানে সে উত্তেজিত ছাত্রীদের রোষানলে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে সদর থানার এস.আই এনসের আলী সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় ছাত্রীরা অভিযুক্ত অফিস সহকারীর গলায় জুতার মালা পরায়।
যৌন হয়রানীর শিকার ওই ছাত্রী নার্স জানায়, এর আগে গত ১২ই সেপ্টেম্বর বিকালে ওই অফিস সহকারী আমাকে অফিস রুমে ডেকে আনে। তারপর আমাকে খারাপ প্রস্তাব দেয়। পরবর্তীতে আমি বিষয়টি আমার রুমের সহপাঠীদের কাছে বলি।
অন্যান্য ছাত্রী নার্সরা জানায়, অফিস সহকারী রফিকুল ইসলাম বিভিন্ন সময়ে ছাত্রীদের নানা অশ্লীল বাক্য, পোশাকসহ শারীরিক অঙ্গ নিয়ে কথা বলে। অনেক ছাত্রীকে বাসায় নিয়ে যেতে চায়। আজ এক ছাত্রীকে বাসায় নিয়ে যাওয়ার কথাকে কেন্দ্র করে তাকে অবরুদ্ধ করে জুতার মালা পরানো হয়। আরো জানা গেছে, ওই অফিস সহকারী নার্সিং ইনস্টিটিউটের একাধিক ছাত্রীকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে অশ্লীল মেসেজ দেয়। বিভিন্ন সময় ছুটির দরখাস্ত নিয়ে গেলেও সে টাকা ছাড়া কোন কাজ করতো না।
এ বিষয়ে সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক স্বপন কুমার কুন্ডু বলেন, অভিযুক্ত অফিস সহকারী যৌন হয়রানীর বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েছে। ছাত্রীদের অভিযোগের ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ওই অফিস সহকারীর বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ পুরনো। নার্সিং ইনস্টিটিউটের ইনচার্জ ছালেহা বেগমের প্রশ্রয়ে তার এমন আচরণ দিন দিন বৃদ্ধি পেয়েছে। এ সময় তিনি ইনচার্জকেও তার চেয়ারের অযোগ্য বলে আখ্যা দেন তিনি।
সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ রহিম বক্স বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর। তিনি এই যৌন হয়রানীর ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস দেন।
এ বিষয়ে জেলা মহিলা পরিষদের নেতৃবৃন্দ বলেন, রাজবাড়ীতে স্কুল শিক্ষক থেকে থেকে শুরু করে আজকের এই অফিস সহকারীর ঘটনা খুবই দুঃখজনক। মহিলা পরিষদ ঘটনার তদন্ত করবে এবং পরে লিখিত বক্তব্য জানাবে।
উল্লেখ্য, অভিযুক্ত অফিস সহকারী রফিকুল ইসলাম কুষ্টিয়ার আমলা উপজেলার আড়য়াপাড়া গ্রামের মৃত বদর উদ্দিনের ছেলে। সে গত ৯ই বছর যাবৎ এই নার্সিং ইনস্টিটিউটে চাকরী করে আসছে।